Abdul Kahar's Travelogue

Abdul Kahar's Travelogue Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Abdul Kahar's Travelogue, Tourist Information Center, Dhanmondi, Dhaka.

দারুসসালাম মার্কাজে ইশাআতে ইসলাম কমপ্লেক্স’ মসজিদ এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখে আমার মতো মন জুড়িয়ে যাবে নামাজ পড়তে আসা যেক...
11/04/2025

দারুসসালাম মার্কাজে ইশাআতে ইসলাম কমপ্লেক্স’ মসজিদ এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখে আমার মতো মন জুড়িয়ে যাবে নামাজ পড়তে আসা যেকোনো মুসল্লিদের। ১৯৬২ সালে দারুসসালামে খরিদ করা এই জমিতে ফুরফুরা দরবার শরীফের মরহুম পীর হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহমতুল্লাহে আলাইহি মসজিদের মূল ভবনটি তাজমহলের নকশার অনুকরনে তৈরি করেন। এটি ঢাকার ২/২, দারুসসালাম, মিরপুর রোড, কল্যাণপুর- টেকনিক্যাল এর মধ্যখানে অবস্থিত।

চার কোনে চারটি সুন্দর মিনার আর তার মাঝে অপূর্ব বিশাল গম্বুজ মসজিদের সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মুসলিম স্থাপত্যের এ এক অনন্য নিদর্শন। বিশাল এই ইসলামিক কেন্দ্রের মূল ভবনের আয়তন ৪৪,৪৬০ বর্গফুট, যা ২২৮ টি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে। কমপ্লেক্সটির পুরো অংশ মাদ্রাসার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। মার্কাজ প্রাঙ্গনের ঠিক মাঝখানে মসজিদের অবস্থান। যেখানে একসাথে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চার হাজার লোকের খুৎবা ও ওয়াজ শোনার ব্যবস্থা রয়েছে।

মসজিদটির স্থাপত্যশৈলীর সবথেকে আকর্ষণীয় দিক হলো ভবনের মাঝখানে তিন তলা দালানের উপর অপূর্ব নকশায় প্রধান গম্বুজটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধান গম্বুজের চারপাশে চারটি ছোট ছোট গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজের গায়ে শ্বেতপাথর লাগানো হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন কারুকাজে চোখ জুড়ানো ছাদ, পিলার ও খিলানগুলো মসজিদের শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে।

পুরো মসজিদের মেঝে সুদৃশ্য মোজাইক ও টাইলসে মোড়ানো। আলোকসজ্জা ও ঝাড়বাতির ব্যবহার সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা ব্যবহার করেছে। মসজিদের গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই প্রাচীন আমলের বিশাল বড় ঘড়ি সবার নজর কাড়ে। এক কথায় মসজিদটি পরিপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ দ্বীন প্রচার কেন্দ্র। ইসলামধর্ম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে এই কমপ্লেক্স কেন্দ্র সর্ববিধ কাজ করে যাচ্ছে।

এই মসজিদ ঘরকে কমপ্লেক্স বলা হয় এই কারনে যে অনেকগুলো দ্বীনি কার্যক্রম এই প্রকল্পের অধীন। যেমন দরসে নিজামী মাদ্রাসা, মহিলা মাদ্রাসা, মক্তব, পবিত্র কুরআন কারীম হেফজখানা, এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ড, মেহমান ও মুসাফিরখানা, ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র, পাঠাগার এবং ইসালে সওয়াব ও মাসিক তালিমে মাহফিল ইত্যাদি।

মসজিদটির সৌন্দর্য ও নির্মল পরিবেশ মহান আল্লাহর সাথে একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন ছাত্র শিক্ষকসহ অন্যান্য মুসল্লিরা একই কাতারে এক আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হাজির হন অসাধারণ নির্মল শৈলির এই মসজিদটিতে। চাইলে আপনারাও আসতে পারেন আশা করি ভালো লাগবে।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

দুই বাস পর্যটক নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ঘুরে এলাম নীলশয্যার স্বর্গরাজ্য বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ  #সেন্ট_মার্টিন থে...
08/01/2025

দুই বাস পর্যটক নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ঘুরে এলাম নীলশয্যার স্বর্গরাজ্য বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ #সেন্ট_মার্টিন থেকে। এবার অপরূপ সৌন্দর্যের ঘেরা দ্বীপটিকে রক্ষার্থে অন্তবর্তীকালীন সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে এবং পাল্টে গেছে যাওয়ার রুট।

আমরা বৃহস্পতিবার সায়েদাবাদ থেকে সন্ধ্যা আটটায় সেন্টমার্টিন ক্লাসিক বাসে করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। পথিমধ্যে আমরা খন্দকার ফুড গ্যালারি রেস্টুরেন্টে বিশ মিনিটের যাত্রা বিরতি দেই। আমরা ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে কক্সবাজার নুনিয়াছড়া ঘাটে পৌঁছাই। ফজরের নামাজ আদায় করে গেস্টদের জন্যে কক্সবাজারে ইনসানিয়াত হোটেল থেকে সকালের নাস্তা ডিম-খিচুড়ি প্যাকেটিং করে গেস্টদের জন্যে নিয়ে আসি। এরপর সবার মাঝে খাবার বিতরণ করে সবাইকে একসাথে করে শিপে উঠি।

আমরা ঐ সপ্তাহে বারো আউলিয়ার টিকেট না পাওয়ায় কেয়ারি সিন্দাবাদ শিপে যাই। এটি তুলনামূলক ছোট ও কিছুটা ধীরগতির হওয়ায় এবং জোয়ার ভাটার সমস্যার কারণে দ্বীপে পৌঁছাতে সন্ধ্যা বেজে যায়। যার ফলে পর্যটকরা সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্য মনভরে উপভোগ করলেও এতো দীর্ঘ সময় শিপে থাকায় শেষদিকে এসে বিরক্ত হয়ে যায়।

আমরা দ্বীপে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সবাইকে নিয়ে ঘাট থেকে সোজা সেন্টমার্টিন ক্লাসিক রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খাওয়াই। এরপর সুগন্ধা, সী-পয়েন্ট, সী-ক্রাউন ও সী-প্রবাল এই রিসোর্ট গুলোতে আমাদের ৮০ জন গেস্টদের থাকার ব্যবস্থা করি। রুমে ফ্রেশ হয়ে বীচে গিয়ে রিলাক্স করে রাত এগারোটার দিকে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করি। কিছু গেস্টদের সাথে আমারও খাবার পার্সেল নিয়ে বিচের পাশে গিয়ে খাওয়া দাওয়া, আড্ডা ও গানের আসর চলে গভীর রাত অবধি।

শনিবার ভোর পাঁচটায় উঠে অটোভাড়া করে গেস্টরা ছেঁড়াদ্বীপে যায়। ছেঁড়া দ্বীপ পৌঁছে ফটোসেশন আর ঘুরাঘুরি নয়টার ভিতরে শেষ করে এসে সবাইকে নিয়ে সকালের নাস্তা করি। এরপর বেলা এগোরাটার দিকে বীচে তরুণদের নিয়ে ফুটবল খেলার আয়োজন করি। ঘন্টা দেড় খেলাধুলার পর সমুদ্রে লাফ-ঝাপ করে ঘন্টাখানিক গোসল সারি। সবার গোসল দেখে বুঝবার উপায় নেই যে এখন শীতকাল। তাছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও সমুদ্রের পানি তেমন ঠান্ডা না বললেই চলে।

গোসল শেষে ফ্রেশ হয়ে দুটোর ভিতরে সবাইকে নিয়ে লাঞ্চ সেরে নেই। তারপর কিছুখন রেস্ট নিয়ে কয়েক জনকে নিয়ে বিকেলে বিচের পাড়ে সাইকিলিং করি৷ এটি ভীষণ রিফ্রেশিং ও উপভোগ্য ছিলো। সন্ধ্যার পরে জেঠি ঘাটে আড্ডা দেই। রাতের খাবার তাড়াতাড়ি সেরে আমি রেস্ট নেই আর গেস্টরা যে যার মতো ঘুরাঘুরি করে।

পরদিন ভোরে যারা প্রথমদিন ছেঁড়াদ্বীপ যেতে পারে নি তাঁদেরকে নিয়ে আমিও ছেঁড়াদ্বীপে যাই। বাংলাদেশের শেষ বিন্দুতে গিয়ে সূর্যোদয় আর নীলাভ সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করি। ঘন্টা দুই ঘুরে গেস্টদের নিয়ে চলে আসি নাস্তা খেতে। সকালের নাস্তা শেষে যে যার মতো ঘুরাঘুরি এবং কেনাকাটা করে। আমি রিসোর্ট ও হোটেলের বিলগুলো পরিশোধে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।

দুপুরের লাঞ্চ সেরে তিনটার দিকে আমরা আমাদের শিপে উঠি। অসম্ভব সুন্দর দুটো দিন মায়াবী দ্বীপে কাটিয়ে রওনা দেই ফেরার পথে৷ আর পড়ন্ত বিকেলে সমুদ্রের বুকে সূর্যাস্তের অপরূপ মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করি। রাতে শীপে বসে গেস্টদের নিয়ে আড্ডা ও গানে মেতে উঠি। বিশেষ করে ছেলে-মেয়ে দুই গ্রুপ হয়ে গানের কলি খেলার মুহূর্ত বেশ মজার ছিলো।

আমাদের কক্সবাজার ঘাটে পৌঁছাতে প্রায় এগারোটা বেজে যায়। ঘাটেই আমাদের বাস রাখা ছিলো। আমরা কক্সবাজার আর ব্রেক না দিয়ে সোজা ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেই। কারণ কক্সবাজার খাবারের ব্রেক দিলে সবাই খাওয়ার পাশাপাশি টুকটাক কেনাকাটা শুরু করে দেয় যার ফলে লেট হওয়ায় ঢাকা পৌঁছাতেও দেরী হয়। অপরদিকে সবাই ক্ষুধার্তও ছিলো।

তাই কক্সবাজার থেকে ঘন্টাখানিক পথ এগিয়ে রামু ভাইভাই হোটেলে ব্রেক দেই। এই হোটেলের হাসের মাংস এবং গরুর নেহারি খুবই সুস্বাদু। আমি গরুর নেহারি টেস্ট করে দেখি, সেই স্বাদ ছিলো! সবার খাওয়াদাওয়া শেষে আবারও যাত্রা শুরু করি, পথিমধ্যে শেষ রাতে কুমিল্লায় আরেকবার যাত্রা বিরতি দেই। আমাদের ঢাকা পৌঁছাতে প্রায় সকাল নয়টা বেজে যায়।

সবশেষ গেস্টদের বিদায় দিয়ে সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে আমিও ঘরে ফিরি। পর্যটকদের ঘুরানোর দায়িত্ব পালন এবং নিজেও সেন্টমার্টিন দ্বীপকে উপভোগ করা, সবমিলিয়ে পরীক্ষা শেষ করে বেশ ভালো একটা সময় কাটাই। পরীক্ষার কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দী থাকার পর সেন্টমার্টিন ট্যুরের মাধ্যমে মানসিক প্রফুল্লতা ও নবশক্তিবিধান পাই।

আমাদের ভ্রমণ প্রিয় পর্যটক গ্রুপ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের প্যাকেজটি ছিলো জনপ্রতি ৬,৫০০ টাকা। এই প্যাকেজের মধ্যে ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন আসা-যাওয়া, শিপ টিকেট, নয় বেলা খাবার এবং হোটেলে দুই রাত তিনদিন থাকা এসব ইনক্লুড ছিলো।

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের পর সরকার কর্তৃক পর্যটকদের জন্যে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বন্ধ করা হবে। তাই এই বছর যাঁরা যেতে চান তাঁদেরকে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই যেতে হবে। আর যাওয়ার ক্ষেত্রে যেই তিনটি বিষয় না জানলেই নয়,

প্রথমত, পরিবর্তিত রুট প্লান অনুযায়ী এবার আর টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন সরাসরি যাওয়ার সুযোগ থাকছে না। যেতে হবে কক্সবাজার নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে। শীপ আটটা থেকে নয়টার ভিতরে ছেড়ে যায়। শীপে করে দ্বীপে পৌঁছাতে প্রায় পাঁচ-ছয় ঘন্টা সময় লাগে। তবে মেরিন ড্রাইভের পাশ দিয়ে যাওয়ায় আপনারা দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারবেন।

দ্বিতীয়ত, এবার আর হুট করে যাওয়ার সুযোগ থাকছে না দ্বীপটিতে। আপনাকে আগে থেকেই সংগ্রহ করতে হবে ট্রাভেল পাস। অবশ্য আমরাসহ বিভিন্ন ট্যুর এজেন্সি জাহাজের টিকিটের সঙ্গে দিয়ে দেই এই পাস। তাই পাস সংগ্রহে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। আমরা আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখি জাহাজের টিকিট ও ট্রাভেল পাস।

তৃতীয়ত, ছেঁড়াদ্বীপ রক্ষার্থে পর্যটকদের জন্যে এই স্থান ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এখন আপনি সেন্টমার্টিন যাবেন আর ছেঁড়াদ্বীপ দেখবেন না তা কি হয়! এক্ষেত্রে আপনাকে ভোর সাড়ে চারটা-পাঁচটার দিকে উঠে ১২০০-১৪০০ টাকায় অটো গাড়ি ভাড়া করে যেতে হবে ছেঁড়াদ্বীপে। সকাল আটটা নয়টার দিকে বিজেবি কোস্টগার্ড আসলে আর কাউকে প্রবেশ করতে দিবে না। আর যারা ইতোমধ্যে প্রবেশ করছে তাঁদেরকেও বের হতে তাড়া দিবে। তাই খুব ভোরে গেলে আরামচে ঘন্টা দুই-তিন ছেঁড়াদ্বীপ ভ্রমণ করতে পারবেন।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

বিশাল অরণ্যে বের হয়েছি প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভের আশায়, হঠাৎ ক্ষুধার্থ কয়েকটি হিংস্র বাঘ ও সিংহ আমাদের চারপাশে ঘুরঘুর করছে...
11/12/2024

বিশাল অরণ্যে বের হয়েছি প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভের আশায়, হঠাৎ ক্ষুধার্থ কয়েকটি হিংস্র বাঘ ও সিংহ আমাদের চারপাশে ঘুরঘুর করছে। যেকোন সময়ে
আমাদের উপর আছড়ে পড়তে পারে শিকারের আশায়, কিন্তু না কাঁচের দেয়াল থাকার কারণে ২ ইঞ্চির জন্য আমাদেরকে গ্রাস করতে পারল না।

এমন সব রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে থাইল্যান্ডের সাফারি ওয়ার্ল্ডের সাথে সামঞ্জস্য বাংলাদেশের গাজীপুরে নির্মিত এশিয়ার সর্ববৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ঘুরতে যাই। এটি প্রায় ৩,৬৯০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক ছোট ছোট টিলা ও শালবন সমৃদ্ধ বন্য প্রাণীর একপ্রকার অভয়ারণ্য।

আমরা এই সাফারি পার্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে সকালে রওনা দিলেও জ্যামের কারণে গাজীপুর পৌঁছাতেই দুপুর বেজে যায়। এরপর গাজীপুর থেকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বাঘের বাজার যাই। সেখান থেকে সিএনজিতে করে ৩ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এগোনোর পরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রবেশ দ্বার দেখতে পাই।

পঞ্চাশ টাকা প্রবেশ টিকেট মূল্য দিয়ে ভিতরে যাই। এরপর চারপাশটা মোটামুটি চক্কর দিয়ে নিরিবিলি বসার মতো একটা যায়গা খুঁজে বের করি। তারপর সেখানে বসে বাসা থেকে রান্না করে নেওয়া খাবার
দিয়ে আমরা দুজনে লাঞ্চ সেরে নেই। পেটের খুদা মিটিয়ে সর্বপ্রথম যাই ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে। এখানে কাঁচের জারে ও ঝুলানো বিভিন্ন নিষ্প্রাণ পশু-পাখি দেখতে পাই। পাশাপাশি প্রত্যেক প্রাণীর সাথে তাঁদের বিবরণ লেখা ছিলো, তা পড়ে ঐসকল প্রাণী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি।

এরপর সাফারি পার্কের প্রধান আকর্ষণ কোর সাফারিতে যাই। পঞ্চাশ টাকা প্রবেশ মূল্য আর মিনিবাসে ঘুরে দেখতে জনপ্রতি ১৫০ টাকা দিতে হয়। চারপাশে উন্মুক্ত বাঘ, সিংহ, জিরাফ, জেব্রা, বন্য হরিণ ও অন্যান্য প্রাণী হেঁটে বেড়াচ্ছে আর তার মাঝ দিয়ে আমাদের মিনিবাসে এগিয়ে চলছে। কখনও বাসের সন্নিকটে বাঘ দেখি ও সিংহের গর্জন শুনি আবার কখনও হরিণ ও বানরের ছুটাছুটি দেখি। এটিই সাফারি পার্কের প্রধান বিশেষত্ব যে, চিড়িয়াখানায় বণ্য প্রাণীরা থাকে বন্দি ও মানুষ থাকে খোলা অবস্থায়। কিন্তু সাফারি পার্কে মানুষ থাকে বন্দি আর বন্যপ্রাণীরা থাকে খোলা অবস্থায়।

কোর সাফারি থেকে অন্যরকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হয়ে যাই সাফারি কিংডমে। সাফারি কিংডমের শুরুতেই চোখে পড়ে ম্যাকাও ল্যান্ড, এখানে আফ্রিকা থেকে আনা প্রায় ৩৪ প্রজাতির বিভিন্ন রকম পাখি রয়েছে। ম্যাকাও ল্যান্ডের পাশে রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ সমৃদ্ধ মেরিন অ্যাকুরিয়াম। যার মধ্যে টাইগার ফিস, ক্রোকোডিল ফিস, অস্কার, ব্ল্যাক গোস এবং ২০ সেকেন্ড অন্তর অন্তর রং পরিবর্তন কারী চিকলেট মাছ উল্লেখযোগ্য। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের আকর্ষন বাড়িয়েছে বিশাল আকারের টাইগার রেস্তোরাঁ ও সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরাঁ। এখানে খাবার টেবিলে বসেই কাচের অন্য পাশে সিংহ কিংবা বাঘের ঘুরোঘুড়ি দেখা যায়।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এশিয়া বিলুপ্তপ্রায় বন্য প্রাণীর মধ্যে আছে ক্ষুদ্রকায় ঘোড়া, আল পাকা, ওয়ালাবি, মান্ডারিং ডাক, ক্রাউন ক্রেইন ইত্যাদি। এছাড়াও সাফারি কিংডমে তিনটি পাখিশালা, প্রজাপতি সাফারি, অর্কিড হাউজ, জিরাফ ফিডিং স্পট, শকুন ও পেঁচা কর্নার, ফ্যান্সি কার্প গার্ডেন, এগ ওয়ার্ল্ড, বোটিং, লেইক জোন, আইল্যান্ড ও প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র দেখতে পাই।

সাফারি কিংডম ঘুরে আসরের সালাত আদায় করে বিকেল পাঁচটায় সাফারি পার্ক বন্ধের আগ অবধি বাকি অংশ ঘুরি। বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের যতটা সম্ভব তাড়াহুড়ো করে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রাণীর সাথে সাক্ষাৎ করে আসি। আসলে এতো বিশাল এড়িয়ার সাফারি পার্ক পুরোটা ঘুরে দেখতে পূর্ণ একদিন দরকার। তাও অর্ধদিনে আলহামদুলিল্লাহ পার্কের মোটামুটি সবগুলো অংশেই ঘুরে দেখি।

সবমিলিয়ে সাফারি পার্ক ভ্রমণ করে লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন প্রাণীর সাথে পরিচয় এবং সুন্দর কিছু সময় পার করি। সময় নিয়ে চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন, এই সুন্দর ও উপভোগ্য জায়গাটি থেকে। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে গেলে যায়গাটি আরও বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠবে।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লিলাভূমি আমাদের দেশ বাংলাদেশ। যার মধ্যে অন্যতম হলো ‘সুন্দরবন'। তবে আমরা অধিকাংশই সুন্দরবনে ...
28/11/2024

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লিলাভূমি আমাদের দেশ বাংলাদেশ। যার মধ্যে অন্যতম হলো ‘সুন্দরবন'। তবে আমরা অধিকাংশই সুন্দরবনে ঘোরার জন্যে খুলনা জেলার হিরন পয়েন্ট ও করমজল এইসব পর্যটন স্পটকেই জানি। কিন্তু বাংলাদেশের দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরের তীর ঘিরে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটের পাশাপাশি বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা পর্যন্ত সুন্দরবন বিস্তৃত এবং অনেকগুলো পর্যটন স্পট বা ইকোপার্ক রয়েছে।

তেমনি একটি যায়গায় আমরা সুন্দরবনের অনুভূতি নিতে মূল বনের খুব কাছের একটি বন “হরিণবাড়িয়া” ঘুরতে যাই। এই বনভূমি বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এর কোল ঘেঁষে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার হরিণঘাটা ইউনিয়নে অবস্থিত।

আমরা দুপুরের পূর্বে পাথরঘাটা গিয়ে পৌঁছাই। জুম্মার নামাজ পড়ে লাঞ্চ সেরে পাথরঘাটা উপজেলা শহর থেকে অটোরিকশায় করে ৬ কিলোমিটার দূরে হরিণঘাটা যাই। জনপ্রতি ভাড়া নেয় ৪০/৫০ টাকা করে।হরিণঘাটা বাংলাদেশের সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটি হওয়ায় ১১ টাকায় টিকেট কিনে ভিতরে প্রবেশ করি।

বনের ভিতরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ে স্বাগতম জানানো হরিণবাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্রের ফলক। এরপর একটি লম্বা ব্রিজ পার হয়ে বনের ভিতর চলে যাই। এই ব্রিজটি মাটি থেকে তিন চারফুট উপরে। লম্বা সরু ব্রিজ ধরে মিনিট পাঁচে এগোতেই দেখি ইট, পাথর, কাঠ আর তারের সমন্বয়ে একটি বড় ব্রিজ যার নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট খাল যেটি সমুদ্রের সাথে মিশেছে।

ব্রিজের দুপাশে দেখি ছোট-বড় ইঞ্জিন চালিত নৌকা যা দিয়ে বন ঘুরে দেখতে দেখতে সমুদ্রের পাড়ে যাওয়া যায়। নৌকা বা বোট চালকের সাথে ভাড়া নিয়ে কথা বলে বুঝলাম অনেকজন ছাড়া আমরা দুজনে রিজার্ভ করলে অনেক খরচ পড়বে। তাই আরও মানুষ আসার অপেক্ষা করি।

ততক্ষনে আমরা বড় ব্রিজ থেকে নেমে সোজাপথে ছোট ব্রিজে করে বনের ভিতরে কিছুদূর যাই। এই পায়ে হাঁটার কাঠের ব্রিজ ৯৫০ মিটার দীর্ঘ যা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই ব্রিজের পথ অল্প একটু ভালো হলেও বাকিটা পুরো খারাপ হওয়ায় এবং সময় স্বল্পতায় আর বেশিদূর আগালাম না।

