
28/07/2025
সম্প্রতি ওমরাহ টিকেটের মূল্য আবারও বেড়েছে, যা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য এক বড় দুঃসংবাদ। কিন্তু এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ কী? অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসে এক বিস্ময়কর তথ্য – এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী স্বয়ং বাংলাদেশ বিমান!
সরকারের নতুন নীতি এবং রাঘববোয়ালদের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল ।
সরকার গ্রুপ টিকেট সিস্টেম বাতিল করায় সকল IATA এজেন্ট টিকেট ইস্যু করার সুযোগ পেয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ ছিল, কারণ এতে বড় বড় 'রাঘববোয়াল' বা প্রভাবশালী এজেন্সিগুলোর একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ কমেছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হওয়ার কথা ছিল, যেখানে টিকেটের দাম কমে আসবে। কিন্তু ঘটেছে তার উল্টো।
সৌদি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন সৌদি রুটে (দাম্মাম, জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা) ৬-৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করে, যেখানে বাংলাদেশ বিমান মাত্র দুটি ফ্লাইট চালায়। অবাক করার বিষয় হলো, সৌদি এয়ারলাইন্স তাদের টিকেটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশ বিমানকে অনুসরণ করে! অর্থাৎ, বাংলাদেশ বিমান যদি ৫০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে, সৌদি এয়ারলাইন্স তখন ৪৯ টাকা করে।
এখানেই যত বিপত্তি! অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশ বিমানের মূল্য নির্ধারণকারী দল তাদের খেয়ালখুশি মতো, এমনকি 'বাসায় বৌয়ের সাথে কথা বলে' (!) মূল্য নির্ধারণ করে সিস্টেমে আপডেট করে দেয়। আর এই অন্যায় মূল্যকেই অন্য এয়ারলাইন্সগুলো ভিত্তি ধরে নিজেদের ভাড়া বসায়।
অযৌক্তিক ভাড়া বৃদ্ধি: লন্ডন ও রোমের চেয়েও বেশি সৌদি রুটের ভাড়া!
আপনারা জানলে অবাক হবেন, বিমানের লন্ডন ও রোম রুটের ভাড়ার চেয়ে সৌদি রুটের ভাড়া অনেক বেশি। প্রশ্ন ওঠে, যেখানে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট কম এবং সার্ভিসের মানও প্রশ্নবিদ্ধ, সেখানে তারা কেন এত উচ্চ ভাড়া আদায় করে?
শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী ভারতের কলকাতা থেকে সৌদি রুটে ভাড়া সবসময় ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে থাকে! অথচ বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে যে ভাড়া গুনতে হয়, এশিয়ার কোনো দেশ থেকে সৌদি আরব যেতে এত টাকা লাগে না। এমনকি সুদূর চীন থেকে জেদ্দা সরাসরি ফ্লাইটের সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেট মাত্র ৫৬ হাজার টাকা! ভাবুন, দূরত্বের তারতম্য সত্ত্বেও আমাদের টিকেটের মূল্য আকাশচুম্বী!
বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিক্রয় ব্যবস্থাপকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেকোনো রুটে টিকেটের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ বিমান দায়ী। তাদের অদক্ষতা এবং অপরিপক্কতার খেসারত দিচ্ছে এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। এর ফলে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন পূরণে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সরকারের উচিত দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং বাংলাদেশ বিমানের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যাতে সাধারণ মানুষ অযৌক্তিক বিমান ভাড়ার বোঝা থেকে মুক্তি পায়।
-সংগৃহীত পোস্ট