Globe in Grip

Home
Globe in Grip

Globe in Grip travel Article and guide.

01/02/2025

🌄 তুমলিং: সন্দাকফুর পথে এক অপূর্ব যাত্রা 🌿

পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা ছোট্ট গ্রাম তুমলিং। সন্দাকফুর পথে এই জায়গাটি শুধু একটি বিশ্রামের স্থান নয়, বরং এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। নর্থ বেঙ্গলের এই অঞ্চল প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গরাজ্য। আজকের পোস্টে আপনাদের নিয়ে যাব তুমলিংয়ের মায়াবী জগতে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তে লুকিয়ে আছে শান্তি আর সৌন্দর্যের মেলবন্ধন।

📍 তুমলিং কোথায়?
তুমলিং হল ভারত-নেপাল সীমান্তের কাছে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম। সন্দাকফু ট্রেকের পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯,৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রাম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং এভারেস্টের অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। শীতকালে তুষারাবৃত পাহাড় আর গ্রীষ্মে সবুজের সমারোহ, তুমলিং সারা বছরই আপনাকে মুগ্ধ করবে।

🚶‍♂️ ট্রেকিং অভিজ্ঞতা
তুমলিং যাওয়ার পথটাই এক অভিযান। মানেভঞ্জন বা ছিটবে থেকে ট্রেক শুরু করে আপনি পাবেন ঘন জঙ্গল, রঙবেরঙের রডোডেনড্রন ফুল, আর পাহাড়ি ঝর্ণার স্নিগ্ধতা। পথে পড়বে গাইডের গল্প, স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তা, আর প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ। তুমলিংয়ে পৌঁছানোর পর ক্লান্তি সব ভুলে যাবেন, যখন সামনে পড়বে কাঞ্চনজঙ্ঘার সুবিশাল চূড়া। ট্রেকিং ছাড়াও এখন মানেভঞ্জন থেকে গাড়ী ভাড়া করে যেতে পারেন তুমলিং। এখন তুমলিং পর্যুন্ত রাস্তা ভালো।

🏡 থাকা-খাওয়া
তুমলিংয়ে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে এবং লজ রয়েছে। স্থানীয় পরিবারগুলির আতিথেয়তা এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। তাদের হাতে তৈরি নেপালি ও তিব্বতীয় খাবারের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। এক প্লেট থুকপা বা মোমো খেতে খেতে পাহাড়ের ঠাণ্ডা হাওয়ায় গল্প করা—এই অভিজ্ঞতা সত্যিই অনন্য। আগে থেকে বুকিং করার দরকার নেই। গিয়ে ঘর দেখে উঠে পড়লেই হলো। কেউ যদি আগে থেকে বুকিং করতে চান তো, কমেন্ট করুন আমি নম্বর দেবো।

📸 ফটোগ্রাফির স্বর্গ
ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন? তাহলে তুমলিং আপনার জন্য পারফেক্ট স্পট। ভোরের আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘার সোনালী রূপ, আর সন্ধ্যায় আকাশের রঙিন খেলা—এখানকার প্রতিটি মুহূর্ত ক্যামেরায় বন্দী করার মতো।

💡 টিপস
👉 তুমলিং যাওয়ার আগে আবহাওয়া পরীক্ষা করে নিন। শীতকালে গরম কাপড় অবশ্যই নিয়ে যাবেন।
👉 ট্রেকিংয়ের সময় হালকা জুতা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সঙ্গে রাখুন।
👉স্থানীয় সংস্কৃতি এবং পরিবেশকে সম্মান করুন। প্লাস্টিক বর্জন করুন এবং প্রকৃতিকে পরিষ্কার রাখুন।

তুমলিং শুধু একটি গন্তব্য নয়, এটি এক অনুভূতি। প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। আপনার পরবর্তী অ্যাডভেঞ্চারের জন্য তুমলিংকে লিস্টে রাখুন, আর এই অপূর্ব অভিজ্ঞতা নিজের করে নিন।

🌏 Globe in Grip - আপনার যাত্রার সঙ্গী।

📸 ছবি এবং আরও তথ্যের জন্য আমাদের পেজ ফলো করুন!
👉 https://www.facebook.com/profile.php?id=100085507014275

যাত্রা করুন, আবিষ্কার করুন, আর পৃথিবীকে আপনার মুঠোয় নিয়ে নিন। 🌍✨

29/01/2025

🏞টংলু: সান্দাকফুর পথে এক অদ্ভুত সুন্দর অভিজ্ঞতা
💞"Globe in Grip" থেকে শুভেচ্ছা!

সান্দাকফুর ট্রেকিংয়ের পথে টংলু এমন এক গন্তব্য যা একবার দেখলে আপনার মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে যাবে। এটি দার্জিলিং জেলার এক শান্ত ও মনোরম গ্রাম, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০,১৩০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ, আর পর্বতমালার দৃশ্য প্রতিটি ভ্রমণপ্রেমীর হৃদয়ে আলাদা জায়গা তৈরি করে। যারা সান্দাকফুর হাড়কাঁপানো ঠান্ডা উপেক্ষা করতে চান , তাদের জন্য টংলু আদর্শ।

💁টংলুতে কী কী দেখতে পাবেন?
টংলুতে পা রাখলেই প্রথম যে জিনিসটি আপনার নজর কাড়বে, তা হলো সবুজ পাহাড়ে ঢাকা গ্রাম। দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার মেঘমুক্ত রূপ যদি দেখা যায়, তাহলে এটি এক পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা। শীতকালে এখানে বরফে ঢাকা পরিবেশ এক রূপকথার গল্পের মতো মনে হয়। আর গ্রীষ্মে সবুজ ঘাস, বুনো ফুল আর নীল আকাশ মিলে তৈরি করে এক স্বর্গীয় দৃশ্য।

টংলুর আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ হলো এখানকার ট্যুরিস্ট লজ। দার্জিলিং গোরখা হিল কাউন্সিলের তৈরি এই লজটি একদম পাহাড়ের ধারে অবস্থিত। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রথম আলোয় সোনালি আভা দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ।

🚶টংলুতে কীভাবে যাবেন?
টংলুতে পৌঁছানোর জন্য ট্রেকিং হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ উপায়। সাধারণত মানেভঞ্জন থেকে ট্রেক শুরু হয়। মানেভঞ্জন থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন টংলুতে। যদি হাঁটতে না চান, তাহলে ল্যান্ড রোভার গাড়ি ভাড়া করে সরাসরি পৌঁছাতে পারেন। তবে ট্রেকিংয়ের সময় জঙ্গলের মাঝে হাঁটার যে অভিজ্ঞতা, তা অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না।

⛺থাকার ব্যবস্থা
টংলুতে থাকার জন্য খুব বেশি অপশন নেই। মূলত ট্যুরিস্ট লজ আর কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। জায়গা অল্প, তাই ভ্রমণের আগে বুকিং করা জরুরি। শীতকালে সঙ্গে উষ্ণ কাপড় নিতে ভুলবেন না কারণ এখানে রাতের তাপমাত্রা প্রায় শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি নেমে যায়।

💁সেরা সময়
টংলু ভ্রমণের জন্য অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময়টি সেরা। শীতকালে যদি বরফ দেখতে চান, তাহলে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আসুন। আর গ্রীষ্মকালে পাহাড়ি ফুলের রঙিন পরিবেশ আপনার মনে এক অন্যরকম আনন্দ যোগাবে।

🙂পরামর্শ
👉ট্রেক করার সময় জল আর হালকা খাবার সঙ্গে রাখুন।
👉পরিবেশ পরিষ্কার রাখার বিষয়ে সচেতন থাকুন।
👉স্থানীয়দের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। তারা খুব অতিথিপরায়ণ।
👉সান্দাকফুর ট্রেক করার পথে টংলুতে একটি রাত কাটানো যেন আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনার অংশ হয়ে ওঠে। টংলুর সৌন্দর্য শুধু চোখেই নয়, হৃদয়ে অনুভব করতে হয়।