পিছনে ফিরে এসে ব্রিজের পাশ দিয়ে অন্য আরেকটি পথে যাই। এটি ইটের তৈরি রাস্তা যা বনের ভিতর চলে গেছে। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা সুউচ্চ “ওয়ার্চ টাওয়ার” চোখে পড়ে। সেখান থেকে বনের পুরো এরিয়াটা দেখতে ও উপভোগ করতে পারা যায় প্রকৃতির সৌন্দর্য্য। কিন্তু আমরা এ পথে বেশিক্ষণ সময় নষ্ট করি নি কারণ একসাথে সবার সাথে বোটে যেতে না পারলে তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হবে।

এরপর একঝাঁক দর্শনার্থীদের সাথে বোটে করে জানা-অজানা গাছ গাছালি দেখতে দেখতে পাখির কলকাকলিতে প্রকৃতির নৈস্বর্গিকতার ভিতর দিয়ে চলে যাই বলেশ্বর নদী ও বিষখালি নদীর মোহনায়
লালদিয়া বনেরপাশে। সেখানে আধঘন্টা বোট থামালে বনের ভিতরে ঘোরাঘুরি করি। এরপর বোটে করে একটু দূরে তিন নদীর একদম মোহনায় বঙ্গোপসাগরের পাড়ে লালদিয়া সমুদ্রসৈকতে যাই।

এক পাশে সমুদ্র অন্য পাশে বন এরই মাঝে বালুচরে হাঁটাহাঁটি করি,সৈকতে পা ভিজাই। শেষ বিকেলে লাল টকটকে সূর্যাস্ত অবলোকন করি। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হাতছানিতে একরাশ মুগ্ধতায় চমৎকার এক বিকেল কাটিয়ে সন্ধ্যার পর বোটে করে ঘাটে ফিরি।

সবশেষে বলবো, এমন সুন্দর স্থানে না আসলে আপনি বুঝতে পারবেন না হরিণবাড়িয়া বনের ও লালদিয়া সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্য ও গভীরতা আর ভাগ্য ভাল থাকলে হরিণ এর সাথেও দেখা হয়ে যেতে পারে। তাই যারা নিরিবিলি পরিবেশে প্রকৃতিকে অনুভব করতে চান এবং ইউনিক দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখার ইচ্ছে এমন ভ্রমণপিপাসুদের জন্য হড়িনবাড়িয়া বন ও লালদিয়া সমুদ্র সৈকত আদর্শ স্থান।

রিভিউ লেখক: Abdul Kahhar ( Siam )

নির্মাণশোভায় চিত্তাকর্ষক  #সাউথ_টাউন_মসজিদ আমায় সর্বদাই নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর স্থাপনার নির্মাণশৈলী আকর্ষিত করে। আর সেই স...
08/11/2024

নির্মাণশোভায় চিত্তাকর্ষক #সাউথ_টাউন_মসজিদ

আমায় সর্বদাই নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর স্থাপনার নির্মাণশৈলী আকর্ষিত করে। আর সেই স্থাপনা যদি হয় মসজিদ তাহলে তো কথাই নেই। ঢাকা থেকে সাইকেল চালিয়ে এমনই একটি মসজিদ দেখতে গিয়েছিলাম। মসজিদটি কেরানীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস ওয়ে'র উত্তর পাশে সাউথ টাউন আবাসিক প্রকল্পে অবস্থিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের স্থাপত্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এই মসজিদটির নান্দনিক গঠন আর অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী আমার মতো মুগ্ধ করবে যে কাউকে। মসজিদের চারপাশে কাঁশফুলে ঘেরা খোলামেলা জায়গা আর গ্রামীন প্রকৃতির সুনসান নীরব পরিবেশে নিমিষেই আমার মনকে প্রফুল্ল ও প্রশান্ত করেছিলো।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের কর্ণধার মোস্তফা কামাল মঈনুদ্দিনের উদ্যোগে আধা বিঘা জমিতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ২ বছর সময় লেগেছে মসজিদটি নির্মাণ করতে। এতে প্রধান ফটক আছে ৩টি। দুই পাশে আছে আরও ২টি দরজা। আর চারপাশে প্রচুর জানালা তৈরি করে পর্যাপ্ত আলো প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমরা নান্দনিক এই মসজিদে অল্প কয়েকজন মুসল্লি মিলে যোহরের নামাজ আদায় করি।চারপাশের আবাসন প্রকল্পটিতে এখনো সেভাবে জনবসতি গড়ে না ওঠায় মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা অনেক কম হলেও একতলা এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৬০০ লোক জামাতে নামাজ পড়া যায়।

নামাজের পর বিশ্রাম নিতে একটু শুয়ে পড়ি আর তখন দু’স্তরের জানালার ফাঁক দিয়ে গলে আসা প্রকৃতির আলো ও হিমশীতল বাতাসে গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হয়ে যাই। পরে মুয়াজ্জিনের ডাকে উঠে পড়ি। স্থপতির নন্দনভাবনার শৈলী ফুটে আছে গম্বুজের ভেতরের অংশেও। সবমিলিয়ে ভেতরের চমৎকার এক পরিবেশে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যায়।

➡️ যেভাবে যাবেন

ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে করে বাবু বাজার ব্রিজ পার হয়ে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে উঠতে হবে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস ওয়ে'তে। রাজেন্দ্রপুর নতুন কারাগারের একটু সামনেই হাতের ডানে সাউথ টাউন আবাসিক প্রকল্প। প্রকল্পের প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে সোজা হেটে হাতের ডানে মোড় নিতেই দেখা মিলবে সাউথ টাউন জামে মসজিদের।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

অবকাশ যাপন,বায়ু পরিবর্তন কিংবা নিছক চিত্তবিনোদনের নিমিত্তে হয় বন্ধুরা মিলিয়া না হয় পরিবারের সহিত কিংবা প্রিয়তমাকে লইয়া ক...
29/10/2024

অবকাশ যাপন,বায়ু পরিবর্তন কিংবা নিছক চিত্তবিনোদনের নিমিত্তে হয় বন্ধুরা মিলিয়া না হয় পরিবারের সহিত কিংবা প্রিয়তমাকে লইয়া কোথাও যাইবার কথা উঠিলেই মনে পরিয়া যায় সমুদ্রের কথা।কিন্তু এমন পর্যটন স্পটে একাকী ঘোরার যে কী অদ্ভুত রোমাঞ্চকর বোরিং অনুভূতি তাহা বিশ সনে করোনার ভিতরে কক্সবাজার একলা যাইয়া টের পাইয়াছিলাম।

একদিকে সৈকতের বীচে বন্ধুরা মিলিয়া মৌজ মাস্তি করিতেছে, অন্যদিকে কপোত-কপোতীরা সমুদ্রের প্রকৃতির মাঝে প্রেমময় অনুভবে ডুবিয়া আছে,
আর এইদিকে মোর নিজের একখানা ছবি তুলিয়া দেয়ার জন্যেও কেউ ছিলো না।

তবুও দমে যাই নাই, প্রকৃতির সহিত কিছুক্ষণ ভাববিনিময় করিয়া পোচ মারিয়া কয়েকখানা সেলফি তুলিলাম। তা না হইলে লোকজনকে জানাইবো কি করিয়া যে আমিও হক্সেসবাজার আসিয়াছি। বানান ভুল নহে, এই দিকের আঞ্চলিক ভাষায় হক্সেসবাজারই কহে।

এই প্রথম কক্সবাজার আসিলাম আবার কবে আসিবো তাহারও কোন নিশ্চয়তা নেই। কারণ মোরা যে মধ্যবিত্ত, চাইলেই কি বিলাসিতা করিয়া একযায়গায় বারবার আসিবার পারি? এখনও যে দেশের কত কি দেখিবার বাকি রহিয়াছে।

কিন্তু নসিব কাহাকে বলে, তিনদিন রইলাম সে তিনদিনই টানা বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে হারাইলাম কক্সবাজারের অপরূপ সূর্যোদয়, পরন্ত বিকেল, গোধূলির লগ্ন, শেষ বেলার অপূর্ব রক্তিম অন্তরিক্ষ।
প্রথমদিনে কলাতলী বীচে ইচ্ছে মতন ঘন্টা তিনেক ডুবাইলাম। আর বিকেলে পরিপাটি হয়ে সুগন্ধায় গিয়া কাকভেজা হইলাম।
পরদিনে কক্সবাজার হইতে ৩৭ কিঃমিঃ দূরে ইনানী বীচে যাই। ভাবছিলাম ইনানীর প্রবাল পাথড়ের উপর বসিয়া একটুখানি সেন্টমার্টিনের ফেলেবার নিমু। তা আর হলো কই,একদিকে বৃষ্টির কারনে বীচে সময় কাটাইতে ব্যর্থ হইলাম অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে পাথরগুলাও ঢাকা পইড়া গেছিলো। কি আর করিবার মনঃক্ষুণ্ন হইয়া অতৃপ্তি নিয়াই হোটেল রুমে
ফিরলাম।
অন্তিম দিনে কক্সবাজার থেইকা ১২ কি.মিঃ দূরে হিমছড়িতে গেলাম ঝর্ণা ও সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় উইঠা সুবিস্তৃত সমুদ্র সৈকত দেখিবো বইলা। কিন্তু এখানেও স্যাঁকা খাইলাম। এইবার আর বৃষ্টি নয়, ভিতরেই ঢুকিতে পারি নাই করোনার লকডাউনের কারনে প্রবেশপথ বন্ধ থাকায়।

আফসোস নিয়ে ফিরবো এমন সময়ে একজন আসিয়া কহিলো, আমার সহিত চলেন অন্য পথ দিয়া ভিতরে ঘুরাইয়া দেখাইবো নে। সন্ধ্যে ঘনাইয়া আসায় তাহাকে আমি সায় দিলাম না। কিন্তু তবুও সে কহিলো, তাইলে আম্নের মোবাইলটা দেন ভিতর থাইকা ছবি তুলিয়া নিয়া আসি। তখন দূর হইতে কয়জন ইশারায় বুঝাইলো লোকটা মতলব মন্দ। আর আমিও বুঝিতে পারিয়া তাড়িঘড়ি করে তাহার নিকট হইতে সরিয়া পড়িলাম।
সর্বোপরি কইবো, এককী যাইবার মন্দ দিকগুলাই মজা করিয়া কইলেও এর বেশকিছু ভালা দিকও রহিয়াছে। যেমন ধরেন আপনি সহজেই তাৎক্ষণিক যেকোন সিদ্ধান্ত লইয়া যেদিকে ইচ্ছে যাইতে, যা মনে চায় তা খাইতে,কিনিতে পারিবেন। আবার হৈ-হুল্লোড় না করিয়া নিরবে নির্ভৃতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করিতে ও তাহার সহিত মিশিয়া যাইয়া ভাববিনিময় করিতে পারিবেন। একাকী ঘোরাঘুরি করিয়া গভীরচিন্তায় নিমগ্ন হইতে, বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা লাভ করিতে, প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভবঘুরে হয়ে উঠিবার ইহা এক অনন্য উপায়।

লেখক: Abdul Kahhar ( Siam)

চোখ জুড়ানো সবুজ জলাবন, নীল আকাশ, ছোট বড় ভাসমান দ্বীপ গ্রাম ও পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের মধ্য দিয়ে অথৈ জলরাশির শান্ত ...
16/10/2024

চোখ জুড়ানো সবুজ জলাবন, নীল আকাশ, ছোট বড় ভাসমান দ্বীপ গ্রাম ও পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগের মধ্য দিয়ে অথৈ জলরাশির শান্ত হাওরে মৃদু গর্জন তুলে এগিয়ে চলছে আমাদের হাউজবোট।
আমরা গিয়েছিলাম ঢাকা থেকে ভ্রমণ প্রিয় পর্যটক গ্রুপের সাথে একদিনের ট্যুর প্যাকেজে। আমাদের বোটের যাত্রা শুরু হয়েছে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা থেকে। যাচ্ছি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে।

প্রায় চারঘন্টা যাত্রা শেষে আমরা পৌঁছাই আমাদের ভ্রমণের প্রথম স্পট #ওয়াচ_টাওয়ারে। এখানে রাতারগুলের মতো সোয়াম্প ফরেস্ট রয়েছে। বোট থামলে আমাদের নিতে আসে ছোট ছোট ডিঙি নৌকা।
নৌকায় চড়ে কোমড় সমান স্বচ্ছ পানিতে ঘোরাঘুরি করি। বলাই নদীর পাশ ঘেঁসা এই হিজল বনে নীল আকাশের নিচে দ্বিপ্রহরে নৌকায় বসে চা খাওয়ার মুহূর্ত ছিলো অন্যরকম তৃপ্তি ও প্রশান্তিদায়ক। এরপর ওয়াচ-টাওয়ারে উঠে হাওড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করি। সবশেষ স্বচ্ছ নীল পানিতে গোসল সেরে বোটে করে যাত্রা করি পরবর্তী গন্তব্য তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট গ্রামের উদ্দেশ্যে।

ঘন্টা দেড় চলার পরে আমরা একটার দিকে সুনামগঞ্জ টেকেরঘাটে গিয়ে পৌঁছাই। শুক্রবারের জুমার নামাজ আদায় করে ঘুরার জন্যে একটা অটো ভাড়া করি। প্রথমেই যাই টেকেরঘাটের কাছেই অবস্থিত
#নীলাদ্রি_লেকে। এই পর্যটন স্থানটি চুনাপাথরের পরিত্যাক্ত খনির লাইম স্টোন লেক। নীলাদ্রি লেকের প্রকৃত নাম শহীদ সিরাজ লেক। লেকের চমৎকার নীল পানি, ছোট বড় টিলা আর পাহাড়ের সমন্বয় নীলাদ্রি লেককে করেছে অপার্থিব সৌন্দর্য্যের অধিকারী। স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের জন্য নিলাদ্রি লেক দেখে অনেক পর্যটক একে বাংলার কাশ্মীর হিসাবে অভিহিত করেন।

নিলাদ্রী লেক থেকে অটোতে করে বর্ডারের বড় বড় পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতে ভাঙাচোরা পথ মিনিট চল্লিশে পেরিয়ে পৌঁছাই #শিমুল_বাগানে।
যাদুকাটা নদীর নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রামে অবস্থিত এই বাগানটি প্রায় ১০০ বিঘা জায়গা জুড়ে ৩ হাজার শিমুল গাছ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। জানা যায়, ২০০৩ সালের দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন এই বাগান শুরু করেন। ফেব্রুয়ারীরির দিকে বসন্তকালে শিমুল ফুলের রক্ত লাল পাপড়ি গুলোর এই সৌন্দর্য্য ফুটে উঠে। এই সময়টাতে শিমুল বাগান ফুলহীন হওয়ায় আসল সৌন্দর্য নেই। তাই এখানে আর সময়ক্ষেপণ না করে রওনা দেই পরবর্তী স্পট বারিক টিলার উদ্দেশ্যে।

#বারেক_টিলা সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত। টিলার উপর থেকে মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় দেখা যায়। বারেক টিলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে আসা যাদুকাটা নদী। বারেক টিলার উপর থেকে যাদুকাটা নদীর স্বচ্ছ পানি আর নীল আকাশের সঙ্গে সবুজ পাহাড়ের দিকে তাকালে নীলাভ চিত্রকল্পের যে নৈস্বর্গিক দৃশ্য চোখে পড়ে তার রেশ নাগরিক জীবনের ক্লান্তি নিমিষেই মুছে ফেলার জন্য যথেষ্ট।

পরিকল্পনায় থাকা স্পটগুলো ঘুরে চারটার দিকে টেকেরঘাট বোটে এসে দুপুরের লাঞ্চ সেরে রওনা দেই। যেতে যেতে পড়ন্ত বিকেলে রক্তিম সূর্যের আলোয় মৃদুমন্দ বাতাসে হাওরের সৌন্দর্য আরও বেশি মনোমুগ্ধকর ছিলো। সন্ধ্যা ঘনিয়ে যত অন্ধকার হচ্ছিলো চাঁদের আলো তত বেশি প্রস্ফুটিত হচ্ছিলো। জোস্না রাতে বোটে করে হাওড়ের বুকে ভাসতে ভাসতে সবাই মিলে আড্ডা গানে মুখোরিত সময়টা ভুলবার নয়। এভাবে সময় পার করে যখন ঘাটে পৌঁছাই তখন রাত বাজে এগারোটা।

হাওড় ভ্রমণের অজস্র সুন্দর মুহূর্তগুলোকে চোখে বন্দী করে বাসে করে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্য। ভ্রমণের দিনগুলো সবসময়ই যেন দীর্ঘ আর স্মরণীয় স্মৃতিময় হয়ে থাকে। অবশ্য হাওড়ের পরিপূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বর্ষাকালে লাক্সারিয়াস বোটে করে দুদিনের জন্যে যাওয়া উচিত। আল্লাহ তওফীক দিলে একদিন প্রিয়তমাকে নিয়ে হাওড়ের ভরা যৌবনে হাওর বিলাসে আসবো।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

 #আমার_দেখা_সেরা_ঝর্ণা_গুলোর_ভ্রমণবৃত্তান্ত #হামহাম জলপ্রপাত, মৌলভীবাজার https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122...
28/09/2024

#আমার_দেখা_সেরা_ঝর্ণা_গুলোর_ভ্রমণবৃত্তান্ত

#হামহাম জলপ্রপাত, মৌলভীবাজার
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122179942844030935&id=61550928076215&mibextid=Nif5oz

#খৈয়াছড়া ঝর্ণা, মিরসরাই
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122184008300030935&id=61550928076215&mibextid=Nif5oz

#নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, মিরসরাই
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122174559902030935&id=61550928076215&mibextid=Nif5oz

#সহস্রধারা ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122195234894030935&id=61550928076215&mibextid=Nif5oz

 #ঢাকায়_কাবা_শরীফের_আদলে_৩শ_কোটি_টাকা__ব্যয়ে_নির্মিত_মসজিদ_আল_মোস্তফারাজধানীর ১০০ ফিটে মাদানি এভিনিউয়ে ইউনাইটেড সিটিতে চ...
27/09/2024

#ঢাকায়_কাবা_শরীফের_আদলে_৩শ_কোটি_টাকা__ব্যয়ে_নির্মিত_মসজিদ_আল_মোস্তফা

রাজধানীর ১০০ ফিটে মাদানি এভিনিউয়ে ইউনাইটেড সিটিতে চোখ ধাঁধানো এই মসজিদটি অবস্থিত। এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সামনের দিকে কালো রংয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পবিত্র কাবা শরীফের আকৃতি। দেয়ালে সোনালী রং দিয়ে লেখা হয়েছে আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম 'আল্লাহ' এবং তার প্রিয় বান্দা শেষ নবী 'হযরত মুহাম্মদ (স.)' এর নাম। যে সৌন্দর্য দূর থেকেই অবলোকন করা যায়। ভেতরে মেম্বরের দেয়ালের ডিজাইনও একই। মসজিদের উপরে সোনালী রংয়ের সুউচ্চ একটি গম্বুজ ও তার পাশে রয়েছে বিশাল উচ্চতার একটি মিনার। যা মসজিদের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ইউনাইটেড গ্রুপের আইকনিক এই প্রজেক্ট মসজিদ আল মুস্তাফায় বেশ কিছু ভিন্নতা দেখা গেছে। পাঁচতলা বিশিষ্ট এই মসজিদে আলাদা কোনো জানালা নেই। এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যা প্রাকৃতিক আলোয় ভরপুর। নামাজের সাড়িতে বেশ কয়েকটি বেঞ্চ রাখা হয়েছে। কেউ ক্লান্ত হলে বসতে পারেন। আবার কেউ হেলানও দিতে পারেন। দেশের অন্যকোনো মসজিদের প্রতিটি ফ্লোর থেকে ইমাম বা খতিব দেখা যায় না। কিন্তু মসজিদ আল মুস্তাফার প্রতিটি ফ্লোর থেকেই ইমাম বা খতিবকে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজের জায়গা। পুরুষ-নারী মিলিয়ে এক সাথে প্রায় ১১ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদ আল মুস্তাফায় রয়েছে দুটি চলন্ত সিড়ি। ১৬ লাখ টাকা ব্যায়ে লাগানো হয়েছে ঝাড় বাতি। যা এখনো চালু হয়নি। চীন থেকে আনা হয়েছে মেঝেতে বিছানোর কার্পেট। লাগানো হয়েছে উন্নত মানের সাউন্ড সিস্টেম। একটি সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনের মাধ্যমে শীতল রাখা হয় মসজিদকে। আকর্ষনীয় করে তৈরী হয়েছে মসজিদের ওজুখানা। যেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসিনও। যারা গাড়ি নিয়ে নামাজে আসেন তাদের জন্য রয়েছে স্বস্তি। কারণ মসজিদের নিচে বিশাল পার্কিংয়ে ১০৫ টি গাড়ি রাখা যায়।

মসজিদের চারপাশে চারটি আরবের খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। যার কোনোটিতে খেজুরও দেখা যায়। রয়েছে চোখ জুড়ানো পানির ফোয়ারা। দর্শনার্থীরা বিমোহিত হয় এর গঠন কাঠামো আর চারপাশের সবুজে ঘেরা প্রকৃতির ছোঁয়ায়। রাতে যখন মসজিদের সব বাতি জ্বলে ওঠে, তখন যেন তৈরী হয় বিমুগ্ধতায় ছোয় এক অপার্থিব পরিবেশ।

দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য্যের কারণে এটি এখন শুধুমাত্র মসজিদই নয়, পরিণত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। দেশের বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন দেখতে আসেন এই মসজিদের অপরুপ সৌন্দর্য্য। আর এই মসজিদে নামায আদায় করলে যে কারও মন প্রশান্তিতে মন ভরে উঠে।
মসজিদটি দেখতে হলে প্রথমে আসতে হবে রাজধানীর ভাটারা থানার সামনে। তারপর অটোরিক্সায় যেতে হবে একশফিট ইউনাইটড ইউনিভার্সিটির সামনে।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

স্নাত সিন্ধ প্রকৃতির পূর্ণ সজীবতায় বেশ কিছুদিন ধরেই ইচ্ছে ছিলো পাহাড়, ঝর্ণা বা হাওড়ের নিসর্গশোভায় হারিয়ে যাই কিন্তু বিভি...
25/09/2024

স্নাত সিন্ধ প্রকৃতির পূর্ণ সজীবতায় বেশ কিছুদিন ধরেই ইচ্ছে ছিলো পাহাড়, ঝর্ণা বা হাওড়ের নিসর্গশোভায় হারিয়ে যাই কিন্তু বিভিন্ন কারণে যাওয়া হচ্ছিলো না।
তাই রিফ্রেশমেন্টের জন্যে স্বল্প খরচে ঢাকার কাছাকাছি
আশুলিয়া জিরাবো মেইন রোড থেকে সামান্য দূরে #বর্ণচ্ছটা নামে এই রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলাম।

রিসোর্টের চারদিকে খোলা ফসলের মাঠ বর্ষায় যা হাওড়ের রূপ ধারণ করে, ভিতরে হরেক রকম গাছগাছালি আর তাতে কাঁচা পাকা ফল। মাঝে মাঝে দৃষ্টিনন্দন নকশায় তৈরি বসার জায়গা গুলো ফল গাছের নিচে ফুল গাছ দিয়ে ঘেরা। নিরিবিলি বসে স্নিগ্ধশীতল বাতাস এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে প্রিয়জনের সাথে গল্প করার একদম উপযুক্ত পরিবেশ।

আছে খেলার মাঠ,বিশাল এক প্রাচীন বট গাছ, পুকুর, বাচ্চাদের খেলার জায়গা, বড় ডাইনিং হল আর রং-বেরঙের ফুল গাছের সমারোহ। রিসোর্টের অন্যতম আকর্ষিক চিত্তবিনোদনের স্থান হলো স্বচ্ছ নীল পানির সুইমিং পুল। অবশ্য পুলে নামতে আপনাকে প্রবেশ মূল্যের সাথে গুণতে হবে জনপ্রতি পাঁচশত টাকা করে।আমার কাছে টাকার পরিমাণটা একটু বেশিই মনে হয়েছে।

ঢাকার নিকটে স্বল্প খরচে প্রকৃতির ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যে ছিমছাম গোছানো নিরিবিলি পরিবেশে পরিবার পরিজন ও প্রিয়তমাকে নিয়ে সময় কাটাতে যেতে পারেন Barnochata Resort এ।

✍️ Abdul Kahhar ( Siam )

 #হারানোর_বেদনা_ভাটিয়ারীর_সৌন্দর্য_পুষিয়ে_দিলো পাহাড়ের পাদদেশে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি আর চারদিকে সবুজ বৃক্ষের সমারোহ থেকে ...
18/09/2024

#হারানোর_বেদনা_ভাটিয়ারীর_সৌন্দর্য_পুষিয়ে_দিলো

পাহাড়ের পাদদেশে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি আর চারদিকে সবুজ বৃক্ষের সমারোহ থেকে সৃষ্ট রূপ বৈচিত্রে ভরপুর সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ভাটিয়ারী লেক।ভাটিয়ারী লেকটি দেখতে অনেকটা সাপের মতো,যা এঁকে বেঁকে বয়ে চলেছে।

চট্টগ্রাম নগরীর প্রবেশ মুখ অলংকার সিটি গেইট এলাকা থেকে থেকে একাকী বাসে চড়ে ভাটিয়ারী রয়না দেই। বাস থেকে নেমে ভাটিয়ারী যেতে লেগুনায় চড়ে বসলাম। তারপর ভাটিয়ারী লেকের সৌন্দর্য আর পাহাড়ের উঁচু নিচু,এঁকে বেকে চলা পথ চলতে চলতে একসময় পাহাড় ও লেক ফেলে সমতলে আসলে হেল্পারকে জিজ্ঞেস করি "ভাটিয়ারীর মূল স্পট কতদূর?"
হেল্পার বলে,"তা তো ফেলে আসছি" অথচ পূর্বে বলে রাখা সত্ত্বেও হেল্পার এর গাফিলতির কারণে অচেনা জায়গায় ঠিকানার হেরফের সত্যিই অস্বস্তিকর।

যাই হোক মাঝপথে না নেমে রাস্তার মাথায় বাজারে নামি। তারপর ওখান থেকে ভাটিয়ারী স্পটে যাবে এমন রিকশা ঠিক করে উঠলেও সে পাহাড়ি রাস্তা শুরুর ঢালে নামিয়ে বলে আর যাবে না। আবারও একই অবস্থা তবে এখন যে লেগুনায় আসি সেটি খালি যেতে দেখলে রিকশার ভাড়া দিয়ে তাতে উঠে মূল স্পটে চলে আসি।

ভাটিয়ারী লেকে নৌকায় চড়া এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা থাকলেও করোনাকালীন সময়ে দর্শনার্থী কম থাকায় এগুলো বন্ধ ছিলো। যার ফলে নৌকায় করে লেকে ঘোড়ার ইচ্ছে থাকলেও তা পূরণ হয় নি। ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়লো সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত গলফ কোর্স। কিন্তু রেফারেন্স ছাড়া অনুরোধ করা সত্ত্বেও ভিতরে গার্ডম্যান ঢুকতে দেয় নি।

সন্ধ্যে গড়াতেই সানসেট পয়েন্ট এ সূর্যাস্ত দেখার জন্য যাচ্ছিলাম, হঠাৎই পথিমধ্যে টের পেলাম সাথের মানিব্যাগটি নেই। এরপর আর কি যে যে যায়গায় হেঁটেছি ও বসেছি ঐ যায়গাগুলো হন্যে হয়ে খোঁজাখুঁজি করি। তারপর না পেয়ে মনে হলো মানিব্যাগ পড়লে হয়তো আসার পথে খালি লেগুনাতেই পড়েছে। কেননা রিকশায় ভাড়া দেওয়ার পর মানিব্যাগ আর বের করি নি। তো সোজা স্টানে গিয়ে সে লেগুনাটি পেয়ে ম্যানিব্যাগের কথা তুলতেই একদম অস্বীকার করে।

কি আর করার ভাটিয়ারীতে সন্ধ্যে নামার বুকে বিষন্ন মন খারাপ নিয়ে হেঁটে যতই পাহাড়, লেক এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করছিলাম ততই দেড়দুদিনের খরচ,আইডিকার্ড এর মানিব্যাগ হারোনার বেদনা কিছুটা হলেও প্রশমিত করে মনকে ভাল লাগার মূর্ছনায় ভরিয়ে তোলে। ভাটিয়ালীর প্রকৃতির প্রেমে ডুবে গিয়ে শূন্যপকেটে ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা পার করে দেই। বাসায় যাওয়ার খেয়াল হলে এক বন্ধুকে কল করে টাকা জোগাড় করে বাসে উঠি।

বর্ষাকাল ভাটিয়ারী লেক তার যৌবন ফিরে পায়। এ সময় লেকের সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি পায়। ঠিক ওমন মৌসুমে প্রিয়তমাকে নিয়ে এখানে আবারো একবার আসার কল্পনায় ডুবে গেলাম নীড়ে ফেরার পথে,বাস চলছে আপন গতিতে।

[সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় ভাটিয়ারী লেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন সুযোগ নেই। আরেকটি কথা না বললেই নয় আমার মানিব্যাগ হারানো ছিনতাই বা পকেটমার ছিলো না বরং এটি মূলত নিজের বেখেয়ালের ফলেই হারাই।]

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam)

 #সহস্রধারায়_রোমাঞ্চকর_অভিজ্ঞতা একাকী ভ্রমণ করা গেলেও যে আডভেঞ্চারের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয় সেটা সীতাকুণ্ডের সহস্রধারা ঝরণায়...
04/09/2024

#সহস্রধারায়_রোমাঞ্চকর_অভিজ্ঞতা

একাকী ভ্রমণ করা গেলেও যে আডভেঞ্চারের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয় সেটা সীতাকুণ্ডের সহস্রধারা ঝরণায় গিয়ে উপলব্ধি করেছিলাম।

সহস্রধারা ঝর্ণা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছোট দারোগার হাট থেকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমি যখন ছোট দারোগার হাট পৌঁছালাম তখন ঘড়িতে প্রায় চারটা বাজে। এ সময়ে দর্শনার্থীরা একে একে বের হচ্ছিলো আর আমি নতুন করে কেউ যাবে কি না কিছুক্ষণ সে অপেক্ষা করছিলাম। কারণ এতে করে যেমন গাড়ি ভাড়ার খরচ বাঁচবে, তেমনি সঙ্গীও পাবো। কিন্তু না, যাওয়ার মতোন কাউকেই পেলাম না।

