29/09/2024
শক্তিপীঠ নলহাটেশ্বরী বা নলাটেশ্বরী পশ্চিম বঙ্গের বীরভূম জেলায় নলহাটিতে অবস্থিত।
শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থস্থান গুলির মধ্যে অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে (দক্ষের কন্যা) দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১।
পীঠনির্ণয় তন্ত্রের মতে চতুশ্চত্বারিশৎ পীঠ হল বীরভূমের নলহাটি।
” নলহাট্যাং নলাপাতো যোগী শো ভৈরবস্তুথা।
তত্র সা কালিকা দেবী সর্বসিদ্ধি প্রদায়িকা ।।”
সংস্কৃত ‘ নলক ‘ শব্দের অর্থ ‘ নলের মতো লম্বা অস্থি ‘ যার মানে নুলো বা কনুইয়ের নিম্নভাগ। আবার শিবচরিত মতে এটি উপপীঠ। এখানে সতীর কন্ঠনালী পতিত হয়েছিল। এখানে দেবীর নাম শেফালিকা ও ভৈরব যোগীশ। এখানে ভৈরব যোগীশের মন্দির রয়েছে।
বীরভূম জেলার এই অঞ্চলে সতীর কণ্ঠনালী বা গলার নলি পড়েছিল, সেই থেকেই এই স্থানের নাম নলহাটি নামকরণ হয়েছে। প্রায় চোদ্দোশত বছর আগে দুইশত বাহান্ন বঙ্গাব্দে স্বপ্নাদেশে কামদেব উদ্ধার করেন সতীর কণ্ঠনালী। ব্রাহ্মণী নদী তীরে ললাট পাহাড়ের নিচে সেই কণ্ঠনালীর ওপর বেদি করে প্রতিষ্ঠিত হন দেবী নলাটেশ্বরী।
কিংবদন্তি অনুযায়ী এই স্থানের উল্লেখ পাওয়া যায় রামায়ণে। টিলাতে সীতার চুল আঁচড়ানোর দাগ আছে ও কড়ি খেলার গর্ত আছে। একসাথে মা কালী, ভৈরব শিব আর ভগবান বিষ্ণুর একসাথে পূজা হচ্ছে।
এখানে মন্দিরটি একটি টিলার উপর অবস্থিত। আগে জায়গাটিতে অরন্য ছিল। সাধারণ মানুষেরা সেখানে যেতেন না। একমাত্র তন্ত্র সাধকরা সাধনার উদ্দেশ্যে সেখানে যেতেন। বশিষ্ঠ, রামশরন, দেবশর্মা, কুশলানন্দ আদি মুনি সন্ন্যাসীরা এখানে এসে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছেন। বর্গি সর্দার ভাস্কর পণ্ডিত এখানে পূজা দিতে আসতেন। যদিও এখন সেই অরন্যের কিছু আর অবশিষ্ট নেই।
এখানে দেবীর প্রস্তুরীভূতঃ কন্ঠনালী রক্ষিত আছে যা প্রত্যেক দিন দেবীর স্নানের পর এবং মঙ্গল আরতির পূর্বে ভক্তদের সামনে প্রদর্শন করা হয়।
কালীমন্দির হিসেবে পরিচিত হলেও নলাটেশ্বরীতে কোনও প্রতিষ্ঠিত কালী-বিগ্রহ নেই। মন্দিরগাত্রেই পাথরে কালীর মুখমণ্ডল বসানো আছে। তেমন কোনও ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও কিংবদন্তি অনুসারে বলা হয়, ৮৪৪ সাধারণাব্দ নাগাদ এই জায়গাটা পিঠ হিসেবে আবিষ্কৃ