🚶তিন রাত চার দিনের টংলু ভ্রমনের ছোট্ট একটি বাজেট ট্যুর প্ল্যান
👉প্রথম দিন শিলিগুড়ি বা NJP থেকে মানেভঞ্জন, সেখান থেকে হেঁটে বা গাড়ী ভাড়া করে চিত্রে। মানেভঞ্জন থেকে চিত্রে মাত্র ৫ কিলোমিটার কিন্তু বেশ খাড়া রাস্তা। দেখে নিন বেশ বড় এক বৌদ্ধ মন্দির। এবং পাহাড়ী গ্রামীণ জীবন। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘা।

👉দ্বিতীয় দিন , সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ুন টংলুর উদ্দেশ্যে , রডোডেনড্রন আর পাইন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাটতে মন্দ লাগবে না। গাড়িতেও যেতে পারেন। রাস্তায় পড়বে লামেধুরা আর মেঘমা নামের দুটি সুন্দর গ্রাম। টংলুর সৈন্দর্য মন কাড়বেই। বিশেষ করে সকালের সূর্যোদয় তো অসাধারণ।

👉তৃতীয় দিন , বেরিয়ে পড়ুন আর এক পাহাড়ী হ্যামলেট ধোতরের দিকে। এ পথে গাড়ী চলে না। কিন্তু রডোডেনড্রন আর পাইন এর নজরকাড়া সৈন্দর্য দেখতে পাবেন।

আপনার টংলু ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কী রকম? কমেন্টে জানান। "Globe in Grip" পেজে লাইক দিন এবং আমাদের সাথে উত্তরবঙ্গের আরো অজানা গন্তব্য আবিষ্কার করুন।

21/01/2025

বরিয়াখোপ: বার্সে জঙ্গল থেকে এক অফবিট ট্রেকিং গন্তব্য
লেখক: Ujjwal, Page: "Globe in Grip"

আমার আগের লেখায় আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আপনাদের একটি অফবিট ডেস্টিনেশন সম্পর্কে জানাব। আজ আপনাদের জানাব বরিয়াখোপের গল্প। এটি পশ্চিম সিকিমের একটি ছোট গ্রাম, যা সোরেং তহসিলে অবস্থিত। বরিয়াখোপ একটি মনোরম পাহাড়ি গ্রাম, যেখানে মানুষের প্রধান জীবিকা চাষাবাদ। বরিয়াখোপ এখনো পর্যটকদের ভিড় থেকে দূরে, তাই এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য আদর্শ গন্তব্য।

আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল বার্সে রোডোডেনড্রন স্যাঙ্কচুয়ারি থেকে। যাঁরা বার্সে ভ্রমণ করেছেন তাঁরা জানেন, সেখানে থাকার জন্য দুটি অপশন আছে—ফরেস্ট ব্যারাক এবং গুরাস কুঞ্জ। গুরাস কুঞ্জের ডানদিকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে শুরু হয় বরিয়াখোপের রাস্তা।

ট্রেকের সূচনা
সকাল ১০টায় আমরা বার্সে থেকে যাত্রা শুরু করি। আগের দিনের ৪ কিমি হাঁটার ক্লান্তি এখনো শরীরে ছিল। রাস্তা ছিল কর্দমাক্ত, আর বৃষ্টি হওয়ায় জোঁক এর প্রকোপও বেশি ছিল।

শুরুতে বাঁশের ঝোপ পেরিয়ে আমরা পৌঁছাই অসংখ্য পাইন গাছে ঘেরা এক অন্যরকম জঙ্গলে। ঘন কুয়াশা, গভীর আর উঁচু উঁচু পাইন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে একদিক থেকে অন্য দিকে এগিয়ে চলছে। খানিকটা ভৌতিক পুরোনো হাভেলী এর মতো পরিবেশ। এই ভয়ংকর সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। পাইন বন পেরোনোর পর শুরু হয়েছিল এক দুর্গম পথ। বড় বড় পাথর আর কর্দমাক্ত পাহাড়ি ঝরনা পেরিয়ে এগিয়ে চলা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছিল।

কিছুটা এগোতেই একজনের পায়ে জোঁক লেগে যায়। আগে থেকে লবণ নিয়ে এলেও তা অন্যজনের কাছে ছিল, তাই কাঠি দিয়ে জোঁক সরাতে হয়। এমন ছোটখাটো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমরা এগিয়ে চলি। তবে ৩ ঘণ্টার পথ আমাদের ৪,৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

হাওয়া ঘর ও বৃষ্টি
গেট এসে আর পারছি না, ভাবলাম একটু জিরিয়ে নেবো। কিন্তু পুশাই জি হাঁক দিলো - "জলদি চলিয়ে, আভি বারিশ হোগা।" অগত্যা এগিয়ে চললাম। জঙ্গলের শেষ প্রান্তে আমরা "হাওয়া ঘর" নামে একটি কাঠের বসার জায়গা পাই। উপরে টিনের শেড দেওয়া ঘর চারপাশ ফাঁকা একটি ঘর। এই কারণেই নাম মনেহয় 'হাওয়া ঘর'. গ্রামের লোকজন উপরে কাঠ কাটতে বা অন্য কোনও কারণে এলে এখানে বিশ্রাম নেয়। অবাক করা ব্যাপার, আমরা সেখানে পৌঁছানোর ১০ মিনিটের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবার যাত্রা শুরু করি।

বরিয়াখোপ গ্রামে প্রবেশ
দূর থেকে গ্রামের দৃশ্য দেখে আমরা বুঝতে পারি, অবশেষে বরিয়াখোপ পৌঁছে গেছি। পুসাই জির ছোট, পরিপাটি হোমস্টে আমাদের মুগ্ধ করে। এখানে অ্যাটাচড টয়লেট নেই, তবে গ্রামের নিস্তব্ধতা এবং প্রকৃতির মাঝে এটি ছিল অনন্য অভিজ্ঞতা।

হোমস্টের আতিথেয়তা
হোমস্টেতে পৌঁছানোর পর চা আর গরম জল এ স্নানের সুযোগ পেয়ে ক্লান্তি অনেকটাই কেটে যায়। দুপুরের খাবারে ছিল ভাত, ডাল, আলু ভাজা, পাপড়, সালাড এবং ওমলেট। খাবারের স্বাদ এক কথায় অসাধারণ।

বৃষ্টিময় সন্ধ্যা
বৃষ্টির কারণে আমরা গ্রামের আশপাশ ঘুরতে পারিনি। বরং পুসাই জির রান্নাঘরে নিজেরাই মুরগি দিয়ে বারবিকিউ করি। তবে মশলা এবং মাখনের অভাবে স্বাদ পুরোপুরি জমেনি। রাতের খাবারে ছিল ভাত, ডাল, দেশী মুরগির ঝোল, আচার এবং সালাড। দেশী মুরগি কিন্তু প্যাকেজ এ ছিল না। আমরা আলাদা কিনেছিলাম।

ভোরের বরিয়াখোপ
ভোরে বৃষ্টি থামেনি। আমরা দূরের দৃশ্য দেখতে পারিনি, তবে হোমস্টের চারপাশে ছিল লোভনীয় মটর ক্ষেত। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। বিদায়ের সময় পুসাই জি এবং তাঁর মেয়ে পদ্মা আমাদের টাটকা মটরশুটি উপহার দেন। এ ছাড়াও তাঁর বাড়ির ছোট গরু, ছাগল এবং মুরগির খামার দেখে দারুণ লেগেছে।

কীভাবে যাবেন বারিয়াখোপ?
নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) থেকে দূরত্ব: ১১১ কিমি।
গাড়ি ভাড়া: রিজার্ভ গাড়িতে ৫,০০০–৬,০০০ টাকা।
সস্তায় যাওয়ার উপায়: শেয়ার গাড়িতে সিলিগুড়ি থেকে জোরথাং বাজার, সেখান থেকে সোমবাড়িয়া হয়ে বরিয়াখোপ।

