26/06/2025
🕋 কাবার গিলাফ পরিবর্তন – ১৪৪৭ হিজরি (২০২৫ সাল)
🧵 গিলাফ কেমন হয়?
🖤 রঙ ও নকশা:
রঙ: গভীর কালো
লেখা: সোনালি রেশমে সূচিকর্ম — কুরআনের আয়াত ও “لا إله إلا الله محمد رسول الله”
উপরের পাড়ে: সোনালী বর্ডার (হিজাম)
🔧 প্রস্তুতকারক:
স্থান: মক্কার “King Abdul Aziz Complex for the Kiswa of the Kaaba”
শ্রমিক: প্রায় ২০০+ অভিজ্ঞ কারিগর
উপকরণ: ৬৭০ কেজি কালো রেশম, ১২০ কেজি স্বর্ণ ও রূপা
মোট খরচ: প্রায় ২৫ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল (প্রতি বছর)
🔄 কিভাবে পরিবর্তন করা হয়?
পুরনো গিলাফ আস্তে আস্তে সরানো হয়
উপরের দিক থেকে নতুন গিলাফ লাগানো হয়
গিলাফ ৪টি অংশে ভাগ করা থাকে – প্রতিটি দিক আলাদা সেলাই করা হয়
কাজ চলে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা
🔄 পুরাতন গিলাফের ভাগ:
পুরনো গিলাফ কেটে টুকরো করা হয়
তা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অতিথি, ইসলামিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়
📸 ১৪৪৭ হিজরি গিলাফের কিছু বিশেষত্ব:
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সূচিকর্ম করা হয়েছে
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরো পরিবর্তন পরিচালিত হয়
কাবার চারপাশে নিরাপত্তা বলয় গঠন করা হয়
🕋 কাবার গিলাফ (কিসওয়া) পরিবর্তনের ইতিহাস
কাবার গিলাফ বা "কিসওয়া" হচ্ছে একটি পবিত্র কাপড়, যা কাবা শরীফকে আবৃত করে রাখা হয়। ইসলামের ইতিহাসে কিসওয়া পরিবর্তনের একটি দীর্ঘ, সম্মানজনক এবং ধারাবাহিক রীতি রয়েছে।
📜 প্রাচীন ইতিহাস:
১. 🔸 ইসমাঈল (আ.) ও ইব্রাহিম (আ.)-এর যুগ:
কিসওয়া ব্যবহারের ইতিহাস নবী ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.) পর্যন্ত ফিরে যায়, যদিও সে সময় নিয়মিত কিসওয়া পরিবর্তনের প্রথা ছিল না।
২. 🔸 জাহেলি যুগ (ইসলামের পূর্বে):
কাবা তৎকালীন মক্কার কুরাইশদের সম্মানিত কেন্দ্র ছিল
তুবা রাজারা (ইয়েমেনের হামিয়ার বংশ) প্রথম কিসওয়া দান করে।
তারা কাবাকে মিশরের তৈরি সুতা বা রেশম দিয়ে আবৃত করত।
🕋 ইসলাম যুগের শুরু:
৩. 🔸 নবী মুহাম্মদ (সা.) এর যুগ:
রাসুল (সা.) কিসওয়া পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
তিনি ইয়েমেনি কাপড় দিয়ে কাবা আবৃত করাতেন।
৪. 🔸 খুলাফায়ে রাশিদিন:
আবু বকর, উমর, উসমান ও আলী (রা.)—এরা সবাই কাবার কিসওয়ার গুরুত্ব বজায় রেখেছেন এবং পরিবর্তন করিয়েছেন।
👑 খিলাফত ও রাজতান্ত্রিক যুগ:
৫. 🔸 উমাইয়া ও আব্বাসীয় খিলাফত:
উমাইয়াদের শাসনামলে সিরিয়া থেকে কাপড় আনা হতো।
আব্বাসীয়রা মিশর থেকে তৈরি রেশম ও তুলা ব্যবহার করে অত্যন্ত উন্নতমানের কিসওয়া পাঠাতেন।
৬. 🔸 ফাতেমি ও মমলুক আমল:
মিশরের শাসকরা বিশেষভাবে কিসওয়ার দায়িত্ব নেন।
কায়রোতে কিসওয়া তৈরির জন্য “দার আল-কিসওয়া” নামে প্রতিষ্ঠান ছিল।
৭. 🔸 উসমানী (অটোমান) সাম্রাজ্য:
কিসওয়া প্রস্তুতির জন্য অর্থ বরাদ্দ ছিল।
কায়রো থেকে কিসওয়া হজ কাফেলার সঙ্গে পাঠানো হতো এবং মক্কায় পৌঁছে তা কাবা শরীফে পরানো হতো।
🇸🇦 সৌদি আরবের যুগ (১৯২۶ থেকে বর্তমান):
৮. 🔸 সৌদি শাসন শুরুর পর:
১৯২৭ সালে সৌদি সরকার নিজস্বভাবে কিসওয়া তৈরি শুরু করে।
১৯৭৭ সালে মক্কায় স্থাপন করা হয় "King Abdul Aziz Complex for the Kiswa of the Kaaba"।
৯. 🔄 আধুনিক কিসওয়া প্রস্তুতি:
৬৭০ কেজি কালো রেশম, সোনা-রূপার সূচিকর্ম।
বছরে একবার — গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।
কিসওয়ার উপরের অংশে সোনালি হিজাম বা ব্যান্ডে কুরআনের আয়াত লেখা থাকে।
📷 ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব:
গিলাফ কেবল কাপড় নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক।