Relax Tours "ভ্রমণ সঙ্গী"

Relax Tours "ভ্রমণ সঙ্গী" We are providing tourism related services for both individuals and corporate clients over the last 10 (Ten) years. "Make your Holidays Enjoyable with us"

Our company has been organizing package tour for entire Bangladesh and especially Sundarban.

ম্যানগ্রোভ ঝোপজাতীয় ছোট গাছ, যা উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। ম্যানগ্রোভকে লবণাক্তসহিষ্ণু গাছও বলা হয়ে থাকে। ওই গাছ উপকূ...
10/12/2022

ম্যানগ্রোভ ঝোপজাতীয় ছোট গাছ, যা উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। ম্যানগ্রোভকে লবণাক্তসহিষ্ণু গাছও বলা হয়ে থাকে। ওই গাছ উপকূলীয় অঞ্চলে মাটি ও পানিতে বিদ্যমান লবণের ঘনত্ব কমাতে সাহায্য করে থাকে। উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ গাছ কর্তৃক লবণের ঘনত্ব কমানোকে প্রাকৃতিক ফিলট্রেশন বলা হয়ে থাকে। ম্যানগ্রোভের প্রায় ১১০টি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৫৪টি প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ দৃশ্যমান রয়েছে। বিশ্বে ১০০টির বেশি অঞ্চলে ওই প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ জন্মায়। পৃথিবীর ৫ ডিগ্রি উত্তর এবং ৫ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে সবচেয়ে বেশি ম্যানগ্রোভ গাছ দৃশ্যমান রয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৭৫ শতাংশ ম্যানগ্রোভ ১৪টির বেশি দেশে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়ায় ৪২ শতাংশ, আফ্রিকায় ২১ শতাংশ, উত্তর-মধ্য-আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৫ শতাংশ, ওশেনিয়ায় ১২ শতাংশ ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১০ শতাংশ রয়েছে।

সমগ্র বিশ্বে প্রায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে। বিশ্বে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে প্রায় ২৩ হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। অন্যদিকে ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকো যথাক্রমে ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে। ফিলিপাইন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের দিক থেকে রয়েছে ১০ম স্থানে। সেখানে প্রায় ২ হাজার ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিশ্বে ১৫তম, যেখানে প্রায় ১ হাজার ৫৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে।

ম্যানগ্রোভ ঝোপজাতীয় ছোট গাছ, যা উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। ম্যানগ্রোভকে লবণাক্তসহিষ্ণু গাছও বলা হয়ে থাকে। ওই গাছ উপকূলীয় অঞ্চলে মাটি ও পানিতে বিদ্যমান লবণের ঘনত্ব কমাতে সাহায্য করে থাকে। উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ গাছ কর্তৃক লবণের ঘনত্ব কমানোকে প্রাকৃতিক ফিলট্রেশন বলা হয়ে থাকে। ম্যানগ্রোভের প্রায় ১১০টি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৫৪টি প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ দৃশ্যমান রয়েছে। বিশ্বে ১০০টির বেশি অঞ্চলে ওই প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ জন্মায়। পৃথিবীর ৫ ডিগ্রি উত্তর এবং ৫ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে সবচেয়ে বেশি ম্যানগ্রোভ গাছ দৃশ্যমান রয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৭৫ শতাংশ ম্যানগ্রোভ ১৪টির বেশি দেশে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়ায় ৪২ শতাংশ, আফ্রিকায় ২১ শতাংশ, উত্তর-মধ্য-আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৫ শতাংশ, ওশেনিয়ায় ১২ শতাংশ ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১০ শতাংশ রয়েছে।

সমগ্র বিশ্বে প্রায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে। বিশ্বে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে প্রায় ২৩ হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। অন্যদিকে ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকো যথাক্রমে ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে। ফিলিপাইন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের দিক থেকে রয়েছে ১০ম স্থানে। সেখানে প্রায় ২ হাজার ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিশ্বে ১৫তম, যেখানে প্রায় ১ হাজার ৫৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে।

ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার ৭৭৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায় ২ হাজার ৩১৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ম্যানগ্রোভ বায়োমও রয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর অন্যতম বড় ম্যানগ্রোভ বন। বনটি প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। ওই বনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা রয়েছে বাংলাদেশে, বাকিটা ভারতে। সুন্দরবন ১৯৯৭ সালের ৭ ডিসেম্বর ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিবছর সুনামি ও ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সুন্দরবন ওই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ কমিয়ে মানুষকে ক্ষয়ক্ষতির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে। সুন্দরবনের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ২০০৭ ও ২০০৯ সালে সিডর ও আইলাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছিল। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও সুন্দরবনের অবদান অনস্বীকার্য। এই ম্যানগ্রোভ বনে প্রায় ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪৯ প্রজাতির ম্যামালিয়ান, ৫৯ প্রজাতির রেপটাইলস, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির ক্র‌্যাব, ৪৩ প্রজাতির মোলাস্কা এবং ২৬০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ডলফিন, পাইথন ও কুমির বিলুপ্ত না হলেও অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবুও পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন উদ্ভিদ ও প্রাণীর সমারোহে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। এ বন খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আশ্রয়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তাছাড়া সুন্দরবন কাঠ, মধু, পাতা, ওষুধ ও মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে মানুষের টেকসই জীবনযাপনে সহায়তা করে যাচ্ছে।

অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে গ্রিনহাউজ গ্যাস কার্বন ডাইঅক্সাইডের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। বায়ুমণ্ডলে মানবসৃষ্ট এ গ্রিনহাউজ গ্যাসের বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ম্যানগ্রোভ বনের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যটি ২০১৭ সালে হারিকেন ইরমার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, ওই অঙ্গরাজ্যের ম্যানগ্রোভ বন প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত ক্ষতি কমাতে সাহায্য করেছিল। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ১০০ গজ উচ্চতার একটি ম্যানগ্রোভ গাছ প্রায় ৬৬ শতাংশ ঢেউয়ের উচ্চতা কমাতে সাহায্য করে।

কাজেই ম্যানগ্রোভ বন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। অন্যান্য বনের তুলনায় ম্যানগ্রোভ বন বায়ুমণ্ডলে চারগুণ বেশি কার্বন কমাতে সাহায্য করে। ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সমগ্র বিশ্বে ম্যানগ্রোভ বন কর্তৃক বছরে প্রায় ৬ বিলিয়ন টন কার্বন শোষিত হয়। মোটা দাগে বলা যায়, ম্যানগ্রোভ বন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বায়ুমণ্ডলে নির্গত কার্বনের পরিমাণ কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

রেড প্রজাতির ম্যানগ্রোভ মাটিতে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এ ধরনের ম্যানগ্রোভের কোষে বিদ্যমান ভেক্যুলে লবণ জমা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ম্যানগ্রোভ গাছ এ পদ্ধতিতে মাটিতে প্রায় ৯০-৯৭ শতাংশ লবণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। ফলে অন্যান্য প্রজাতির গাছ যা লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে না, তাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ অনেকটা পানিতে জন্মায় বিধায় মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে। অ্যানঅ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস নির্গত হওয়ায় মাটিতে নাইট্রেজেনের পরিমাণ কমে যায়। এ অবস্থায় ম্যানগ্রোভের বায়বীয় শেকড় সরাসরি বায়ু থেকে নাইট্রোজেন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে গাছের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সাহায্য করে থাকে। এভাবে ম্যানগ্রোভ বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানগুলোর চক্রের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

ম্যানগ্রোভ বন লবণাক্ততার প্রাদুর্ভাব কমিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পুষ্টি উপাদানের ভারসাম্য রক্ষা এবং মানুষের টেকসই জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তবুও ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণে বহু হুমকি রয়েছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন, মৎস্যচাষ, কৃষি, বন ধ্বংস, লবণ উৎপাদন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ম্যানগ্রোভ গাছ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। যদি ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণ করা না যায়, ভবিষ্যতে সমগ্র পৃথিবীতে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। ফলে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃত সুন্দরবনের স্বীকৃতিও অনেকটা অর্থহীন হয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশে একটিই বন আছে, যে বনে লাখো ‘সুন্দরী’র বসবাস। বনটির নাম সুন্দরবন। করোনাকালেই সুন্দরবন পড়ল আম্পানের তাণ্ডবে। বনটি...
07/12/2022

বাংলাদেশে একটিই বন আছে, যে বনে লাখো ‘সুন্দরী’র বসবাস। বনটির নাম সুন্দরবন। করোনাকালেই সুন্দরবন পড়ল আম্পানের তাণ্ডবে। বনটি তাতে দমে যায়নি। বরাবরের মতো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

শীতকালই সুন্দরবন ভ্রমণের উৎকৃষ্ট সময়। গরমে বেশি মানুষ সেখানে যায় না। বন্য প্রাণী সংরক্ষণের কাজে কয়েক বছর ধরে বর্ষায় সেখানে যেতে হচ্ছে।

বর্ষায় সুন্দরবন একদম অন্য রকম। ভ্যাপসা গরম, কিন্তু চারদিকে সবুজের বন্যা। বৃষ্টি নামলে তো কথাই নেই। বনে প্রাণীদের এ সময়ে দেখা পাওয়া দুরূহ। বাঘ তো দূরের কথা, বনের হরিণও নয়। তবে চোখে পড়ে কয়েক জাতের মাছরাঙা। এরাই সুন্দরবনের আসল সুন্দরী।

সুন্দরবনে গেলে ছোট খালগুলোতে সহজেই দেখা মেলে আগুনরাঙা এক মাছশিকারি পাখির। নাম খয়রাপাখ মাছরাঙা। ইংরেজি নাম ব্রাউন-উইংড কিংফিশার। খালের ওপর ঝুলে পড়া ডালে বসে থাকে মাছের আশায়। জোয়ার বা ভাটা সব সময়ই এদের দেখা মেলে। মানুষ বা প্রাণী দেখলে ‘কাক-কাকাকা’ চিৎকার দিয়ে উড়ে যায়। লাল ছুরির মতো চঞ্চু তাক করে পানির দিকে একনাগাড়ে তাকিয়ে থাকে। এরপর হঠাৎ ঝপাৎ করে পানিতে লাফ।

দেশে মাছরাঙা মোট ১২ জাতের। বেশির ভাগই দেখা যাবে সুন্দরবনে। আমার কাছে মনে হয়, সুন্দরবন মাছরাঙাদের শহর। খয়রাপাখ মাছরাঙা সুন্দরবনে ভালোই টিকে আছে। সুন্দরবন থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত উপকূলীয় প্যারাবনেই শুধু এরা টিকে আছে। সুন্দরবনেই সম্ভবত পৃথিবীর অধিকাংশ খয়রাপাখ মাছরাঙার বাস। সুন্দরবনেই এরা সুলভ, কিন্তু পাখিটিকে আসলে বিশ্বে ‘প্রায়-বিপন্ন’ বলে গণ্য করা হ

সুন্দরবনের সেরা আকর্ষণ লাল মাছরাঙা। আমার প্রিয় মাছরাঙা। সুন্দরবন ছাড়া এই প্রজাতির মাছরাঙা দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। পালকের অনুপম লাল রঙের কারণে ইংরেজিতে এর নাম রাডি কিংফিশার। অনেক দেশের প্যারাবন ও চিরসবুজ বনে পাখিটিকে সুলভ ও বিপদমুক্ত গণ্য করা হয়। বাংলাদেশে একসময় একে সংকটাপন্ন পাখির তালিকায় রাখা হয়েছিল। ২০১৫ সালে আইইউসিএনের সর্বশেষ প্রকাশিত লাল তালিকায় এটি বিপদমুক্ত বলে গণ্য। গবেষকদের ধারণা, সুন্দরবনে এরা সংখ্যায় কিছুটা বেড়েছে। লাল মাছরাঙা দেখার জন্য আগে সুন্দরবনের গভীরে যেতে হতো, এখন করমজল গেলেও দেখা মেলে।
লাল মাছরাঙার প্রধান খাদ্য কাঁকড়া। তাই অন্য মাছরাঙার সঙ্গে এদের তেমন প্রতিযোগিতা নেই। সুন্দরবনে কাঁকড়া বেশুমার। ভাটা নামার সঙ্গে সঙ্গে লাল মাছরাঙার তৎপরতা তাই অনেক বেড়ে যায়। ভাটায় আটকে পড়া কাঁকড়া ধরে খাওয়া যায় খুব সহজে।

মাছরাঙা সুন্দরবনের বড় উপকরণ। পানিতে মাছের ভারসাম্য রক্ষায় পাখিটি বড় ভূমিকা রাখে। রোগাক্রান্ত ছোট মাছ খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে রোগের প্রাদুর্ভাব কমায়।

যোগাযোগ:- ঢাকা অফিস "01711938204"
৫১/১ ভি, আই, পি টাওয়ার নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ *[email protected]*
খুলনা অফিস- "01712252551"
এ-৯, মজিদ স্বরণী, শিববাড়ী, খুলনা।
ুন্দরবনভ্রমণজাহাজেরতথ্য ুন্দরবন ্রমণসঙ্গী

বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা আমাদের সুন্দরবন। বাহারি গাছপালা, বন্য পশুপাখি ও জীবজন্তু ঘেরা গা ছমছম পরিবেশে পরিপূ...
06/12/2022

বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা আমাদের সুন্দরবন। বাহারি গাছপালা, বন্য পশুপাখি ও জীবজন্তু ঘেরা গা ছমছম পরিবেশে পরিপূর্ণ বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ এই বনভূমি।

১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সুন্দরবন সুন্দরী গাছের ম্যানগ্রোভের জঙ্গল নয়, এটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবেও স্বীকৃত। দুই বাংলার মানুষ এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের উপর নির্ভরশীলও বটে।

সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য এক বিরাট আয়ের উৎস। এ বনের আশপাশ ঘিরে ৪৫০টির মতো নদী, খাল যেখান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি, সাদা মাছ, কাঁকড়া আহরণ করে হাজার হাজার জেলে পরিবার জীবন-জীবিকা চালাচ্ছে।

এছাড়াও বনের হাজার হাজার মন শুকনা কাঠ, পাতা সংগ্রহ করে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণ। সুন্দরবনের গোল পাতা আরও একটি আয়ের উৎস। সুন্দরবন একদিকে যেমন ব্যক্তিকেন্দ্রিক আয়ের উৎস অন্যদিকে সরকারি রাজস্ব আয়েরও উৎস।

তাছাড়া সুন্দরবনের মধুর খ্যাতি বিশ্ব জোড়া। প্রতিবছর এ বন থেকে ১৫ থেকে ১৬ হাজার মণ মধু আহরিত হয়। যা সারাদেশ থেকে আহরিত মধুর অর্ধেকেরও বেশি। এক তথ্য অনুযায়ি, প্রায় ১০ হাজার মানুষ মধু সংগ্রহের কাজে সুন্দরবনে নিয়োজিত থাকে। এ বন অসুস্থ মানষের জীবন বাঁচাচ্ছে তার বুকে ধারণ করা ৩৩৪ প্রজাতির বনজ বৃক্ষ, বিভিন্ন প্রজাতির গুল্ম, লতার মাধ্যমে সৃষ্টি ভেষজ ঔষধের মাধ্যমে।

বর্তমানে দেশ বিদেশে আধুনিক বিশ্বের মানুষের কাছে ভেষজ ঔষধ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর গ্রহণ যোগ্যতা ও চাহিদা বেড়েই চলছে। শরীরের জন্য বেশ উপযোগী মনে করছেন চিকিৎসকরা। সুন্দরবনের গহীন থেকে গহীনে জন্ম নেয়া লতা, পাতা, গুল্ম, বৃক্ষ থেকে মানুষের জীবন রক্ষাকারী মহামূল্যবান ভেষজ ঔষধ উদ্ভাবন সম্ভব। প্রয়োজন গবেষক এবং গবেষণাঘার।

চিরসবুজের এই সুন্দরবন সৌন্দর্য, রূপ মাধুর্যে যেন অনন্ত যৌবনা। এত সৌন্দর্য মণ্ডিত সুন্দরবন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ তথা বিনোদন পিপাসুদের অতীত থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সে ডাকে সাড়া দিয়ে সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে, চিনতে এর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশি, বিদেশি পর্যটক আসছে। অনুকূল পরিবেশ পেলে পর্যটক খাতসহ অন্যান্য খাত থেকে বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারি রাজস্ব আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে। সব মিলিয়ে সুন্দরবনের গুরুত্ব, প্রয়োজন, অবদান বলে শেষ করা অসম্ভব।

মানুষের বেঁচে থাকার এক অনন্য মৌলিক উপাদান অক্সিজেন যা ৬০১৭ বর্গ কি.মি. জায়গা জুড়ে সুবিস্তৃত বিশাল বনবৃক্ষ অক্সিজেন দিচ্ছে। এ দিক দিয়ে এ বনের গুরুত্ব অবদান অপরিসীম।

সুন্দরবন বাংলাদেশের রক্ষাকবচও বটে। ঝড়-ঝঞ্জা, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বিরূপ প্রভাবের হাত থেকে রক্ষা করতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরবন প্রতিনিয়ত প্রকৃতির বিরুদ্ধে নীরবে লড়াই করে যাচ্ছে।

পুরো পৃথিবীতেই আমাদের এই বনের সুখ্যাতি রয়েছে । প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ। বিশেষ করে আমাদের দেশের সকলের উচিত বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন আরও জোরদার ও কঠোর করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রয়োজনে সকলকে এর মূল্য বোঝানো যে এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে আমাদের জন্য কতটা অত্যাবশ্যক। তাহলেই নির্বিচারে বন উজাড় ও পশু-পাখি মরার হাত হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

যোগাযোগ:- ঢাকা অফিস "01711938204"
৫১/১ ভি, আই, পি টাওয়ার নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ *[email protected]*
খুলনা অফিস- "01712252551"
এ-৯, মজিদ স্বরণী, শিববাড়ী, খুলনা।
ুন্দরবনভ্রমণজাহাজেরতথ্য ুন্দরবন ্রমণসঙ্গী

চাঁদপাই রেঞ্জের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দুবলার চর। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে দুবলা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এখানে লাল ব...
05/12/2022

চাঁদপাই রেঞ্জের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দুবলার চর। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে দুবলা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এখানে লাল বুক মাছরাঙা, মদনটাক পাখির দেখা মেলে। এখানকার সৌন্দর্যের একটি দিক হচ্ছে হরিণের ঘাস খাবার দৃশ্য। দুবলার চর মূলত জেলে গ্রাম। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শোকানোর কাজ। বর্ষা মৌসুমের ইলিশ শিকারের পর বহু জেলে চার মাসের জন্য সুদূর কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে ডেরা বেঁধে সাময়িক বসতি গড়ে সেখানে। মেহেরআলীর খাল, আলোরকোল, মাঝেরচর, অফিসকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছাফরাখালী ও শ্যালারচর ইত্যাদি এলাকায় জেলে পল্লী স্থাপিত হয়। এই চার মাস তারা মাছকে শুঁটকি বানাতে ব্যস্ত থাকেন। এখান থেকে আহরিত শুঁটকি চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের পাইকারী বাজারে মজুদ ও বিক্রয় করা হয়। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের সদর দপ্তর বাগেরহাট থেকে মাছ সংগ্রহের পূর্বানুমতিসাপেক্ষে বহরদার ও জেলেরা দুবলার চরে প্রবেশ করে থাকেন। দুবলার চর থেকে সরকার নিয়মিত হারে রাজস্ব পেয়ে থাকে। প্রতি বছর বিএলসি বা বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট, ডিএফসি বা ডেইলি ফুয়েল (জ্বালানি কাঠ) কঞ্জামশন ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় বন বিভাগকে রাজস্ব প্রদান করে মৎস্য ব্যবসায়ীগণ সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি পান, এছাড়া আহরিত শুঁটকি মাছ পরিমাপ করে নিয়ে ফিরে আসার সময় মাছভেদে প্রদান করেন নির্ধারিত রাজস্ব।প্রতি বছর কার্তিক মাসে (খ্রিস্টীয় নভেম্বর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা এবং পূণ্যস্নানের জন্যও দ্বীপটি বিখ্যাত। যদিও বলা হয়ে থাকে, ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা হয়ে চলেছে , তবে জানা যায়, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে হরিচাঁদ ঠাকুরের এক বনবাসী ভক্ত, নাম হরিভজন (১৮২৯—১৯২৩), এই মেলা চালু করেন। প্রতিবছর অসংখ্য পুণ্যার্থী রাসপূর্ণিমাকে উপলক্ষ করে এখানে সমুদ্রস্নান করতে আসেন। দুবলার চরে সূর্যোদয় দেখে ভক্তরা সমুদ্রের জলে ফল ভাসিয়ে দেন। কেউবা আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ভজন-কীর্তন গেয়ে মুখরিত করেন চারপাশ। দুবলার চরের রাসমেলায় স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দূর-দূরান্তের শহরবাসী এমনকি বিদেশি পর্যটকেরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে থাকেন। তিনদিনব্যাপী এ মেলায় অনেক বিদেশী পর্যটকেরও সমাগম হয়।

যোগাযোগ:- ঢাকা অফিস "01711938204"
৫১/১ ভি, আই, পি টাওয়ার নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ *[email protected]*
খুলনা অফিস- "01712252551"
এ-৯, মজিদ স্বরণী, শিববাড়ী, খুলনা।
ুন্দরবনভ্রমণজাহাজেরতথ্য ুন্দরবন ্রমণসঙ্গী

সুন্দরবন  বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম জোয়ারধৌত গরান বনভূমি (man...
01/12/2022

সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম জোয়ারধৌত গরান বনভূমি (mangrove forest)। কর্কটক্রান্তির সামান্য দক্ষিণে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূল ধরে বিস্তৃত ২১°৩০´-২২°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´-৮৯°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যবর্তী স্থানে এ বনের অবস্থান। নানা ধরনের গাছপালার চমৎকার সমারোহ ও বিন্যাস এবং বন্যপ্রাণীর অনন্য সমাবেশ এ বনভূমিকে চিহ্নিত করেছে এক অপরূপ প্রাকৃতিক নিদর্শন হিসেবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের একটি উলে­খযোগ্য কেন্দ্র হিসেবেও এটি বিবেচিত; এখান থেকে সংগৃহীত হয় নানা কাজে ব্যবহার উপযোগী বনবৃক্ষ, আহরিত হয় প্রচুর পরিমাণ মধু, মোম ও মাছ। সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বাগেরহাট জেলার অংশবিশেষ জুড়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন বিস্তৃত। পরস্পর সংযুক্ত প্রায় ৪০০ নদী-নালা, খালসহ প্রায় ২০০টি ছোট বড় দ্বীপ ছড়িয়ে আছে সুন্দরবনে।
আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বেও মূল সুন্দরবনের এলাকা ছিল প্রায় ১৬,৭০০ বর্গ কিমি। বর্তমানে সংকুচিত হয়ে প্রকৃত আয়তনের এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ ভারত বিভাগের পর বনের দুই-তৃতীয়াংশ পড়েছে বাংলাদেশে, বাকিটা ভারতে। এই বনভূমির বর্তমান আয়তন হবে প্রায় ৪,১১০ বর্গ কিমি, এর প্রায় ১,৭০০ বর্গ কিমি জলাভূমি। গোটা সুন্দরবন দুটি বন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। এখানে আছে চারটি প্রশাসনিক রেঞ্জ- বুড়িগোয়ালিনি, খুলনা, চাঁদপাই এবং শরণখোলা; আর ১৬টি ফরেস্ট স্টেশন। ব্যবস্থাপনার সুবিধার জন্য সুন্দরবনকে নয়টি ব­ক (block) এবং ৫৫টি কোম্পার্টমেন্ট-এ (compartment) ভাগ করা হয়েছে। ১৮৭৫ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ বনভূমির প্রায় ৩২,৪০০ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৯৯৯ সাল থেকে UNESCO World Heritage Site-এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ (সংশোধন), ১৭৭৪-এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৭ সালে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যগুলি (sanctuaries) প্রতিষ্ঠিত হয়।

যে তিনটি এলাকা এতে অন্তর্ভুক্ত সেগুলি হচ্ছে: সুন্দরবন পশ্চিম (৯,০৬৯ হেক্টর), সুন্দরবন দক্ষিণ (১৭,৮৭৮ হেক্টর) এবং সুন্দরবন পূর্ব (৫,৪৩৯ হেক্টর)।

‘সুন্দরবন’ নামটি সম্ভবত সুন্দরী বৃক্ষের আধিক্যের কারণে (সুন্দরী-বন) অথবা সাগরের বন (সমুদ্র-বন) কিংবা এ বনভূমির আদিবাসী চন্দ্রবেদে থেকে উদ্ভূত। সাধারণভাবে গৃহীত ব্যাখ্যাটি হলো এখানকার প্রধান উদ্ভিদ সুন্দরী বৃক্ষের (Heritiera fomes) নাম থেকেই এ বনভূমির নামকরণ।

ভূতত্ত্ব উৎপত্তির দিক থেকে সুন্দরবনের ভূভাগ সাম্প্রতিককালের এবং হিমালয় পর্বতের ভূমিক্ষয়জনিত জমা পলি থেকে এর সৃষ্টি। ভূগঠন প্রক্রিয়াটি সাগরের জোয়ারের কারণে ত্বরান্বিত হয়েছে। এর নিম্নস্তর প্রধানত কোয়াটারনারি যুগের (Quaternary) তলানিতে গঠিত, যার সংমিশ্রণ ঘটেছে বালি, পলি, সামুদ্রিক লবণ এবং কাদামাটির সঙ্গে। ভূতত্ত্ববিদগণ এখানকার ভূগঠনবিন্যাসে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সামান্য ঢালের সন্ধান পেয়েছেন এবং সেসঙ্গে টারসিয়ারি সময়ে সংঘটিত বাংলার অববাহিকার (Bengal Basin) ঝুকানো অবস্থা শনাক্ত করেছেন। দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীতে সংঘটিত নব্য-ভূগঠনিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে বেঙ্গল বেসিন পূর্বমুখে ঝুঁকে পড়ে। সন্ধানমূলক কূপ খনন (borehole) গবেষণা থেকে প্রতীয়মান হয় যে সুন্দরবনের পশ্চিম এলাকা অপেক্ষাকৃত সুস্থিত হলেও দক্ষিণ-পূর্ব কোণার অংশ একটি সক্রিয় পলিজ এলাকা এবং ক্রমে তা নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে

মৃত্তিকা বাংলাদেশের অভ্যন্তরভাগের অন্যান্য মৃত্তিকার তুলনায় সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বনভূমির মৃত্তিকা পৃথক ধরনের এবং এ বনভূমিতে জোয়ারভাটার কারণে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততার প্রভাব সুস্পষ্ট। মাটির এ ধরনের অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে এখানকার উদ্ভিদকুলও বৈশিষ্ট্যময়। জোয়ারধৌত এ বনের কোন কোন স্থানের মাটি আধাশক্ত এবং তেমন সুদৃঢ় নয়; pH মানের ব্যাপ্তী ব্যাপক, ৫.৩ থেকে ৮.০। যদিও সুন্দরবনের মাটি মধ্যম বুননের এবং বালিময় দোঅাঁশ, পলিযুক্ত দোঅাঁশ অথবা কাদাযুক্ত দোঅাঁশ প্রকৃতির, মাটির দানার আকার ও বিস্তৃতিতে প্রচুর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। পলিযুক্ত দোঅাঁশ এখানকার মাটির প্রধান গঠন উপাদান।

সোডিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মাত্রা প্রতি ১০০ গ্রাম শুষ্ক মৃত্তিকায় ৫.৭ থেকে ২৯.৮ meq এবং এ মাত্রা সাধারণত বনভূমির পূর্বাঞ্চলে কম এবং ক্রমান্বয়ে পশ্চিম দিকে বেশি। পটাসিয়ামের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম, প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনা মাটিতে ০.৩ থেকে ১.৩ meq। এখানকার শুকনা মাটির জৈব উপাদানের মাত্রা শতকরা ৪ থেকে ১০ ভাগ। মাটির লবণাক্ততা পূর্ব এলাকায় সামান্য থেকে পরিমিত, কিন্তু ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে পশ্চিম অঞ্চলে যথেষ্ট বেশি। সমগ্র বনভূমিতেই উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকের ভূভাগের লবণাক্ততার মধ্যে কোন সঙ্গতি নেই।

জলবায়ু যেহেতু সুন্দরবন কর্কটক্রান্তির দক্ষিণে অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগর-এর উত্তর দিকের সীমা বরাবর বিস্তৃত, এ বনকে তাই উষ্ণমন্ডলীয় আর্দ্র বনভূমি (tropical moist forest) হিসেবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়। বনসংলগ্ন ভূখন্ডের তুলনায় সুন্দরবনের তাপমাত্রা মোটামুটি সুষম। এর বিভিন্ন এলাকার বাৎসরিক গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩১° সে থেকে ২১° সে-এর মধ্যে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্য-জুন পর্যন্ত সময়ে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি এবং সবচেয়ে কম ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে। সুন্দরবনের পূর্ব দিকে পটুয়াখালী এলাকায় উষ্ণ মাসগুলিতে তাপমাত্রা ৩২.৪° সে পর্যন্ত পৌঁছয়।

গড় বাৎসরিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা (relative humidity) সাতক্ষীরায় ৭০% থেকে পটুয়াখলীতে ৪০%-এর মধ্যে উঠানামা করে। জুন থেকে অক্টোবর মাসগুলিতে আপেক্ষিক আর্দ্রতা সবচেয়ে বেশি এবং ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে কম। সুন্দরবনের বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ১৬৪০-২০০০ মিমি; বনের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেশি। অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হয় বর্ষা মৌসুমে, মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে। মধ্য-জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় কখনও কখনও ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ঝড় এবং সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস অনেক সময় বনের ব্যাপক এলাকা প­াবিত করে এবং এতে গাছপালা ও প্রাণীর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।

উদ্ভিজ্জ সুন্দরবনের গাছপালার অধিকাংশই ম্যানগ্রোভ ধরনের এবং এখানে রয়েছে বৃক্ষ, লতাগুল্ম, ঘাস, পরগাছা এবং আরোহী উদ্ভিদসহ নানা ধরনের উদ্ভিজ্জ। অধিকাংশই চিরসবুজ হওয়ার কারণে এদের সবার শারীরবৃত্তিক ও গঠনগত অভিযোজন কমবেশি একই রকম। অধিকাংশ বৃক্ষের আছে ঊর্ধ্বমুখী শ্বাসমূল (pneumatophore), যার সাহায্যে এরা শ্বসনের জন্য বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। এ বনের প্রধান বৃক্ষ প্রজাতি সুন্দরী এবং গেওয়া (Excoecaria agallocha)। ১৯০৩ সালে ডি. প্রেইন সুন্দরবনের গাছপালার উপর লিখিত তাঁর গ্রন্থে ২৪৫ গণের অধীনে ৩৩৪টি উদ্ভিদ প্রজাতি লিপিবদ্ধ করেছেন; এর মধ্যে ১৭টি ফার্নজাতীয় (pteridophytes), ৮৭টি একবীজপত্রী (monocotyledons) এবং অবশিষ্ট ২৩০টি দ্বিবীজপত্রী (dicotyledons)। প্রজাতিগুলির মধ্যে ৩৫টি শিমগোত্রীয়, ২৯টি তৃণজাতীয়, ১৯টি হোগলাজাতীয় এবং ১৮টি সিজজাতীয় (euphorbias) উদ্ভিদ অন্তর্ভুক্ত। আজ পর্যন্ত জানা প্রায় ৫০টি প্রকৃত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে কেবল সুন্দরবনেই আছে ৩৫টি প্রজাতি। অধিকাংশ ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ চিরসবুজ, খাটো, গুল্মজাতীয় অথবা লম্বা বৃক্ষজাতীয়। এদের অনেকেই বনের তলদেশ খালি না রেখে সাধারণত দলবদ্ধভাবে জন্মায়।
সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার লবণাক্ত পানির বনভূমিতে গেওয়া (E. agallocha), গরান (Ceriops decandra), কেওড়া (Sonneratia apetala), ওড়া (S. caseolaris), পশুর (Xylocarpus mekongensis), ধুন্দুল (X. granatum), বাইন (Avicennia alba, A. marina, A officinales) এবং অন্যান্য ঠৈসমূলবাহী উদ্ভিদ প্রধান। হেন্দালও (Phoenix pelludosa) এ এলাকার অন্যতম প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি। বনের মধ্যভাগে ম্যানগ্রোভ বনের বৈশিষ্ট্যমূলক বৃক্ষ প্রজাতির প্রাধান্য বেশি। খুলনা ও বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ অংশের অধিকাংশ এলাকা পরিমিত লবণাক্ত পানির বনে ঢাকা, আর এখানকার মুখ্য উদ্ভিদ প্রজাতি সুন্দরী।

প্রায় সব খালের পাড়েই ঘনভাবে জন্মে নিপা পাম বা গোলাপাতা (Nipa fruticans)। পশুর, হরিণঘাটা এবং বুড়িশ্বর নদী দিয়ে প্রবাহিত প্রচুর স্বাদুপানি লবণাক্ততা কিছুটা হ্রাস করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় সহনীয় স্বাদুপানির বন এলাকা গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে।

সুন্দরবনে স্পষ্টত কিছুটা উদ্ভিদ পর্যায় লক্ষ্য করা যায়, যেখানে নবগঠিত ভূমিতে কতক অগ্রগামী প্রজাতি, যেমন আরালি (Leersia hexandra) ও বুনো ধানের (Potresia sp) পরে জন্মায় বাইন (Avicennia), কেওড়া (Sonneratia) এবং খুলশী (Aegiceras)। দ্বিতীয় উদ্ভিদ পর্যায়ে আছে গরান (Ceriops), গেওয়া (Excoecaria), তুনশা (Bruguiera), সুন্দরী (Heritiera), পশুর (Xylocarpus), এবং ঝানা (Rhizophora)। টাইগার ফার্ন (Acrosticum aureum) জন্মে লবণাক্ত ও কম লবণাক্ত এলাকায় প্রায় ভূমি ঘেঁষে। গা-ঢাকা দেওয়ার জন্য বাঘ এসব ঝোপ ব্যবহার করে।

প্রাণী সুন্দরবনে নানা ধরনের প্রাণীর বাস। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের (Panthera tigris) সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আবাস এখানেই। অধিকন্তু এ বনভূমিতে আছে প্রায় ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩২০ প্রজাতির আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি, প্রায় ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর এবং প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়া সুন্দরবনের উলে­খযোগ্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে চিত্রা হরিণ (Cervus axis), মায়া হরিণ (Muntiacus muntjak), রেসাস বানর (Macaca mulatta), বন বিড়াল (Felis chaus), লিওপার্ড (Prionailurus), সজারু (Hystrix indica), উদ (Lutra perspicillata) এবং বন্য শূকর (Sus scrofa)। হরিণ ও বন্য শূকর বাঘের প্রধান শিকার। বাঘসহ এখানকার আরও কতক প্রজাতি বিপন্নপ্রায়।
বাস্ত্তসংস্থানিক বৈচিত্র্য সুন্দরবনকে দান করেছে নানাবিধ পাখির এক অপরূপ আবাসস্থান। এখানে বসবাসকারী অধিকাংশ পাখিই স্থানীয় বা আবাসিক (resident), প্রায় ৫০ প্রজাতি অনাবাসিক (non-resident) বা পরিযায়ী (migratory) এবং এদের অধিকাংশই হাঁসজাতীয়। বক, সারস, হাড়গিলা, কাদা-খোঁচা, লেনজা ও হট্টিটিসহ অসংখ্য উপকূলীয় পাখি এখানকার নদীনালার কিনারায় বিচরণ করে। সমুদ্র এবং বড় বড় নদীর উপকূলভাগে দেখা যায় বহু প্রজাতির গাংচিল, জলকবুতর, টার্ন (terns) ইত্যাদি। Accipitridae গোত্রের চিল, ঈগল, শকুন ইত্যাদির প্রায় ২২ প্রজাতির প্রতিনিধি এখানে রয়েছে।

এ বনে মাছরাঙা আছে ৯ প্রজাতির। পাখি সম্পদে উৎকর্ষ সুন্দরবনে কাঠঠোকরা, ভগীরথ, পেঁচা, মধুপায়ী, বুলবুল, শালিক, ফিঙে, বাবুই, ঘুঘু, বেনে বৌ, হাঁড়িচাঁচা, ফুলঝুরি, মুনিয়া, টুনটুনি ও দোয়েলসহ রয়েছে নানা ধরনের ছোট ছোট গায়ক পাখি।

প্রায় ৫০ প্রজাতির সরীসৃপের মধ্যে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় সদস্য মোহনার কুমির (Estuarine crocodile, Crocodylus porosus); এদের কোন কোনটির দৈর্ঘ্য হয় প্রায় ৭ মিটার। ম্যানগ্রোভ পরিবেশে এক সময় এদের প্রচুর দেখা গেলেও এখন সেখানে এদের সংখ্যা মাত্র ২৫০ হবে বলে মনে করা হয়। গুইসাপসহ (Varanus spp) টিকটিকিজাতীয় সরীসৃপ, কচ্ছপ এবং সাপের প্রতিনিধিত্ব সন্তোষজনক। সাপের মধ্যে উলে­খযোগ্য রাজগোখরা (King cobra, Ophiophagus hannah), রাসেলস ভাইপার (Vipera russellii), অজগর (Python molurus), ব্যান্ডেড ক্রেইট (Bungarus fasciatus) এবং কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ।

সুন্দরবন থেকে মাত্র ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বর্ণনা হয়েছে। সবুজ ব্যাঙ (Euphlyctis hexadactylus) বেশি দেখা যায় চাঁদপাই এলাকায়। এ বন অঞ্চলের অন্যান্য উভচরের মধ্যে রয়েছে স্কিপার ফ্রগ (E. cyanophlyctis), ক্রিকেট ফ্রগ (Limnonectes limnocaris), গেছো ব্যাঙ (Polypedates maculatus) এবং সাধারণ কুনো ব্যাঙ।

সুন্দরবনের নদীনালা ও অন্যান্য জলাশয়গুলিতে বাস করে প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ; এর মধ্যে একদিকে যেমন আছে পানির বিভিন্ন স্তরে বিচরণশীল মাছ, অপরদিকে আছে পানির তলদেশে বাস করে এমন কিছু মাছ প্রজাতি। অনেক মাছ ম্যানগ্রোভ পরিবেশের জলাশয়কে ব্যবহার করে তাদের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে। মাছের খামার স্থাপন বা মাছ চাষ করার অনুমতি নেই সুন্দরবনে। সমগ্র এলাকাতেই মাছ আহরণ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রিত হয় বনবিভাগ কর্তৃক।

অমেরুদন্ডী প্রাণীর মধ্যে কতিপয় মোলাস্কা এবং ক্রাসটেসিয়ান গুরুত্বপূর্ণ মাৎস্যসম্পদ হিসেবে বিবেচিত। অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতিগুলির মধ্যে তালিকাবদ্ধ হয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির চিংড়ি, ৮ প্রজাতির লবস্টার, ৭ প্রজাতির কাঁকড়া, কয়েক প্রজাতির শামুক এবং ৬ প্রজাতির ঝিনুক। চিংড়ির মধ্যে বাগদা চিংড়ি (Penaeus monodon) ও হরিণা চিংড়ি (Metapenaeus monoceros) এবং কাঁকড়ার মধ্যে মাড ক্রাব (Mud crab, Scylla serrata) বাণিজ্যিকভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ। সুন্দরবনের কীটপতঙ্গের বৈচিত্র্য সীমাহীন। এখানকার অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি মৌমাছি (Apis dorsata)। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘মৌয়াল’দের পেশা মধু সংগ্রহ করা। তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ফুলের মৌসুমে তিন চার মাস বন থেকে মধু সংগ্রহ করে। সুন্দরবনে মাকড়সার (Araneae) প্রাচুর্য রয়েছে। এখান থেকে ২২টি গোত্রের অধীনে প্রায় ৩০০ প্রজাতির মাকড়সা তালিকাবদ্ধ হয়েছে।
অর্থনৈতিক মান, পর্যটন ও বাসিন্দা সুন্দরবনের সবচেয়ে উলে­খযোগ্য গুরুত্ব এর সংরক্ষণমূলক ভূমিকা। এ বন উপকূলভাগের ভূমিক্ষয় রোধ করে, উপকূলীয় এলাকা পুনরুদ্ধার করে এবং নদীবাহিত পলি স্তরীভূত করে। এর মোহনা অঞ্চল বহু ধরনের মাছের প্রজনন কেন্দ্র। সুন্দরবনের বনসম্পদকে কেন্দ্র করে কয়েকটি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এগুলির মধ্যে উলে­খযোগ্য খুলনার নিউজপ্রিন্ট মিলস এবং হার্ডবোর্ড মিলস; প্রথমটির কাঁচামাল গেওয়া এবং দ্বিতীয়টির সুন্দরীবৃক্ষ। উদ্ভিদনির্ভর অন্যান্য শিল্প-কারখানার মধ্যে রয়েছে দিয়াশলাই ও নৌকা তৈরির কারখানা। এ বনভূমি জ্বালানি, ট্যানিন, ঘরের ছাউনি তৈরির উপকরণ, কাঠজাত দ্রব্য, ভেষজ উদ্ভিদ এবং পশুখাদ্যের অন্যতম প্রধান উৎস ও যোগানদার। দেশের অধিকাংশ মধু ও মোম (bee wax) সংগৃহীত হয় সুন্দরবন থেকেই। এখানে রয়েছে Aegiceras corniculatum, Ceriops decandra, Nipa spp, Derris spp এবং Hibiscus tiliaceus-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক মধুপ্রদায়ী উদ্ভিদ প্রজাতি।

প্রমোদ ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের এক আকর্ষণীয় স্থান সুন্দরবন। এখানকার কটকা, হিরণ পয়েন্ট (সাধারণভাবে নীলকমল নামে পরিচিত), দুবলার চর এবং টাইগার পয়েন্ট (কচিখালী)-এ প্রতিবছর পর্যটকদের প্রচুর সমাগম ঘটে। কটকার অনবদ্য প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং বন্যপ্রাণী ভ্রমণকারীদের জন্য অতি আকর্ষণীয়। এখানে বনবিভাগ পরিচালিত একটি ডাকবাংলো এবং একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (observation tower) আছে। হিরণ পয়েন্ট-এও আছে পর্যটকদের জন্য অতিথি ভবন এবং একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। দুবলার চর একটি ছোট দ্বীপ, এর সমুদ্র সৈকত অতি মনোরম। এর অন্য আরেকটি আকর্ষণ মাছ ধরার কর্মকান্ড, যা প্রতিবছর মধ্য-অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চলে। এ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে আসে শত শত জেলে। এখানে তারা মাছ ধরে এবং রৌদ্রোজ্জ্বল বেলাভূমিতে তা শুকায়। মধু সংগ্রাহক মউয়ালরা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে বনের গভীরে ঢুকে মৌচাক খোঁজে।

সুন্দরবন বা সুন্দরবনের সংলগ্ন এলাকাতে খুব কম মানুষজনই স্থায়িভাবে বসবাস করে। স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে বাওয়ালি (যারা গোলপাতা সংগ্রহ করে), মউয়াল এবং কাঠুরে। বনের ধার ঘেঁষে ৩-৫ মিটার উঁচুতে কাঠ বা বাঁশের মঞ্চ তৈরি করে তার উপর তারা ঘর বাঁধে। কতক লোক, বিশেষ করে বেদেরা নৌকায় যাযাবর জীবন কাটায়।

সুন্দরবন বনভূমির পুনরুৎপাদন বনাঞ্চলের গাছপালার পুনরুৎপাদন হয় স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় অথবা বীজ বপন বা চারা রোপণের মাধ্যমে। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ বহুলাংশে প্রাকৃতিক পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। বনের অধিকাংশ এলাকায় আহরিত-বৃক্ষ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রচুর বীজ সংগৃহীত হয়। দেখা গিয়েছে প্রতিবছর হেক্টর প্রতি গড়ে প্রায় ২৭,৭৫০ চারা উৎপন্ন হয়, যদিও বনভূমির এলাকাভেদে এর ঘনত্বে তারতম্য হয়। সুন্দরী, গেওয়া এবং অন্যান্য বৃক্ষ প্রজাতি একত্রে যথাক্রমে প্রায় ২৪, ৫৪ এবং ২২ শতাংশ চারা (তিন মাস বয়সের) উৎপন্ন করে।

বন এলাকার লবণাক্ততা বস্ত্তত পুনরুৎপাদন ঘনত্বকে প্রভাবিত করে, বেশি লবণাক্ততা ঘনত্ব কমায়। সরবরাহকৃত চারার পরিমাণ বিভিন্ন বছরে কমবেশি হয়, তবে এ ক্ষেত্রে লবণাক্ততার প্রভাব সামান্যই। সুন্দরবনের লবণসৃমদ্ধ তিনটি এলাকায় চারা উৎপাদনের মাত্রার বৈষম্য লক্ষণীয়। সুন্দরী, গেওয়া এবং অন্যান্য বৃক্ষ প্রজাতির চারা উৎপাদনের তারতম্য বিভিন্ন বছরে বিভিন্ন পরিমাপের হয়। এ পার্থক্য সম্ভবত উদ্ভিদ প্রজাতিতে বিদ্যমান পর্যাবৃত্তির কারণে ঘটে থাকে।

যোগাযোগ:- ঢাকা অফিস "01711938204"
৫১/১ ভি, আই, পি টাওয়ার নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ *[email protected]*
খুলনা অফিস- "01712252551"
এ-৯, মজিদ স্বরণী, শিববাড়ী, খুলনা।
ুন্দরবনভ্রমণজাহাজেরতথ্য ুন্দরবন ্রমণসঙ্গী

আহসান মঞ্জিল প্রাসাদটি ছিল ঢাকার নবাব পরিবারের বাসস্থান এবং দরবার। নজরকাড়া এই ভবনটি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কুমারতলীতে...
01/12/2022

আহসান মঞ্জিল প্রাসাদটি ছিল ঢাকার নবাব পরিবারের বাসস্থান এবং দরবার। নজরকাড়া এই ভবনটি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কুমারতলীতে অবস্থিত। ইন্দো-সারাসিনিক রিভাইভাল স্থাপত্য শৈলীতে এই প্রাসাদটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৮৫৯ সালে এবং সম্পন্ন হয় ১৮৭২ সালে। এই প্রাসাদটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

মুঘল আমলে এখানে জামালপুর পরগনার (জেলা) জমিদার শেখ এনায়েত উল্লাহর একটি বাগানবাড়ি ছিল। আকর্ষণীয় ব্যাক্তিত্বের অধিকারী শেখ এনায়েত উল্লাহ কুমোরতলীতে(কুমারতলী) বিশাল এলাকা অধিগ্রহন করে তাঁর বাগানবাড়িতে অন্তর্ভুক্ত করেন। এখানে তিনি ‘রঙমহল’ নামে একটি চমৎকার প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। এই প্রাসাদে তিনি দেশ বিদেশ থেকে নিয়ে আসা সুন্দরী নারীদের দামী পোশাক ও ব্যয়বহুল গয়না পরিয়ে রাখতেন এবং উপভোগ করতেন। কথায় আছে যে, সেসময়কার ঢাকার ফৌজদার (মুঘল সম্রাটের প্রতিনিধি) রঙমহলের একজন নারীর প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন এবং এই কারনে শেখ এনায়েত উল্লাহকে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত করার পর বাড়ি ফেরার সময় ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেন। পরবর্তীতে ক্ষোভে এবং দুঃখে সেই নারীও আত্মহত্যা করেন। রঙমহলের উত্তর-পূর্ব কোণে শেখ এনায়েত উল্লাহর কবর থাকেলও ১৯ শতকের শুরুতে কবরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।