কোথায় থাকবেন?
বরিয়াখোপে বেশ কয়েকটি হোমস্টে আছে। তবে কোনো হোটেল নেই।

কখন যাবেন?
অক্টোবর–নভেম্বর: পরিষ্কার আকাশ ও কাঞ্চনজঙ্ঘার অসাধারণ দৃশ্য।
মার্চ–এপ্রিল: রোডোডেনড্রনের মোহময় সৌন্দর্য।
বর্ষাকাল এড়িয়ে চলুন: এই সময় জোঁক প্রকোপ বেশি।

বারিয়াখোপের এই অনন্য অভিজ্ঞতা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আগামীতে নতুন গন্তব্যের গল্প নিয়ে আবার দেখা হবে। ভালো লাগলে কমেন্ট করুন। আপনার মতামত আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার নিজের বরিয়াখোপের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করুন!
"Globe in Grip" – ঘুরে বেড়ানোর আনন্দের ঠিকানা।

20/01/2025

🌍Globe in Grip এ সবাইকে স্বাগতম! আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ট্রেকিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। যারা আমার ব্লগ পড়েন, তারা জানেন যে আমি কতটা ভ্রমণপিপাসু। ভ্রমণ আমার নেশা।

💁আমাদের যাত্রার সূচনা:

২০২২ সালের ৫ই এপ্রিল, আমরা নবদ্বীপ জংশন থেকে তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেসে করে এনজেপি-র উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। এবার আমাদের গন্তব্য পশ্চিম সিকিমের বার্সে রোডোডেনড্রন স্যাংচুয়ারি। ৬ই এপ্রিল, রাত ২:৪০ মিনিট নাগাদ আমরা এনজেপি-তে পৌঁছাই। যেহেতু আমরা ভোরেই পৌঁছে গিয়েছিলাম, তাই আমরা একদিনে ১৩৩ কিমি কাভার করার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল হিলে, পশ্চিম সিকিম। সাধারণত পর্যটকরা ওখরে-তে এক রাত কাটান। তবে আমরা ভোরে পৌঁছেছি বলে দিনটা নষ্ট করতে চাইনি।

🏞মেল্লি বাজারের অভিজ্ঞতা:

এনজেপি থেকে আমরা ভোর ৩:৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করি। আমাদের ৫ ঘণ্টায় পৌঁছানোর কথা ছিল, কিন্তু গাড়ির সমস্যার জন্য ৭ ঘণ্টা লেগে যায়। ভাগ্যক্রমে, যেখানে আমাদের গাড়ি থেমে যায়, জায়গাটি খুব সুন্দর ছিল - মেল্লি বাজার, সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে। ভোর ৫টা নাগাদ আমরা মেল্লি পৌঁছাই এবং গাড়ি মেরামতের সময় আমরা নদীর ধারে চলে যাই। তিস্তার সৌন্দর্য অসাধারণ ছিল। যদিও নদীর ধারে কোনো লোকজন দেখতে পাইনি, তবুও আমরা ৩০ মিনিট সেখানে উপভোগ করি।

🏕হিলে পৌঁছানোর পরে:

সবকিছু মিলিয়ে আমরা সকাল দশটা নাগাদ হিলে পৌঁছাই। এপ্রিলের গরমে ঠান্ডার অনুভূতি পাওয়া ছিল অসাধারণ। আমরা বার্সে রোডোডেনড্রন স্যাংচুয়ারি রেঞ্জে হাঁটার টিকিট বুক করি। প্রতিজনের জন্য ৫৫ টাকা এবং ক্যামেরার জন্য অতিরিক্ত ১০০ টাকা।

🚶হিল্লে গেট থেকে বার্সে ট্রেকিং:

১০:৫৫-তে আমরা হিল্লে গেট থেকে বার্সে ট্রেকিং শুরু করি। আগেই সেখানে ফরেস্ট বাংলো বুক করেছিলাম। আমরা দল মোট ৯ জনের ছিলাম। ট্রেকিং ৫ কিমি দীর্ঘ ছিল। যদিও নতুন ট্রেকাররা তাড়াতাড়ি চলতে পারছিল না, তবুও জঙ্গলের সৌন্দর্য সব ক্লান্তি মুছে দিল।

💞রোডোডেনড্রনের সৌন্দর্য:

জঙ্গলে প্রতি কিমিতে বিশ্রামের স্থান ছিল। রোডোডেনড্রনের ফুলের সৌন্দর্য অসাধারণ ছিল। এছাড়াও, যদি আপনি পাখি দেখতে ভালোবাসেন, এই জায়গাটি আপনার জন্য আদর্শ। হিমালয়ান মনাল এই স্যাংচুয়ারির অন্যতম সুন্দর পাখি। এছাড়াও, এখানে লাল পান্ডাও দেখতে পাওয়া যায়।

🙂বার্সে পৌঁছানো এবং অভ্যর্থনা:

আমরা প্রায় ৩:৩০ মিনিট সময় নিয়ে বার্সে ফরেস্ট ব্যারাকে পৌঁছাই। পুসাইজি, ফরেস্ট ব্যারাকের কেয়ারটেকার, আমাদের জন্য গরম লাঞ্চ প্রস্তুত রেখেছিলেন। লাঞ্চের পরে, আমরা কাছাকাছি কিছু জায়গা ঘুরতে যাই, তবে বৃষ্টি এবং কুয়াশার কারণে কিছু দেখতে পারিনি। রাতে মোমবাতির আলোতে আমরা সবাই একসাথে বসে পাকোড়া এবং চা উপভোগ করি। রাতের খাবারে ছিল ভাত, ডাল, এবং মুরগি।

⛺️রাতের অভিজ্ঞতা:

রাতের অন্ধকারে জায়গাটি একটু অদ্ভুত লাগছিল। রাতের বনের শব্দ আমাদের একটু গাঁ ছমছমে অনুভূতি দিয়েছিল। সকালে, সবাই উঠে সূর্যোদয় দেখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বৃষ্টি এবং কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে যেটুকু দেখতে পেলাম, তা অত্যন্ত সুন্দর ছিল। সারা জায়গায় রোডোডেনড্রনের রঙিন সৌন্দর্য ছিল।

সকালে চা খেয়ে আমরা আরও উপরে গিয়ে সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করি। মেঘলা হলেও যা দেখলাম তাতে আনন্দিত হলাম। নিচে তাকিয়ে শুধুই রঙিন রোডোডেনড্রন দেখতে পাচ্ছিলাম। তারপর আমরা নেমে আসি এবং সকালের খাবার খেয়ে বরিয়াখপ এর দিকে রওনা হলাম।

💁পরবর্তী গন্তব্য:

আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল বারিয়াখপ, একটি সবুজ পাহাড়ি গ্রাম। অনেক সুন্দর জায়গা । আমাদের বার্সে ভ্রমণ এখানেই শেষ। আমার পরের লেখায় আমি বারিয়াখপ সম্পর্কে বিস্তারিত বলব।

💁কিভাবে বার্সে রোডোডেনড্রন স্যাংচুয়ারি যাবেন:

নিকটবর্তী রেল স্টেশন হল এনজেপি এবং নিকটবর্তী বিমানবন্দর হল বাগডোগরা। রিজার্ভ গাড়ির ভাড়া ৫০০০ থেকে ৬০০০ টাকা। আর যদি কম খরচে আসতে চান, সিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতে প্রথমে জোরথাং বাজার আসতে হবে। তারপর শেয়ার গাড়িতে সোমবরিয়া বাজার। তারপর ওখরে বা হিলে।

⛺️বার্সে তে থাকার ব্যবস্থা:

বার্সেতে থাকার জন্য ভালো জায়গা হল বার্সে গুরাস কুঞ্জ। পাশাপাশি বার্সে ফরেস্ট ব্যারাকও রয়েছে। ওখরেতে অনেক হোটেল এবং হোমস্টে রয়েছে।

👉৩ রাত ৪ দিনের বার্সে ভ্রমণ পরিকল্পনা:

