06/06/2024
ইকো-ট্যুরিজম: পরিবেশবান্ধব পর্যটন এলাকায় প্রকৃতি-পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে প্রকৃতির ঐশ্বরিক সৌন্দর্য উপভোগ, উপলব্ধি ও অধ্যয়ন করাই হলো ইকো-ট্যুরিজম। ইকো-ট্যুরিজম বা পরিবেশগত পর্যটনের মাধ্যমে প্রকৃতিকে গভীরভাবে জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। এর মাধ্যমে প্রকৃতির আকর্ষণকে হƒদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়। পর্যটনের এই ধারণা এসেছে পরিবেশের যথার্থ রক্ষণাবেক্ষণের ভাবনা থেকেই। এটি পর্যটনকে যেনতেনভাবে না দেখে বা শুধু বিনোদনের খোরাক না ভেবে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ধারণার শিক্ষা দেয়। ইকো-ট্যুরিজম পর্যটনের এমন একটি উন্নয়ন ধারণা যা স্থানীয় পরিবেশের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ, পরিবেশগত ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও স্থানীয়দের অনুপম অর্থনৈতিক-সামাজিক বিকাশ নিশ্চিত করে। স্থানীয় জনগণ, প্রকৃতিপ্রেমী, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃতি সংরক্ষণ তথা উন্নয়নের ধারণাই ইকো-ট্যুরিজম। ইকো-ট্যুরিজমের সম্পদে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। পর্যটন খাতে ইকো-ট্যুরিজমের ধারণা বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে ইকো-ট্যুরিজমের ধারণা দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
ইকো-ট্যুরিজমের গুরুত্ব: ইকো-ট্যুরিজমের গুরুত্ব অনুধাবণ করে জাতিসংঘ ২০০২ সালকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইকো-ট্যুরিজম ইয়ার’ ঘোষণা করে। প্রকৃতি-পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, মানব-পরিবেশ মিথস্ত্রিয়া ও প্রকৃতি সংরক্ষণে ইকো-ট্যুরিজমের গুরুত্ব অপরিসীম। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য ইকো-ট্যুরিজমের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, প্রকৃতির সান্নিধ্যে বিনোদনের সুযোগ, সংস্কৃতির মিলন, প্রাকৃতিক সম্পদের বৈচিত্র্য রক্ষা, পরিবেশ দূষণ রোধ, পরিবেশবান্ধব টেকসই পর্যটনের বিকাশ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সাধনে ইকো-ট্যুরিজম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুধু পরিবেশ রক্ষা নয়, টেকসই উন্নয়নের জন্যও ইকো-ট্যুরিজম গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশগত পর্যটন বা ইকো-ট্যুরিজম স্পট ভ্রমণের মাধ্যমে ব্যাপক শিক্ষা লাভেরও সুযোগ রয়েছে। ইকো-ট্যুরিজম শিক্ষামূলক ভ্রমণ ও গবেষকদের গবেষণা করারও সুযোগ তৈরি করে। গত শতাব্দীর নব্বই দশকের কাছাকাছি সময়ে ইকো-ট্যুরিজমের প্রয়োজনীয়তার কথা সামনে আসে। জলবায়ু পরিবর্তনের এ পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় দেশে-বিদেশে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। ইকো-ট্যুরিজম স্থানীয়ভাবে জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি, রক্ষা ও টিকে থাকতে ব্যাপক সহায়ক। এছাড়া এটা পক্ষীকুলের টিকে থাকার অন্যতম আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে।