
27/10/2024
আগরতলা মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৬ লাখ বাংলাদেশী শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানকারী শহর হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় এক নাম।
প্রতিবেশী ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী শহর। স্থলপথে দেশের সীমান্ত থেকে সবচেয়ে নিকটবর্তী ছিমছাম পরিচ্ছন্ন ও যানজটমুক্ত সবুজে ঘেরা নান্দনিক এক শহর।
আগরতলা যেন বাঙালির আত্মার আত্মীয় সীমান্ত অতিক্রম করতেই তা অনুভবে আসে। সীমান্তের এপাড় - ওপাড়কে এক সুতোয় বেঁধেছে বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলা! বাংলাদেশীদের আপন করে নিতে যেন কার্পণ্য নেই আগরতলাবাসীর। অচেনা - অজানা মানুষ গুলো মুহুর্তেই আপনাকে বরণ করে নেবে হাসি মুখে শুভেচ্ছা বিনিময়ে । এই শহরের বাসিন্দাদের আতিথিয়েতা ও হৃদ্যতা আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
সকাল ৮ টায় ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে ঠিক সাড়ে ১০ টায় আখাউড়া জংশন পৌঁছে গেলাম মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনে। পূর্বেই ভ্রমণ টিকেট সংগ্রহ না করায় বিলম্ব ফিসহ ২২০ টাকায় স্ট্যান্ডিং টিকেট সংগ্রহ করি।
সকালের স্নিগ্ধতাকে সঙ্গী করে ছুটছে ট্রেন আখাউড়ার পানে, পথিমধ্যে ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে নাতিদীর্ঘ যাত্রাবিরতি।
আখাউড়া স্টেশনে নেমেই সকালের নাস্তা সেরে নিয়ে, রিজার্ভ অটো রিকশায় চেপে বসলাম আখাউড়া চেকপোস্ট অভিমুখে, ভাড়া ৬০ টাকা।
আখাউড়া কাস্টমস হাউজ সংলগ্ন সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে ট্রাভেল ট্যাক্স ১০০০ টাকা প্রদান করে পাশের কক্ষ থেকেই কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সীল সংগ্রহ করে নিই।
কিছুটা সামনে এগিয়েই বিজিবি চেকপোস্টে পাসপোর্ট এন্ট্রি করে এবার ইমিগ্রেশনের পালা। একটি কক্ষেই আগমন ও বহির্গমন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় দুটো আলাদা লাইনে। বাংলাদেশ অংশে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়নি ২০ মিনিটের মধ্যেই নির্বিঘ্নে ডিপার্চার সীলসহ ইমিগ্রেশন শেষ করে এবার ভারতীয় অংশে পা রাখলাম।
প্রথমেই নো ম্যানস ল্যান্ডে বিএসএফের সশস্ত্র প্রহরীদের নিকট পাসপোর্ট প্রদর্শন ও যাচাই শেষে কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে সামনে এগুলেই মূল ইমিগ্রেশন ভবন।
সারিবদ্ধভাবে কড়া নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে ইমিগ্রেশন অফিসারের ডেস্কে হাজির হলাম। এ্যারাইভাল ফরম পূরণ করে কাউন্টারে সাবমিট করতেই অফিসার জানালেন আপনি সাংবাদিক? তাহলে এই নিন এই বিশেষ ফরম টা পূরণ করে আসুন।
দীর্ঘ তথ্য সম্বলিত বিশেষ ফরম পূরণ শেষে ডেস্কে গিয়ে দাঁড়াতেই অফিসার জানালেন তার ডিউটি আওয়ার শেষ! আপনি পাশের কাউন্টারে জমা দিন ৷ পাশের কাউন্টারে গিয়ে জানলাম আমাকে সঠিক ফরম দেওয়া হয়নি যেটা দিয়েছে সেটা বেশ পুরনো! যাক নতুন করে আরেকটা পূরণ করতে বলে নি পাশের ডেস্কের অফিসারের সাথে পরামর্শ করে এন্ট্রি সীল দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হলো৷ এক্সিট পয়েন্টে আরও একবার স্ক্যানারে ব্যাগ চেকিংয়ের মধ্যদিয়ে পোর্টের আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি। ঘড়িতে তখন সময় ১২:২০ মিনিট।
চেকপোস্ট অতিক্রম করতেই পা রাখলাম আগরতলা শহরে!!!
এখানেই মিলবে মানি এক্সচেঞ্জের সুবিধা, মোবাইলের সীম, অন্য কোন রাজ্যে যেতে চাইলে বিমানের টিকিট কিংবা বাস,ট্রেনের টিকিট। জনপ্রতি মাত্র ৩০ রুপিতে শেয়ার অটোতে মাত্র ১৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম আগরতলার প্রাণকেন্দ্র কামান চৌমুনী মসজিদ গলিতে।
এখানে কম বাজেটে থাকার জন্য হোটেল পাওয়া যায় আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার হিসেবে তাই এই এরিয়াকে বেছে নিয়েছি। মসজিদ গলিতে ২/৩ টা হোটেল ঘুরে দেখলাম পছন্দসই হলো না এবার হাটা দিলাম মটরস্ট্যান্ডের দিকে।
হোটেল শান্তি, ৪০০ রুপিতে সিঙ্গেল রুম বুকিং দিলাম। তপ্ত দুপুরে খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে বের হলাম শহর ঘুরে দেখতে।
আগরতলার গরম যতটা অসহ্য , আমুল লাচ্চি ততটাই সুমিষ্ট
কামান চোমুনী থেকে ১০ রুপি তে পৌঁছে গেলাম রাধানগর বাসস্ট্যান্ডে গন্তব্য বিকেলটা দূর্গাবাড়ী চা বাগানের সবুজ সতেজতায় কাটানো।
দূর্গাবাড়ী শহরের উপকণ্ঠে মনোরম এক চা বাগান। রাধানগর স্ট্যান্ডে স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নিয়েছিলাম বেশ পরিচ্ছন্ন আর মারাত্মক স্বাদের ছিলো খাবারটা। আগরতলায় আসলে অবশ্যই এখানকার স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। স্বাদে ও মানে ঢাকার চেয়ে উন্নত দামে সাশ্রয়ী এতে কোন সন্দেহ নেই।
রাধানগর থেকে মোহনপুরগামী লোকাল বাসে ২০ রুপিতে পৌঁছে গেলাম শালবনে।
শালবনে নেমেই বিস্মিত হলাম অপরূপ প্রকৃতির দেখা পেয়ে ৷ এখানে গড়ে উঠেছে ঘন সবুজের সমারোহে ছায়াঘেরা, মায়ামাখা সবুজ-সতেজ শালবৃক্ষের প্রাচুর্যে নির্জন নিস্তব্ধ নয়নাভিরাম এক উদ্যান যার নাম অক্সিজেন পার্ক!
মাত্র ১০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করতেই ঘোর লাগা এক আবহে নিজেকে আবিষ্কার করলাম৷ তপ্ত রোদের ঝাঁঝ এখানে নিমিশেই ম্রিয়মাণ ঘনবৃক্ষের শীতল ছায়ায়!
পাখির কিচির-মিচির এখানে সুর তুলেছে প্রকৃতির অদৃশ্য তানপুরায়, বন-বীথির বুক চিরে গহীন বনে হারিয়ে যায় পর্যটক নিঝুম নিরালায়।উদ্যান জুড়ে নির্মিত হয়েছে বিস্তৃত ওয়াক ওয়ে তারই পাশে বিশ্রামাগার, শিশুপার্ক,ফিটনেস চর্চা কেন্দ্র,বন্য প্রাণীদের ভাস্কর্যের সমাহার, ত্রিপুরার ক্ষুদ্র -নৃগোষ্ঠী মূরাল, স্বাস্থ্য সচেতন রানারদের জন্য দূরত্ব নির্ণায়ক, সুদৃশ্য পাখিদের নীড়!