অধিকাংশ পর্যটক প্রথম রাত ওখরেতে, দ্বিতীয় রাত বার্সেতে এবং তৃতীয় রাত আবার ওখরেতে কাটান। তবে, তৃতীয় রাত ওখরেতে কাটানোর পরিবর্তে বারিয়াখপ যাওয়ার ভালো।

এই ছিল আমার বার্সে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে। 🌲🏞️

ভাল ভ্রমণ হোক! 🌏✈️

19/01/2025

🛖আলপাইন রিট্রিট হোমস্টে
আমরা ভ্রমণ পিপাসু মানুষ!ঘরের বাইরে পা বাড়ানোর নাম শুনলেই আমাদের মন উতলা হয়ে ওঠে। তবে পকেটের সীমাবদ্ধতা মাঝেমধ্যেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। মধ্যবিত্ত জীবনে, ভ্রমণ মানে বাজেটের সঙ্গে মানিয়ে চলা। তবুও, শহরের কোলাহল ছেড়ে প্রকৃতির নীরবতায় নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চায় এমন মানুষদের সংখ্যা এখন বেড়ে চলেছে। আজ এমনই এক অফবিট জায়গার কথা বলব, যেখানে প্রকৃতি আপনার সঙ্গী হয়ে উঠবে। চলুন, নিয়ে যাই কালীম্পং-এর কাছের এক অসাধারণ ‘আলপাইন রিট্রিট হোমস্টে’-তে।

💁আমার অভিজ্ঞতা – কালীম্পং-এর কাছের এই গ্রাম্য হোমস্টে-তে
সিকিমের দক্ষিণ প্রান্তে টেমি টি গার্ডেনে এক রাত কাটানোর পর, আমরা পরদিন বুদ্ধ পার্ক, চারধাম, নামচি ঘুরে এসে পৌঁছালাম আলপাইন রিট্রিট হোমস্টেতে। তখন রাত হয়ে গিয়েছে। গাড়ি থেকে নামতেই দেখি, হোমস্টের মালিক সুরজ থাপা দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য। অন্ধকারে চারপাশ তেমন কিছু দেখা যাচ্ছিল না। তবে হোমস্টের আলোয় দেখলাম ছোট্ট, সাজানো-গোছানো এক বাড়ি।

দূরে তাকিয়ে প্রথমে মনে হলো আকাশে তারারা ঝলমল করছে, কিন্তু পরে বুঝলাম, সেগুলো আসলে সিকিমের পাহাড়ি বাড়িগুলোর আলো। ফ্রেশ হয়ে বসতেই এল গরম চা আর পকোড়া। খাওয়া-দাওয়া সেরে সুরজজি বললেন, "চলুন স্যার, বনফায়ার আর বারবিকিউয়ের আয়োজন করেছি।" শীতল পাহাড়ি পরিবেশে জ্বলন্ত আগুনের পাশে বসে, হাতে বারবিকিউয়ের গরম গরম মাংস – সে এক অন্যরকম অনুভূতি।

🏞সকালের অনুভূতি – কাশ্যাম গ্রামে হোমস্টে
পরদিন সকালে পাখির ডাক শুনে ঘুম ভাঙল। বাইরে এসে দাঁড়াতেই মন ভরে গেল – যতদূর চোখ যায় পাহাড় আর সবুজের এক অপরূপ দৃশ্য। এই হোমস্টের চারপাশে রয়েছে এলাচ আর কিউই ফলের বাগান। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেল না। তবে সুরজজি বললেন, "মেঘ না থাকলে সামনের উঠান থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়।"

🚘কীভাবে যাবেন এই হোমস্টেতে?
কাশ্যাম গ্রাম, মুংসাং সিনকোনা প্ল্যান্টেশন, কালীম্পং জেলার অন্তর্গত।
👉নিকটতম বিমানবন্দর: বাগডোগরা।
👉নিকটতম রেলস্টেশন: এনজেপি (নিউ জলপাইগুড়ি)।
👉বাগডোগরা বা এনজেপি থেকে কাশ্যাম গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি SNT বাসস্ট্যান্ড থেকেও আসা যায়। রিজার্ভ গাড়ি ভাড়া পড়বে ৩,০০০–৪,০০০ টাকা, যা সিজন অনুযায়ী ওঠা-নামা করে। বাজেট বাঁচাতে চাইলে এনজেপি বা SNT বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে কালীম্পং পৌঁছে, সেখান থেকে কাশ্যাম গ্রামে যাওয়া যাবে।

🤷কাশ্যাম গ্রামে কী দেখবেন?
👉ঝরনা: কাছেই রয়েছে একটি সুন্দর ছোট্ট ঝরনা।
👉কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং তিস্তা নদীর দৃশ্য:
জানালার পাশে বসেই কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
কাছেই এমন একটি ভিউপয়েন্ট রয়েছে, যা আপনাকে একইসঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা এবং তিস্তার গভীর গিরিখাত দেখার সুযোগ দেবে। (লং রিভার ভিউ )

🦜পাখি দেখার জন্য আদর্শ স্থান:
👉ভোর থেকেই নানা প্রজাতির পাখির কলতানে ভরে ওঠে চারপাশ।
👉গ্রামসংলগ্ন গভীর অরণ্যে ঢুঁ মারলে অনেক অজানা পাখি দেখা মিলবে।

💁কীভাবে বুকিং করবেন এবং খরচ কেমন?
👉খরচ: দৈনিক মাথাপিছু থাকা ও খাবার খরচ – ১,০০০ টাকা।
👉সিজনের সময় এদিক-ওদিক হতে পারে।
👉যোগাযোগ: সুরজ থাপা – ৮৯১৮১১২৬৯২।
খাবারের মান বেশ ভালো এবং ভাড়া অত্যন্ত সাশ্রয়ী। তাই মধ্যবিত্ত ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এটি একেবারে আদর্শ।

💁শেষ কথা – প্রকৃতির কোলে এক নির্জন স্বর্গ
শহুরে কোলাহল আর যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে আলপাইন রিট্রিট হোমস্টে আপনার জন্য একদম উপযুক্ত। এখানে পাহাড়ের নীরবতা, সবুজ প্রকৃতি আর সাদাসিধে গ্রামীণ জীবনের স্বাদ এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে। তাই আর দেরি না করে, ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। স্মৃতিতে ভরে উঠুক আপনার ভ্রমণপিপাসু মন।

পেজ: Globe in Grip
আপনার সঙ্গী – স্মৃতিময় ভ্রমণ কাহিনির পথে। 🌏

18/01/2025

Baba Mandir এবং Kupup Lake এর গল্প । Globe in Grip
24 শে এপ্রিল, ২০১৮ সকালে নাথাং ভ্যালীতে G.B. Pradhan এর হাতে গরম গরম লুচি আর আলুর দম দিয়ে প্রাতরাশ সেরে বেরব। আমরা আজকে বাবা মন্দির, টুক্লা ভ্যালী আর কুপুপ লেক দেখে নিমাচেন গিয়ে রাত কাটাব। কিন্তু গাড়ী কিছুতেই স্টার্ট নিচ্ছে না। কাল সারারাত বরফ পড়েছে, ইঞ্জিন জমে গেছে। গরম জল ঢেলে গরম করতে হবে। আরও একটা অসুবিধা হল, পূর্ব সিকিম এর এই দিকে শীত কালে রাস্তায় যখন খুব বরফ পরে তখন গাড়ির চাকায় চেন পরিয়ে যেতে হয় যাতে করে চাকা শ্লিপ না কাটে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনও চেন নেই। তাই যতক্ষণ না আর্মিদের গাড়ি চলাচল না করছে ততক্ষণ আমাদের বেরনো সম্ভব নয়। আর্মিদের কাছে সারা বছরই চেন থাকে। যাই হোক গাড়ির ইঞ্জিন গরম হতে হতে ১১ টা বেজে গেল। নাথাং ভ্যালীর আর আম্রিত প্রধান এর পরিবার কে বিদায় জানিয়ে চললাম বাবা মন্দির এর উদ্দেশ্যে।