আমিও নাছোড়বান্দা ঝর্ণায় একাকী যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম। কেননা এতদূর এসে তো আর ঝর্ণার রূপ না দেখে ফিরে যেতেও মন সায় দিচ্ছে না। তাছাড়া ভাবলাম ওখানে গেলো হয়তো কিছু দর্শনার্থী সাক্ষাৎ পাবো। কিন্তু যতই এগচ্ছি ততই একে একে সবাইকে বের হতে দেখছি। যাই হোক দুই-তৃতীয়াংশ রিকশায় আর বাকিটা পথ হেঁটে স্পটে পৌঁছালাম। এসে দেখলাম দীঘি পার হয়ে ঝরণা দেখতে যাওয়ার নৌকাগুলো ঘাটেবাঁধা মাঝি নাই।

আশাপাশে দু একজন স্থানীয় মানুষকে জিজ্ঞেস করলাম যে দীঘি পার না হয়ে তীর ঘেষে ঝর্ণার কাছে যাওয়ার উপায় আছে কি না? তারা বললো যে পথ ছিলো তা না কি বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে তো যাওয়া যাবে না। সহস্রধারার এতো কাছে এসেও ফিরে যেতে হবে এমন চিন্তা মাথায় আসতেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে পাহাড়ের তট দিয়ে ঝরণার পাহাড়ের দিকে এগিয়ে যাবো। নিশ্চয়ই কোন না কোন পথ পাবোই এবং ঝরণায় পৌঁছাবো।

যেই ভাবনা সেই কাজ, হাঁটা শুরু করলাম উঁচু নিচু ও সরু পাহাড়ি পথ দিয়ে। মনে হচ্ছিলো এ পথ ধরে কিছু দূর হাঁটলেই হয়তো ঝরণার দেখা পাবো কিন্তু ঘন্টাখানে হেঁটেও কোন ঝরণার পথ তো পেলামই না বরং চলার পথটি ক্রমান্বয়ে ভয়ঙ্কর হচ্ছিলো। এদিকে কোথাও কোন মানুষের সাড়াশব্দও নেই আমি একা, সাড়া শরীর ঘামে টপটপ করছে এবং গলাও শুকিয়ে গেলো। হঠাৎ আরেকটা ভয়ের উদয় হলো যদি জঙ্গলের ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে যদি সাপ এসে সামনে পড়ে। তখন স্থির হয়ে চারদিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম যে আমি পথ হারিয়ে ভুল পথে এসেছি।

ওদিকে সন্ধ্যাও ঘনিয়ে আসছে তো পিছনে ফিরে এলাম। আসার পথে চোখে পড়লো খানিকটা দূরে বাঁশ দিয়ে জালের বেড়া। তখন মনে পড়লো যে একজন বলেছিলো ঝরণার পথটি বেড়া দিয়ে আটকানো হয়েছে। তাহলে এটিই তাহলে সেই পথ হবে ভেবে এগিয়ে গিয়ে দেখি ঝরণা দেখা যাচ্ছে এবং ঐ পাহাড় থেকে নিচে নামলেই ঝরণার কাছে যাওয়া যাবে। কিন্তু যাবো কিভাবে! চারদিকে তাকালাম স্থানীও কেউ আছে কি না দেখতে। নাহ্ কাউকে দেখা যাচ্ছে না!

তো তখন আমি বাঁশের জালটা উপরে তুলে নিচ থেকে অনেক কষ্টে বেড়া পার হলাম। কিন্তু এ পাহাড়ের মাটি ঝরঝরে পা দিতে মাটি খসে খসে নিচে পড়ছিলো।তাও অতি সাবধানে কিছুটা এগতেই ঝরণার দৃশ্যটি মোটামুটি করে দেখে কিছুটা তৃপ্ত হলাম। ঐ পাহাড়টি থেকে নেমে ঝরণার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলাম না দুটো কারণে। প্রথমত ঝরণার ওখানে কেউকে দেখা যাচ্ছে না, দ্বিতীয়ত কোনভাবে নিচে নামলেও নিচ থকে উপরে ওঠা দুঃসাধ্য হয়ে যাবে। এদিকে সন্ধ্যাও প্রায় ঘনিয়ে এলো।

মরার উপর খাঁড়ার ঘা, ফেরার পথে বেড়ার যেখান থেকে এসেছিলাম সে যায়গাটিও খুঁজে পাচ্ছিলাম না।দেখি সব যায়গা দিয়ে ঝোপঝাড়ে ঢাকা গর্ত। ভুলবশত পা ফেললে পড়ে যেতে হবে শতফুট নিচে। প্রায় বিশ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর পথটি খুঁজে পাই এবং নিচে চলে আসি। এরপর দীঘির পাড় দিয়ে ফেরার পথে দেখি দুজন হুজুর দর্শনার্থী নৌকা ভাড়া করে ঝর্ণা দেখতে যাচ্ছে। আমি উৎফুল্ল হয়ে আমাকেও নিয়ে যাওয়ার জন্যে ডাকি। তারা এসে আমায় নিয়ে যায়। অতঃপর কাছ থেকে সহস্রধারার রূপ দেখি, ফটো তুলি এবং গোসল করে সন্ধ্যা হলে নৌকায় করে পাড়ে চলে আসি।মাগরিবের ওয়াক্ত হলে ছোট্ট পাহাড়ের উপর সমান যায়গায় হুজুরদের সাথে নামাজ আদায় করি। এটি ছিলো অন্য রকম এক প্রশান্তির।

নামাজ শেষে আমরা তিনজন রয়না দেই অন্ধকারে পিচ্চিল উঁচু নিচু পথে টর্চ হাতে নিয়ে। কিছুদূর যেতে আমাদের নৌকার ছেলেটি আতঙ্কের ছাপ দেখিয়ে বললো সাবধানে যাইয়েন। বললাম কেন?
ও বললো মাস দুই আগেও এখানে এমন রাতে পর্যাটকদের অর্থ ও সরঞ্জাম ছিনতাই হয়েছিলো। বছর দুই আগে এভাবে ছিনতাই করার সময় বাধা দিলে না কি মেরে ফেলে। এ কথা বলে ছেলেটি অন্য পথে ওর বাড়ির দিকে চলে গেলো। এবারে সত্যিই প্রচন্ডভাবে ভয়,আতঙ্ক নিয়ে আল্লাহর নাম জপতে জপতে দ্রুত চলতে রইলাম। মনে হচ্ছিলো এই বুঝি ঝোপঝাড় থেকে চাকু হাতে কয়েকজন এসে বলবে যা সাথে আছে দিয়ে দে। তখন কি করবো! নাহ্ সবই দিয়ে দিবো তবুও যেন রক্ষা পাই।এরকম ডর,শঙ্কা নিয়ে দুই-তিন কিলোর মতো চলতে চলতে একসময় লোকালয় এলাম।
ভিন্ন রকম লোমহর্ষক উত্তেজনা আর অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসায় ফিরলাম।

এই ভ্রমণ থেকে দুটো শিক্ষা পেলাম,
প্রথমত, এমন ঝরণা,পাহাড়ী দুর্গম এলাকায় বন্ধুরা দলবেঁধে আসা উচিত।
দ্বিতীয়ত, সকাল থেকে দুপুর তিনটার ভিতরে ঝর্ণার স্পটে পৌঁছানো উচিত যাতে ওখানে সময় কাটিয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটায় রয়না দিয়ে আসা যায়।

লেখক : Abdul Kahhar ( Siam )

Address

Dhanmondi
Dhaka

Telephone

+8801311481514

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Abdul Kahar's Travelogue posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Abdul Kahar's Travelogue:

Share