নির্জন অক্সিজেন পার্ক
গহীন বনে শতবর্ষী বৃক্ষের ছায়া আপনাকে ভুলিয়ে দেবে যান্ত্রিক কোলাহলের দহন যন্ত্রণা। কখনো স্টেইট কখনো আঁকাবাকা পথে মন হারিয়ে যাবে নির্জনতার রাজ্যে। প্রকৃতি এখানে এত অকৃত্রিম রূপের পসরা সাজিয়ে অপেক্ষায় আছে তা আগরতলায় না এলে কখনোই অনুভব করতাম না।
এত নিবিড়, ছায়াঘেরা ঘন সবুজ অরণ্যে মনোরম এক বিকেল স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে অমলিন। এই উদ্যানের ভেতরে পরিচয় হয় ২ ভারতীয় তরুণের সাথে! হঠাৎ দেখায় বন্ধুত্ব!! প্রায় ঘন্টা দেড় অক্সিজেন পার্কের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে অবগাহন করে এবারের গন্তব্য দূর্গাবাড়ী চা বাগান, সঙ্গী সদ্য পরিচিত হওয়া দুই বন্ধু।
উঁচু-নিচু সাপের মতো আঁকাবাকা পথ ধরে গান্ধীগ্রাম পেরিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম সবুজ গালিচায় মোড়ানো দূর্গাবাড়ী চা বাগানের অভ্যন্তরে। নব পরিচিত বন্ধুদের সাথে আলাপচারিতায় জানবার চেষ্টা আগরতলার সাতসতেরো।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে ভাঙলো গল্পের আসর, বাইকের চাকা ঘুরলো বন্ধুদের বাড়ীর পথে৷ পাহার - টিলার গা বেঁয়ে চা বাগানের নির্সগ ভেদ করে আমরা গিয়ে থামলাম চায়ের কুটিরে। যেথায় চোখ যতদূর যায় ঢেউ খেলানো সবুজ চায়ের রাজ্য!
স্থানীয়দের বাংলাদেশীদের প্রতি প্রীতি মুগ্ধ করেছে আমায়। গল্পে -আড্ডায় বাড়ছে রাতের পরিধি এবার সময় হলো হোটেলে ফেরার।
শহরে ফিরে প্রথমে গেলাম সেরওয়ালী সুইটসে প্রচন্ড ভীড় সইতে না পেরে রিক্সায় পথ ধরলাম গোল বাজারের উদ্দেশে।
জনপ্রিয় সেরওয়ালী সুইটসের একটি শাখা
গোল বাজারে এসেও পরিচয় হলো নতুন একজনের সঙ্গে চায়ের টংয়ে আলাপ টানা ২ ঘন্টা! আগরতলায় বাংলাদেশীদের পর্যটক মানেই যেন বিশেষ কিছু, সকলেই আগ্রহ নিয়ে কুশলাদি জানতে চায়, তাদের বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে। গোলবাজার থেকে রিক্সায় সোজা পোস্ট অফিস চোমুনীতে রাতের খাবার গ্রহণ। এরই মধ্যদিয়ে সমাপ্তি হলো আগরতলা ট্যুরের ১ম দিন৷
আগরতলা সফরের ২য় দিন :
সকাল ৮ টায় বের হলাম নাস্তা উদ্দেশে। হোটেল সংলগ্ন এক রেস্তোরায় নাস্তা করতে গিয়ে কথা হলো দোকানি কাকার সাথে। তিনি আমাদের ময়মনসিংহের জামাই, শহরের ছোট বাজারে উনার শশুরবাড়ি!