নাথাং ভ্যালীর থেকে বেরনোর রাস্তাটা একটু বিপদজনক আর একটু হলেই শ্লিপ কেটে গাড়ি সমেত যাচ্ছিলাম আর কি। লক্ষ্মী চক থেকে রাস্তা ভালো। হেলে দুলে, ধীরে সুস্থে এগিয়ে চলেছি। যতদূর চোখ যায় খালি বরফ, মনে এদেশে শুধু বরফ জন্মায়, বরফের খেত। আর একটু এগিয়ে একটা মোমো এর দোকান চোখে পরতেই গিন্নী ড্রাইভার কে দাড়াতে অনুরোধ করল। আমি একটু বাধা দিলাম – এত খাওয়া খাওয়া কিসের, অনেক দূর যেতে হবে, কিন্তু কাজে লাগল না। নেমে পড়ল সবাই। আমিও নামলাম, খেলাম ও। কি আর বলব। জানিনা পাহাড়ে এলে এত খিদে লাগে কেন? আমাদের সমতলে তো কত দিন ১ টা ২ টো অব্দি না খেয়েই কেটে যায়। ঘণ্টা খানেক যাওয়ার পর এসে পৌঁছলাম পুরনো বাব মন্দির এর সামনে।

🛕পুরনো বাবা মন্দিরঃ
সমুদ্রতল থেকে ১৩,১২৩ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই বাবা মন্দির। এটা কিন্তু কোনও হিন্দু দেবতার মন্দির নয়। এখানকার দেবতা বাবা হরভজন সিং, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৩ নম্বর রেজিমেন্টের একজন সৈন্য ছিলেন, যিনি ১৯৬২ সালের ইন্দ-চায়না যুদ্ধে শহীদ। শোনা যায় বাবা হরভজন, মৃত্যুর পর ওই রেজিমেন্টের ই একজন সৈনিক এর স্বপ্নে এসে শহীদ স্তম্ভ বানানোর জন্য বলেন। আরও শোনা যায় চিন সৈনিক রাত্রে দূরবীন এ ভারতের দিকে চোখ রাখলে এখনও মাঝে মাঝে দেখে ভারতের হয়ে কেউ পেট্রোলিং পাহারা দিচ্ছে, কিন্তু ওই সময় ভারতের তরফ থেকে কেউই পাহারা দেয়না। ধরে নেওয়া হয় বাবা এখনও ভারতের রক্ষার জন্য পাহারা দেন। বাবা হরভজন সিং মরণোত্তর মেজর উপাধি দেওয়া হয় এবং ওনার স্মৃতির উদ্দেশ্য তৈরি হয় একটি মন্দির। এখানে উনি যে বাঙ্কারে থাকতেন সেই বাঙ্কারে আজও ওনার বিছানা, জামা কাপড়, জুতো রোজ নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। সবচেয়ে বড় কথা আজও উনি নিয়মিত মাহিনা পান এবং বছরের প্রাপ্য সব ছুটি পান। প্রসাদ পেলাম।

প্রসঙ্গত বলে রাখি, গ্যংটক থেকে নাথুলা বা কুপুপ লেক ট্যুর করার সময় যে বাবা মন্দির দেখা যায় সেটি নতুন বাবা মন্দির। একটু ঘুরেফিরে এগিয়ে চললাম কুপুপ লেক এর উদ্দেশ্য। আঁকাবাঁকা রাস্তা আর বরফ বেশ মজাই লাগছে। মাঝে মাঝে নজরে পড়ছে আনান্য টুরিস্টরা বরফে লুটোপুটি খাচ্ছে, কেউ সেলফি তুলতে ব্যাস্ত আর কেউ আর একজনের গেঞ্জির মধ্যে বরফ ঢুকিয়ে আনন্দ পাচ্ছে। চারপাশের অনিন্দ সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম কুপুপ লেকের ধারে।

🏕কুপুপ লেকঃ
সুমদ্রতল থেকে ১৩,০৬৬ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই লেক। এখানে ছোট বড় কয়েকটি লেক আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং উল্লেখযোগ্য এলিফ্যান্ট লেক। দুরথেকে দেখতে হাতির মত লাগে বলে এই নাম।উত্তর বঙ্গের জলঢাকা নদীর উৎস এই এলিফ্যান্ট লেক। কুপুপ লেকের ধারেই অবস্থিত কুপুপ গ্রাম। গোটা কয়েক বাড়ি, একটি চেক পোস্ট আর ছোট্ট একটি মার্কেট এই নিয়েই কুপুপ গ্রাম। ও আর একটি কথা যেটা না বললে কুপুপ সম্পর্কে লেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে সেটা হল- পৃথিবীর সবচেয়ে উচু গলফ কোর্স এই কুপুপ গ্রামেই। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড এ যার নাম আছে – ইয়াক গলফ কোর্স।

🚘যাতায়াত ব্যবস্থাঃ
👉সবচেয়ে কাছের এয়ারপোর্ট বাগডোগরা, রেল স্টেশান এন.জে.পি.। বাগডোগরা, এন.জে.পি. এবং শিলিগুড়ি এস.এন.টি. বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু এক দিনে যাওয়া সম্ভব নয়। একটা দিন রিশিখোলা, রাংলি, রংপো বা লিংতাম এ থাকা ভালো। তবে এই রুট এ প্যাকেজে যাওয়াই ভালো। তবে এই রুটে প্যাকেজ টুর করে যাওয়াই ভালো। প্যাকেজ টুর এর জন্য যোগাযোগ –
👉Sibastiyan Pradhan – 9932744407
👉S.B. Mukhiya – 9593778166
👉Gopal Pradhan - 89002 21231
👉Pashang Sherpa - 9002107782 / 8145885964

🛖থাকবার জায়গাঃ
পুরনো বাবা মন্দির বা কুপুপ লেক কথাও থাকবার জায়গা নেই। নাথাং ভ্যালী, লুংথুং বা জুলুক এ থেকে এই স্থান গুলি দেখতে হবে। তবে কুপুপ এ একটি হোমস্টে তৈরি হচ্ছে।

💁আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থানঃ
লুংথুং সানরাইজ পয়েন্ট, জুলুক, নাথাং ভ্যালী, মমেঞ্চ লেক, নাথুলা, ছাঙ্গু লেক। তবে নাথুলা দেখতে গ্যাংটক থেকে পারমিশান করাতে হবে। অনেক জুলুক হয়ে দেখতে দেখতে গ্যাংটক চলে যায়।

16/01/2025

নাথাং ভ্যালির ডায়েরি: এক বরফমাখা দিন | Globe in Grip
🏞২৩ শে এপ্রিল আমরা যখন নাথাং ভ্যালী পৌছলাম তখন বেলা ২ টো। আমাদের বুকিং ছিলো G.B. Pradhan এর The Sunset Retreat এ। পৌঁছে গাড়ি থেকে বেরিয়ে মনে হল ডিপ ফ্রিজ এ ঢুকলাম, মনে হচ্ছে আমার গাড়ির ভেতরে ফিরে যাই। দেখি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য দাড়িয়ে আছে G.B. Pradhan নিজেই। ব্যগপত্র নিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে আমি জিজ্ঞ্যাসা করলাম – প্যায়চানা? উত্তর এল না। মনে পড়ল আমার ই তোঁ ভুল হনুমান টুপি পরে থাকলে কেউ চিনতে পারে? টুপিটা খুললাম চিনতে পারল বলল – “আরে আপ তোঁ হামারা ঘর কে আদমি হো। কাহে ইতনা দাড়ি দুড়ি বানাকে রাক্ষে হো? হাসলাম। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। এতবার নাথাং এ এসেছি কিন্তু একবারও বরফ দেখতে পেলাম না। Amrit জি বলল উপরে প্রচুর বরফ আছে। একটু জিরিয়ে নিয়ে গরম গরম কলাই ডাল আর ডিম ভাত দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে একটু ঘুরতে বেরলাম। ও একটি কথা যেটা না বললেই নয় এদের হাতের রান্না আমার খুবই ভালো লাগে।