সম্ভবত ১৭৪০ সালে নবাব আলিবর্দি খাঁর শাসনামলে শেখ এনায়েত উল্লাহর পুত্র শেখ মতিউল্লাহ ফরাসি বণিকদের কাছে পুরো সম্পত্তিটি বিক্রি করে দেন। এখানে শেখ এনায়েত উল্লাহর সম্পত্তির পাশেই ফরাসিদের একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল। সম্পত্তিটি কেনার পর বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে ওঠে। সেসময় মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের একটি ডিক্রি অনুযায়ী ফরাসিরা খাজনা না দিয়ে ব্যবসা করতে পারত।
সেসময় এখানে ইংরেজ এবং অন্যান্য ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করে ফরাসিরা ধনী হয়ে যায়। ফরাসিরা ক্রয় করা সম্পত্তিতে একটি বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করে এবং মিষ্টি পানির জন্য ‘লেস জাল্লা’ নামে একটি পুকুর খনন করে। আহসান মঞ্জিল চত্বরে এখনও পুকুরটি রয়েছে। ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে ফরাসিরা পরাজিত হলে ফরাসিদের সব সম্পত্তি ইংরেজরা অধিগ্রহন করে। ১৭৫৭ সালের ২২ শে জুন প্রায় ৩৫টি নৌকার বহর নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ফরাসিরা তাদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি ত্যাগ করেন।

• ১৭৮৫ সালে ফরাসিরা তাদের সম্পত্তি জনাব চামপিগনি নামক একজন ফরাসি বণিকের কাছে হস্তান্তর করলেও ১৮০১ সালে পুনরায় এসব সম্পত্তি অধিগ্রহন করে। ১৮১৪ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ফরাসিরা ঢাকায় ফেলে রেখে আসা সব সম্পত্তি দাবি করে এবং ১৮২৭ সালে সেসব সম্পত্তি ফরাসিদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দিন দিনে ইংরেজদের ক্ষমতা বৃদ্ধির কারনে ফরাসিরা উপমহাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। সুতরাং, ফরাসিরা ঢাকায় তাদের সকল সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৩০ সালে কুমারতলীতে অবস্থিত ফরাসিদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি ক্রয় করেন ঢাকার প্রতিষ্ঠিত জমিদার খাজা আলিমুল্লাহ।

ফরাসিদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি কিছু মেরামত করে খাজা আলিমুল্লাহর বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং সেসময় এই স্থানে একটি পারিবারিক মসজিদ নির্মাণ করা হয়। খাজা আলিমুল্লাহর মৃত্যুর পর খাজা আলিমুল্লাহর পুত্র খাজা আব্দুল গনি এখানে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং তাঁর পুত্র আহসান উল্লাহর নামে প্রাসাদের নাম রাখেন ‘আহসান মঞ্জিল’। পুরাতন ভবনের সংস্কার করার পাশাপাশি খাজা আব্দুল গনি পুরাতন ভবনের পূর্বদিকে আধুনিক নকশায় একটি নতুন ভবন নির্মাণ করেন। সেসময় থেকে পুরাটন ভবনটিকে বলা হয় ‘অন্দর মহল’ এবং নতুন ভবনটিকে বলা হয় ‘রঙমহল’।

১৮৮৮ সালের ৭ই এপ্রিল সন্ধ্যায় ঢাকায় একটি শক্তিশালী টর্নেডো আঘাত হানে এবং এর ফলে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। আহসান মঞ্জিলকে ক্ষতিসাধিত হওয়ার কারনে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। কলকাতা থেকে একজন ইংরেজ প্রকৌশলী এখানে এসে জায়গাটি দেখার পর জানান যে রঙমহল ছাড়া প্রাসাদের বাকি সকল অংশই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। খাজা আব্দুল গনি এবং তাঁর পুত্র খাজা আহসানউল্লাহ প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণে মনোনিবেশ করেন এবং দুটি ভবনই স্থানীয় প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র রায়ের তত্ত্বাবধানে নতুন নকশায় নতুন করে নির্মাণ করা হয়।

রঙমহলের সাথে মিল রেখে পুরাতন ফরাসি ভবনটি একটি দোতলা ভবনে রুপান্তর করা হয়। কাঠের তৈরি একটি পথের মাধ্যমে দুটি ভবনের দ্বিতীয়তলাকে যুক্ত করা হয়। এ সময় নির্মাণ করা গম্বুজটি ছিল সবচেয়ে সুন্দর। গম্বুজটির কারনে প্রাসাদটির সৌন্দর্য বহুগুনে বেড়ে যায়।১৯০১ সালে খাজা আহসানউল্লাহর মৃত্যুর পর আহসান মঞ্জিলের গৌরবময় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। তাঁর উত্তরসূরিরা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারনে আহসান মঞ্জিলের গৌরবকে ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ ভাড়াটিয়াদের কাছে ভাড়া দেন এবং এর ফলে প্রাসাদটি বস্তিতে রুপান্তরিত হয়। ১৯৫২ সালে সরকার এই সম্পত্তিটি অধিগ্রহন করে এবং ঢাকা নবাব আদালতকে এটি দেখাশোনার দায়িত্ব প্রদান করে। ১৯৮৫ সালে ঢাকা জাতীয় জাদুঘর এই প্রাসাদটি অধিগ্রহন করে জাদুঘরে রুপান্তরিত করে।

যোগাযোগ:- ঢাকা অফিস "01711938204"
৫১/১ ভি, আই, পি টাওয়ার নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ *[email protected]*
খুলনা অফিস- "01712252551"
এ-৯, মজিদ স্বরণী, শিববাড়ী, খুলনা।
ুন্দরবনভ্রমণজাহাজেরতথ্য ুন্দরবন ্রমণসঙ্গী

Address

VIP Tower (8th Floor), 51/1, VIP Road, Naya Paltan
Dhaka
1000

Opening Hours

Monday 09:00 - 23:45
Tuesday 09:00 - 23:45
Wednesday 09:00 - 23:45
Thursday 09:00 - 23:45
Friday 09:00 - 23:45
Saturday 09:00 - 23:45
Sunday 09:00 - 23:45

Telephone

+8801711938204

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Relax Tours "ভ্রমণ সঙ্গী" posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Relax Tours "ভ্রমণ সঙ্গী":

Share

Category

Our newly built Cruise Ship

“The most luxurious cruise ship of Sundarban with central Air-condition”