তারুণ্যে ময়মনসিংহে বেড়াতে এসে কাকিমা কে ভালোলাগা ও পরিণয়। গল্পে আড্ডায় আর উনার স্মৃতিচারণায় সকাল দারুণ কাটলো।
এবার গন্তব্য শহরের হেরিটেজ পার্ক :
যেখানে পুরো ত্রিপুরার উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও এর ভৌগলিক অবস্থানের মিনিয়েচার রয়েছে। থিম বেইজড এই পার্কটি পুরোটা যেন ত্রিপুরার একখন্ড মানচিত্র যেথায় জায়গা পেয়েছে রেলপথ,সড়কপথ, রেলস্টশন, নদী ও নদীর উপর নির্মিত সেতু, পর্যটন কেন্দ্র সমূহ ও ধর্মীয় স্থাপনা মন্দির, মসজিদের ক্ষুদ্র সংস্করণ ।
ত্রিপুরার পর্যটন আকর্ষণ নীরমহল - হেরিটেজ পার্ক ।
পার্কটি ঘুরে দেখলে আপনি পুরো ত্রিপুরা ঘুরে দেখার স্বাদ স্বাদ পাবেন। পার্কের অর্ধেক অংশে মিনিয়েচার ভাস্কর্য সমৃদ্ধ বাকী অংশে ওয়াকওয়ে ও দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ও প্রভাতে স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য রয়েছে ফিটনেস ইকুইপমেন্ট। ভোরের আলোয় সবুজ ঘাসের গালিচা মাড়িয়ে ফিটনেস চর্চা এমন নান্দনিক উদ্যোগ মারাত্মক লোভনীয় বটে।
প্রায় ঘন্টা দেড় হেরিটেজ পার্ক ঘুরে গন্তব্য ঠিক করলাম আগরতলা সায়েন্স সিটি।
২০ রুপি খরচ করে অটোতে চেপে বসলাম বটতলার উদ্দেশে সেখান থেকে আবারও অটো করে সায়েন্স সিটি। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উল্টোরথ যাত্রার ছুটি থাকায় সেদিন সায়েন্স সিটির বন্ধ থাকবে তা পূর্বঘোষিত!
হতাশ হয়ে এবার বাস ধরলাম সিপাহিজলা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের দিকে।
পাহাড় টিলার বাঁকে -বাঁকে চা বাগানের নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় পথে ভরদুপুরে আমার বাস এগিয়ে চলছে সিপাহিজলার দিকে।এই অভয়ারণ্যটা আমাদের দেশের লাউয়াছড়ার সাথে বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ। দুই জায়গাতেই চা বাগান পেরিয়ে দেখা মেলে জীববৈচিত্র্যে ভরপর চিরসবুজ বন-ভূমির।
প্রধান ফটক - সিপাহিজলা অভয়ারণ্য
গহীন বনের বুক চিরে বয়ে গেছে মসৃণ হাইওয়ে ঠিক মাঝখানে প্রধান ফটক। ২০ রুপিতে টিকিট সংগ্রহ করেও ভেতরে প্রবেশ করা হয়নি বাজেট ট্রাভেলারের বাজেট সংকটে! প্রবেশমুখে অপেক্ষমাণ সারি সারি অটোতে উদ্যানের ভেতরটা ঠু মেরে আসলে গুনতে হবে সর্বনিম্ন ৪৫০ রুপি! হঠাৎ সিদ্ধান্তে সংক্ষিপ্ত সফর তাই বাজেটের আকার বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করার সুযোগ মেলেনি।
তবে একেবারে নিরাশ হতে হয় নি বুনো হনুমান আর বানরের দল পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানাতে প্রধান ফটকে অবাধ বিচরণ করে থাকে, পর্যটকরা তাঁদের সিজনাল ফল, রুটির স্লাইস খাইয়ে অনেকেই আনন্দ উপভোগ করছেন ।
এখানেই দেখা মিললো স্থানীয় ৩ কিশোরের সাথে ৩ টা বাইসাইকেল চেপে তারা অভয়ারণ্যের ভেতরটা পর্যবেক্ষণ করে এবার খানিকটা বিশ্রাম নিতে আমার পাশে এসে বসেছে। তাঁদের সাথে গল্পে - আড্ডায় প্রায় ২ ঘন্টা অতিবাহিত করে এবার বাস ধরলাম বটতলার উদ্দেশে।
সিপাইজলা থেকে সোজা হোটেলে ফিরে খানিকটা বিশ্রাম। লাঞ্চ গ্রহণের উদ্দেশে গেলাম মটর স্ট্যান্ডের সেই বিখ্যাত
দিল্লী কা মসুর বিরিয়ানি হাউজে ,
এটি এখানকার হালাল মুসলিম হোটেল। এখানকার মোরাদাবাদী চিকেন বিরিয়ানি কিছুটা মিষ্টি স্বাদের। হায়দ্রাবাদী চিকেন ঝাল স্বাদের।
ফুল বিরিয়ানীর মূল্য ১৪০ রুপি,
হাফ বিরিয়ানীর মূল্য ৭০ রুপি।
আমি দুটোই অর্ডার করেছিলাম। আমার কাছে মোরাদাবাদী বেশি ভালো লেগেছে। এখানকার একটা ব্যাপার লক্ষণীয় প্রথম অর্ডারের পর বাড়তি নিতে চাইলে তা স্কেলে মেপে পরিবেশন করা হয় । ঠিক যত টাকার দিতে বলবেন তত টাকার !!