নাথাং ভ্যালী, সমুদ্র তল থেকে ১৩,৫০০ ফিট উচুতে সিকিমের একেবারে পূর্ব প্রান্তে, ভূটান আর চিন বর্ডার এর প্রায় লাগোয়া। বছরের এক এক সময়ে নাথাং এর চেহারা আলাদা আলাদা হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ সমগ্র ভ্যালী বরফের নিচে ঢাকা থাকে। জুন থেকে নানা রকমের ফুল ফোটে। আগস্ট এ আবার পুরো ভ্যালী জুড়ে খেলা করে রংবেরং ঘাস ফুল। ব্রহ্মকমল ও ফোটে নাথাং ভ্যালী তে। অল্প কিছু মানুষের বসবাস এই নাথাং ভ্যালী তে। ভ্যালীর একেবারে মাঝখানে একটি কৃষ্ণ মন্দির আছে। একটি ছোট্ট নদীও কুলকুল শব্দে বয়ে চলে। আমাদের সমতলের হিসেবে নালা বলাই ভালো।

কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম কৃষ্ণ মন্দিরের আশেপাশে। কয়েকটি চমরী গাই বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাচ্চা গুলি খুবই কিউট। মেঘ আর কুয়াশায় ঢাকা নাথাং ভ্যালীকে দেখে মনে হচ্ছে আমরা পাথরের মরুভূমিতে এসে পরেছি। নাথাং ভ্যালীতে এসে প্রত্যেক বারই লক্ষ্য করি এখানকার মানুষজন গুলিকে। ভারই অদ্ভুত। সবাই ধীরে ধীরে চলাফেরা করে। কোনও তাড়াহুড়ো নেই এদের জীবনে। নাথাং ভ্যালীর জনজীবন কেমন যেন থমকে থমকে চলে। আমার তোঁ মনে হয় এরা, ঝগড়া করতেও জানে না। হাটতে হাটতে একটা দোকানে ঢুকে পরলাম। দোকান গুলোও তেমন বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। ভেতরে ঢুকলে বেশ বড়সড়ই। চায়ের অর্ডার দিলাম। একটু পরেই চলে এল গরম গরম চা সঙ্গে একগাল নির্ভেজাল খোলামেলা হাসি।

সন্ধ্যার আগে আগেই মেঘটা একটু কাটতেই The Sunset Retreat এর সামনে দাড়িয়েই উপভোগ করলাম নাথাং ভ্যালীর অবিস্মরণীয় সূর্যাস্ত। এ দৃশ্য স্মৃতির মণিকোঠায় বহুদিন উঁকি মারবে। আর শেষ বিকেলের মরা আলোয় নাথাং ভ্যালীকে লাদাখ এর প্রতিছবি বলে মনে হচ্ছে।

সন্ধ্যায় ভেজিটেবল পকোড়া চা সহযোগে খেয়ে লেপের মধ্যে ঢুকে পড়লাম। বাইরে ভীষণ ঠাণ্ডা আর রাতের খাবারের সময় বেরব। আড্ডা শুয়ে শুয়েই দিচ্ছি। সন্ধ্যে ৭.৩০ নাগাদ শুরু হল হাল্কা বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পর আমার গিন্নী বলল বাইরে বরফ পড়ছে। জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি তাইত। সাদা সাদা সাবুদানার মত উপর থেকে ঝর ঝর করে পড়ছে। আর কে শুয়ে থাকে বেরিয়ে এলাম বাইরে। এবার দিয়ে চার পাঁচবার তো নাথাং এসেছিই কিন্তু এবার এ প্রথম বরফ পরা দেখলাম। যাইহোক রাতের খাবার তারতারি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। রাত যত বাড়ছে ঠাণ্ডার প্রকোপ ও সমান তালে তাল দিয়ে বাড়ছে। আর বাড়ছে বরফ পরা । দেখছি থোকা থোকা বরফ জানলায় এসে আঘাত করছে আর বেয়ে নিচের দিকে নামছে। একটু শ্বাসকষ্ট হয় নাথাং ভ্যালীতে। রাতে একটু গা একটু গরম গরম মনে হল। একটু চিন্তায় পরে গেলাম। কাছে ওষুধ পাতি সবই এনেছি। তবুও ভালো লাগছে না বেড়াতে এসে শরীর খারাপ হয়নি কোনও দিন। ঠাণ্ডায় ঠিকঠাক ঘুম হল না। সকালে অনেক কষ্টে উঠে জানালা খুললাম। একি! কোথায় কালকের সেই পাথরের মরুভূমি? এতো সাদা আর সাদা যতদূর চোখ যায় বরফের চাদর। কোথায় গা গরম? কোথায় মন খারাপ গামবুট পরে বেরিয়ে পড়লাম বাইরে। লুটোপুটি খেলাম চারিদিকে। ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম কয়েকজন আর্মি কথাও যাচ্ছে। আমাদের দেখে একজন বলল – “আপলোগ বহুত লাকি হো। ইস টাইম কভিভি নাথাং মে বরফ নেহি গিরতা।“ আমার এবারের নাথাং ভ্যালীর ঘোড়া সার্থক।

🚘কীভাবে পৌছবেনঃ
👉বাগডোগরা এয়ার পোর্ট থেকে দুরত্ব ১৭০ কিমি।
👉এন. জে. পি. থেকে দুরত্ব ১৬৯ কিমি।
👉গ্যাংটক থেকে দুরত্ব ৬৮ কিমি।
👉সব ক্ষেত্রেই ভরসা ছোট গাড়ি। তবে এই রুটে প্যাকেজ টুর হয়।

🛖থাকবার জায়গাঃ
👉নাথাং ভ্যালী তে থাকবার অনেক গুলি বেশ ভালো হোমস্টে আছে।
👉The Sunset Home stay – 094762 98184
👉Nathang Inn – 9674369099
👉Daftar Banglow – 9433305726
👉Devi Home stay – 9230848848
👉Pinasha Ladge – 9474648767
সব লজেই থাকা খাওয়া দিয়ে দৈনিক মাথা পিছু ৯০০ থেকে ১২০০ এর মধ্যে।
তবে এই রুটে প্যাকেজ টুর করে যাওয়াই ভালো। প্যাকেজ টুর এর জন্য যোগাযোগ –
👉Sibastiyan Pradhan – 9932744407
👉S.B. Mukhiya – 9593778166
👉Gopal Pradhan - 89002 21231
👉Pashang Sherpa - 9002107782 / 8145885964

💁আশেপাশের কিছু দেখার মত জায়গাঃ
👉জুলুক – বাবা মন্দির – টুকলা ভ্যালীর – কুপুপ লেক – মমেঞ্চ লেক নাথুলা ইত্যাদি। কিন্তু নাথুলা দেখতে গেলে গ্যাংটক থেকে অনুমতি নিতে হয়।
👉আবার অনেকে নাথাং ভ্যালীর তে থাকার পর বাবা মন্দির, কুপুপ লেক মমেঞ্চ লেক দেখতে দেখতে গ্যংটক চলে যায়।

🤷বিশেষ কথাঃ
👉অনেক বেশী উচ্চতা জনিত কারনে নাথাং ভ্যালীতে লাফালাফি বা দৌড়ঝাপ করা নিষেধ। সঙ্গে অবশ্যই আদা, কর্পূর নিতে হবে। শ্বাসকষ্ট হলে আদা মুখে রাখলে কিছুটা উপশম হবে। সঙ্গে কর্পূর নাকে শুকলেও কাজ হয়।
👉সঙ্গে পর্যাপ্ত গরম জামাকাপড়, গ্লাভস, সানগ্লাস, বোরোলিন এবং অবশ্যই ভালো গ্রিপ ওলা জুতো। কারণ বরফে শ্লিপ কাটার সম্ভাবনা।
👉বছরের সব সময় ই যাওয়া যায় তবে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি নাথাং যাবার রাস্তা পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে।

14/01/2025

⛰নাথাং ভ্যালি: পার্ট ১ (মেঘের সমুদ্র)
✒️ Globe in Grip

প্রকৃতির সৌন্দর্য কখনও কখনও আমাদের এমন এক পৃথিবীতে নিয়ে যায়, যেখানে মনে হয় আমরা কোনও পরী-কথার রাজ্যে পা রেখেছি। সিকিমের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত নাথাং ভ্যালি (Nathang Valley) এমনই এক স্বর্গীয় স্থান। যারা পাহাড়ি বরফে মোড়া উপত্যকার অপার সৌন্দর্য নিজের চোখে দেখতে চান, তাদের জন্য নাথাং ভ্যালি এক আদর্শ গন্তব্য। আজ আমরা আপনাদের জানাবো এই বরফের রাজত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত।

দিনটি ২৩ সে এপ্রিল, রিশিখোলাকে বিদায় জানিয়ে চললাম নাথাং ভ্যালি এর উদ্দেশ্যে। সকাল ৯ টায় বেরিয়ে একটু পরই চলে এলাম রংলি বাজার এ। এখানেই পূর্ব সিকিম এর এই রুট, মানে ওল্ড সিল্ক রুট এ যাওয়ার পারমিশন করতে হয়। যে কোনও আই কার্ড এর জেরক্স ও পাসপোর্ট সাইজ ফটো দিয়ে খুব সহজেই এস.ডি. পিও সাহেবের কাছ থেকে এই ইনার লাইন পারমিট পাওয়া যায়। ড্রাইভার গেলো পারমিট আনতে। আর আমাদের বাজার টা একটু ঘুরে দেখতে বললো। কেউ যদি গরম পোশাক আনতে ভুলে যান , তবে এই বাজারে অল্প দাম এ পোশাক বা অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত বলে রাখি ওল্ড সিল্ক রুট এ এখানেই লাস্ট এ.টি.এম., টাকা তুলতে হলে এখান থেকেই তুলতে হবে। ড্রাইভার চলে এলো চললাম উপরের দিকে।

এর কিছুক্ষন যাবার পর রাস্তার প্রায় উপরেই পড়লো বিরাট এক ঝর্ণা নাম - কিউখোলা ওয়াটার ফলস। কয়েকশো ফুট উপর থেকে দুদ্দাড় বেগে ঝাঁপিয়ে পড়ছে স্বচ্ছ জলের ধারা। নেমে কয়েকটি ফটো নিয়ে আবার এগিয়ে চললাম। নিমাছেন ছাড়িয়ে ৩ কিমি পর ফদমছেন এ থামতে হলো, ওয়াইল্ড লাইফ এন্ট্রিফি মাথা পিছু ৫৫ টাকা এবং ক্যামেরা থাকলে অতিরিক্ত ১০০ টাকা (মোবাইল ক্যামেরা বা গো প্রো বা ওই জাতীয় ক্যামেরার জন্য কোনও টাকা লাগে না)। এই ফদমছেন এ ২০১২ তে একরাত ছিলাম মমতা প্রধান এর হোমস্টে তে। খুব ভালো লেগেছিলো ওনাদের আতিথেয়তা। আর এই হোমস্টের জানালাথেকে দেখা সূর্যাস্ত স্মৃতির মণিকোঠায় উঁকি মারে আজও। যে বছর বেশি তুষারপাত হলে, বরফ এখানেও চলে আসে। ফদমচেন এর থেকেই শুরু হলো জঙ্গল বেশিরভাগ ই পাইন, ধুপি আর ছিপ বাঁশ। মাঝে মাঝে কয়েকটা রডোডেনড্রন গাছ চোখে পড়ছে। রেড পান্ডার অগাধ বিচরণ ক্ষেত্র এই জঙ্গল।

ফদমচেন এর ৩ কিমি পর পড়লো জুলুক। অনেকেই উপরের আবহাওয়ার সঙ্গে শরীর কে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এখানে এক রাত কাটান। শুধু মোটা টিনের বাড়ি। প্রত্যেক বছর পুরু বরফের চাদর ঢেকে দেয় জুলুক কে। জুলুক মূলত একটি আর্মি বেসক্যাম্প। উচ্চতা ৯০০০ ফুট এর আশেপাশে। এখানে যে ক্যাম্প টি আছে, নামটি ভারী সুন্দর - 'Cloud Warior ', মেঘ যোদ্ধাদের পাশ কাটিয়ে আমাদের গাড়ী এগিয়ে চললো আরো উপরে। এসে থামলাম থাম্বি ভিউ পয়েন্ট এ। এই সেই বিখ্যাত জায়গা, যেখানে দাঁড়িয়ে জুলুক এর রাস্তার ৯৬ টা হেয়ারপিন বাঁক একসঙ্গে দেখা যায়। অদ্ভুত সুন্দর এই দৃশ্য। দেখে রবীন্দ্রনাথ এর 'রাজপথ এর আত্মকথা ' গল্পের কথা মনে পরে গেলো- "অহল্যা যেমন মুনির শাপ এ পাষান হইয়া পড়িয়া ছিলো, আমিও যেন তেমনি কাহার শাপে চিরনিদ্রিত সুদীর্ঘ অজগর সর্পের ন্যায় অরণ্য পর্বতের মধ্যে দিয়া, বৃক্ষশ্রেণীর ছায়া দিয়া সুবিস্তীর্ণ প্রান্তরের বক্ষের উপর দিয়া দেশ দেশান্তর বেষ্টন করিয়া বহুদিন ধরিয়া জড়শয়নে শয়ান রহিয়াছি।" একটু আগে যে ট্র্যাক আমাদের কাটিয়ে নিচের দিকে চলে গেল? এখন মনে হচ্ছে একট খেলনা গাড়ি যাচ্ছে।

এখানে কয়েকটি চা এর দোকান আছে। আমরাও খেলাম। আরো খানিকটা পথ যেতে হবে। তাই বেশি দেরি না করে এগিয়ে চললাম। গাড়ি চললো লুংথুঙ এর উপর দিয়ে। রাস্তার ডান দিকে ভুটানের গিরিবর্ত দেখা যাচ্ছে। আর নিচের দিকে চোখে পড়ছে নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক। লুংথুঙ সানরাইজ পয়েন্ট এ বাঁদিকে তাকিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ। সঞ্জয় লাফ মেরে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। একি দেখছি, নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছে না। আমাদের গাড়ি মেঘ এর উপরে। ভ্যালি তে জমে আছে মেঘের আস্তরণ তার মাঝে দূরে উঁকি মারছে স্বদলবলে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ এক বিস্ময়কর দৃশ্য। মনে হচ্ছে মেঘের সমুদ্র। ২০১২ তে এখানেই দেখেছিলাম অসাধারণ সূর্যোদয়। গাড়ি ১.৩০ নাগাদ পৌঁছলো নাথাং ভ্যালি। গাড়ী দেখে এগিয়ে এলো সানসেট হোমস্টে এর মালিক জি.বি. প্রধান। আমি বললাম 'প্যায়চানা', কেমন অবাক ভাবে তাকালো। আমার ই তো ভুল হনুমান টুপি পরে থাকলে কেউ চেনে? টুপি খুলতেই একগাল হেসে উত্তর দিলো "আরে সাব আপ তো হামারা ঘর কি আদমি হো, ইতনা দাড়ি দুরি কাহে বানাকে রাক্ষে হো? ক্রমশ .............