তারপরের গন্তব্য আগরতলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিখ্যাত উজয়ন্ত প্যালেস।
আগরতলা শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ ও পর্যটন কেন্দ্র। ১৯০১ সালে তৎকালীন রাজা রাধা কিশোর মাণিক্য ২০ একর জমির ওপর তৈরী করেন এই নান্দনিক উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। বাংলাদেশী টুরিস্টদের জন্য এখানে প্রবেশ ফি জনপ্রতি ১০০ রুপি।
পড়ন্ত বিকেলে শুভ্রতার দ্যুতি ছড়ানো প্রাসাদ প্রাঙ্গনে
প্রাসাদের নিচ ও দোতলায় রয়েছে নির্দশনে সমৃদ্ধ জাদুঘর। যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি নিদর্শন সমৃদ্ধ গ্যালারী বাংলাদেশী হিসেবে আমাকে মুগ্ধ করেছে৷ মুক্তিযুদ্ধে আগরতলার অবদান কতটা হৃদয়গ্রাহী তা এই জাদুঘরে সংরক্ষিত ফটো, নিদর্শন থেকে কিছুটা উপলব্ধিতে এসেছে৷
এই প্রাসাদের নির্মাণ শৈলী, খোলা মাঠ, দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা ও বাগান পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের নানা অজানা অধ্যায় ও ইতিহাস ও ত্রিপুরার কৃষ্টি -কালচারে সমৃদ্ধ এই জাদুঘর দেশের বাইরে আমার দেখা প্রথম জাদুঘর হিসেবে হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
বিকেলটা উজ্জয়ন্ত প্যালেসে কাটিয়ে সন্ধ্যাটা শহর ঘুরে দেখার জন্য বেড়িয়ে পড়লাম।
শকুন্তলা রোড, পোস্ট অফিস চোমুনীতে রয়েছে V-Mart, Bazar Kolkata, Reliance Smart Bazar, Adidas সহ নানা ব্র্যান্ডের আউটলেট। গোল বাজার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাইকারি বাজার।
অন্যতম রিটেইল শপিং সেন্টার - SMART Bazar
উল্লেখযোগ্য শপিংমল ঘুরে দেখা ও কেনাকাটা শেষে হোটেলে ফিরতেই রাজ্যের ঘুম এসে চোখে ভীড় করলো, ডিনার শেষ করেই তাই চোখ ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল।
পরদিন ভোর ৬ টায় হোটেল চেক আউট করে, সকাল ৭ টায় ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাড়ালাম।
সকাল বেলা যাত্রীদের ভীড় খুব একটা নাই বাংলাদেশ সময় সকাল ৮ টায় আখাউড়া ইমিগ্রেশন থেকে এ্যারাইবাল সীল নিয়ে অটোতে চেপে বসলাম আখাউড়া স্টেশনের উদ্দেশে৷
১০ টার ট্রেনে চেপে বেলা পৌঁনে ১ টায় বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পৌঁছে যাই।
বিঃ দ্রঃ আগরতলায় একাধিক চৌরাস্তা বেষ্টিত শহর , স্থানীয়রা একে চৌমুনী বলে অভিহিত করে ।