সিকিমের এই অংশকে স্থানীয়ভাবে "সিল্ক রুট" নামেও ডাকা হয়, কারণ এই পথ একসময় প্রাচীন সিল্ক রুটের অংশ ছিল। এখন এটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য এক জনপ্রিয় স্থান।

🤷কখন যাবেন নাথাং ভ্যালি?
নাথাং ভ্যালি ঘোরার সেরা সময় অবশ্যই শীতকাল (নভেম্বর থেকে মার্চ)। তবে শীতে এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। বরফের চাদরে মোড়া উপত্যকার সৌন্দর্য সেই সময়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

যারা বরফের রোমাঞ্চ চান না, তারা গ্রীষ্মকালে (মার্চ থেকে মে) বা শরৎকালে (সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর) নাথাং ভ্যালি ঘুরতে যেতে পারেন। তখন চারপাশে সবুজ ঘাস, রঙিন ফুল আর মেঘের খেলা মন মুগ্ধ করে।

🛩নিকটতম বিমানবন্দর:
বাগডোগরা এয়ারপোর্ট, যেখান থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত ট্যাক্সি পাওয়া যায়।

🚆নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন:
এনজেপি (নিউ জলপাইগুড়ি), যেখান থেকে গ্যাংটকের জন্য গাড়ি পাওয়া যায়।

🛖থাকার ব্যবস্থা:
এপথে রংলি, নিমাছেন , ফদমচেন ,জুলুক , লুংথুঙ, নাথাং প্রত্যেক জায়গাতেই থাকবার জায়গা আছে। কোনও জায়গার নম্বর বা কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করুন।

💁কিছু দরকারি টিপস:
👉উষ্ণ পোশাক: নাথাং ভ্যালির শীত অত্যন্ত তীব্র। পর্যাপ্ত শীতের পোশাক সঙ্গে রাখুন।
👉স্বাস্থ্য সতর্কতা: উচ্চতা বেশি হওয়ায় শ্বাসকষ্ট বা মাথাব্যথা হতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজনে ওষুধ রাখুন।
👉স্থানীয় আইন মেনে চলুন: এই অঞ্চলটি সেনা অধ্যুষিত, তাই ছবি তোলা বা চলাফেরায় সেনার নির্দেশ মেনে চলুন।

আপনার নাথাং ভ্যালি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? নিচে মন্তব্য করে জানান। আর এমন আরও ভ্রমণ কাহিনি পেতে ফলো করুন Globe in Grip। 🌍❄️

Address

Website

facebook.com

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Globe in Grip posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

তিন রাত চার দিনের টংলু ভ্রমনের ছোট্ট একটি বাজেট ট্যুর প্ল্যান #টংলু_ভ্রমণ #পর্যটন_বাংলা #বাংলার_ভ্রমণ #ট্রেকিং_ইন্ডিয়া #দার্জিলিং_পর্যটন #বাজেট_ট্রিপ #বাংলায়_ভ্রমণ_গাইড #হিমালয়_দর্শন #টংলু_ট্রেক #পাহাড়_যাত্রা

Sandakphu #sandakphu #trek #offbeat travel

🌄 **Nathang Valley: A Story of Travel Heaven | Globe in Grip** 🌟 Escape to the breathtaking beauty of **Nathang Valley**, a serene paradise nestled in the heart of Sikkim. 🏞️✨ Misty mornings, rolling meadows, and majestic mountain views await you in this hidden gem of the Himalayas! 🗻💚 📍 Perfect for nature lovers and adventure seekers, Nathang Valley offers unmatched tranquility and a magical travel experience. Let the wanderlust begin! 🧳✨ 🌐 Follow **Globe in Grip** for more travel inspiration and unforgettable journeys! 💬 Tag your travel buddy and let them know this is your next destination! 🔥 **#NathangValley #TravelReels #Wanderlust #GlobeInGrip #ExploreSikkim**

Simlipal tiger Reserves #simlipal #wildlife

🌄 রিশিখোলা: প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার আদর্শ স্থান! 🌿 আপনার কি কখনো মনে হয়েছে পাহাড়ি নদীর কুলকুল ধ্বনি, সবুজ প্রকৃতি, আর পাখির ডাকের মাঝে কয়েকটা দিন কাটানো দরকার? 🏞️ তাহলে উত্তরবঙ্গের এই সুন্দর স্থান, রিশিখোলা, আপনার জন্য একদম উপযুক্ত! #Rishikhola #NorthBengal #TravelGuide #GlobeInGrip #Wanderlust #BengaliTravelInfluencer #ExploreBengal #NatureLovers

✨ নাথু লা পাস – সিকিমের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল! 🏔️ প্রাচীন সিল্ক রুটের এই উচ্চ পার্বত্য গন্তব্য আজও তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ করে। চাঙ্গু লেক, মন্দাকিনী জলপ্রপাত, শেরাথাং বাজার এবং আরও অনেক কিছুই আপনাকে এক অন্যরকম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে। 🌟 আপনার সিকিম ভ্রমণকে স্মরণীয় করতে আজই যোগ দিন এই দুঃসাহসিক যাত্রায়। 📍 👉 দেখুন, শেয়ার করুন, এবং আমাদের সাথে ভ্রমণের আরও গল্প আবিষ্কার করুন! 📌 For more travel inspiration, follow ‘Globe in Grip’! #NathuLaPass #SikkimTourism #TravelIndia #ExploreSikkim #GlobeInGri

🌊 ছাঙ্গু লেক ট্যুর গাইড: সিকিমের হৃদয়ছোঁয়া সৌন্দর্য! 🏔️ জায়গাটি বিশেষ কেন? গ্যাংটক থেকে মাত্র ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্লেসিয়াল লেকটি গ্রীষ্মে কাঁচের মতো স্বচ্ছ এবং শীতে বরফে ঢাকা। পাহাড়ের কোলে এই লেক প্রকৃতির এক আশ্চর্য সৃষ্টি। 📍 কীভাবে পৌঁছাবেন? গ্যাংটক থেকে শেয়ার জীপ বা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যান। 🌿 দর্শনীয় স্থান: ✨ বরফ ঢাকা লেকের সৌন্দর্য। ✨ স্থানীয় ইয়াক রাইড। ✨ মনোমুগ্ধকর পাহাড়ি পরিবেশ। 🛑 ভ্রমণ টিপস: ✔️ শীতের পোশাক রাখুন। ✔️ উচ্চতায় শ্বাসকষ্টের জন্য প্রস্তুত থাকুন। ✔️ চায়ের কাপে স্নোয়ের মাঝে উষ্ণতার স্বাদ নিন! ❄️ ছাঙ্গু লেকের মায়াবী সৌন্দর্য আপনার ভ্রমণকে করবে স্মরণীয়। আপনার লিস্টে যোগ করুন আজই! 🏔️ 👉 আরও গাইড পেতে ফলো করুন "Globe in Grip"। 🎥 #ChanguLake #TsomgoLake #SikkimTour #ExploreIndia #GlobeInGrip #TravelReels

🌄 গুরুদংমার লেক: প্রকৃতির মাঝে এক অদ্ভুত সুন্দরতা! আপনার কি সিকিমের এই পবিত্র হ্রদ সম্পর্কে জানা আছে? 🗻 বিশ্বের অন্যতম উচ্চতম লেক, গুরুদংমার, তার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য আর আধ্যাত্মিক গল্প নিয়ে অপেক্ষা করছে আপনার ভ্রমণের তালিকায় যুক্ত হওয়ার জন্য। 💙 এই রিলে জানুন: ✔️ কখন যাওয়া সেরা সময় 🗓️ ✔️ পারমিটের দরকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা 🛂 ✔️ কীভাবে পৌঁছাবেন 🚗 ✔️ ভ্রমণে কী কী সঙ্গে নেবেন 🧳 🎥 অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখুন আর আপনার পরবর্তী গন্তব্য পরিকল্পনা করুন এখনই! 👉 Follow @GlobeInGrip প্রতিদিন নতুন ভ্রমণ গল্পের জন্য! #GurudongmarLake #TravelSikkim #GlobeInGrip #TravelGoals #ExploreSikkim #HighAltitudeLake #TravelReels #IndianTourism #NatureLovers #AdventureAwaits 🌟 আপনার ভ্রমণ গল্প আমাদের কমেন্টে শেয়ার করুন! 🗺️